রঙ্-বাহারি

২০১৯ শেষে…

বহু ঘটন-অঘটনে কাটলো ২০১৯ সাল। দীর্ঘ কয়েক দশক দশক পর জাতি দেখলো ‘ডাকসু’ নির্বাচন। নুসরাত হত্যা। রিফাত হত্যা। আবরার হত্যা। সমগ্র জাতিকে নাড়িয়ে গেছে এগুলোর নির্মমতা। পেয়াজের ঝাঁজ। গুজবের বিস্তার। কল্লাকাটার কিচ্ছা। ছেলেধরা। কি ছিল না এ বছর। আসুন একটু ঘুরে আসি ২০১৯।
২০ ফেব্র“য়ারি – ঢাকায় চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, যাতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে ৭৮ জন মারা যান।
২৫ ফেব্র“য়ারি – ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পর বাংলাদেশ বিমানের ময়ূরপঙ্খী উড়োজাহাজটি ছিনতাই হয়। পরে বিমানটি চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরী অবতরণ করে। কমান্ডো অভিযানে ছিনতাইকারী গুলিবিদ্ধ হয় ও পরে মারা যায়। ছিনতাইকারীর সম্পর্ক ছিল শিমলা নামক এক চিত্রনায়িকার সাথে। এ নিয়ে কয়েকদিন সরগরম ছিল প্রিন্ট ও সোশ্যাল মিডিয়া।
২৮ ফেব্র“য়ারি- এক সপ্তাহের ব্যবধানে আবারো আগুন। ভাসানটেকে বস্তিতে আগুন লেগে দুই শিশু মারা যায়।
১১ মার্চ – ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত। নুরুল হক নুর সহ- সভাপতি এবং ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ডাকসু সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন
২৮ মার্চ – ঢাকার বনানীতে এফ আর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডে বিদেশি নাগরিকসহ ২৬ জনের মৃত্যু হয়। এদিন সড়ক দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন ঘটনার মোট ৪৭ জনের মৃত্যু হয়।
৩০ মার্চ – ঢাকার গুলশানের ডিএনসিসি মার্কেটে আগুন। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি।
৬ এপ্রিল – ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে ঝলসে দেয় মাদ্রাসা অধ্যক্ষ। ৩ দিন পর ৯ এপ্রিল নুসরাত জাহান রাফি রাত সাড়ে ৯ টায় মৃত্যুবরণ করেন।
দেশে গুজবের পরিমাণ বাড়ে ভয়ঙ্কর হারে।
দেশে মহামারীর আকার ধারণ করে ‘কল্লাকাটা’ গুজব। এ নিয়ে এলাকায় এলাকায় মাইকিং পর্যন্ত হয়। এ গুজবকে ইস্যু করে রাজধানী ঢাকায় নির্মম হত্যার শিকার হন তাসলিমা আক্তার রেণু নামের এক মহিলা।
প্রিয়া সাহা নামক এক মহিলা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে নালিশ করে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। এ দেশকে সে আখ্যায়িত করে ‘মৌলবাদীদের আখড়া’ নামে।
ভারত সরকার কর্তৃক কাশ্মীরীদের উপর জরুরী অবস্থা প্রয়োগের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠে বাংলার ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনতা।
১৪ সেপ্টেম্বর – এক কলঙ্কিত ইতিহাসের সাক্ষী হয় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বহিষ্কার করা হয়।
ভোলার বোরহান উদ্দিনে ‘নবী মুহাম্মদ সা. কে কটুক্তিকারীর বিরুদ্ধে মুসলিম জনতা মাঠে নামে। এ সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হয় কয়েকজন মানুষ।
৭ অক্টোবর – বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে শেরে বাংলা হলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা পিটিয়ে হত্যা করে। দেশের আলোচিত ঘটনাগুলোর মধ্যে এই নির্মমতা ছিল খুব বেশি স্পর্শকাতর। সারাদেশ কাঁপিয়েছে এই ঘটনা।
১০ নভেম্বর – ঘূর্ণিঝড় বুলবুল এর তাণ্ডবে নিহত ১৭ জন। ১৪টি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত।
১২ নভেম্বর – ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কসবায় যাত্রীবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৬ জন নিহত।
১৭ নভেম্বর – দেশে প্রথমবারের মতো পেঁয়াজের দাম ২৪০ টাকা হলো।
১২ ডিসেম্বর – ঢাকার কেরানীগঞ্জে একটি প্লাস্টিক সামগ্রী তৈরির কারখানায় আগুন লাগে। এতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে একজন ও চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়।

কয়েকজন বিখ্যাত মানুষের বিদায়…
৩ জানুয়ারি – সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ ও মন্ত্রী (জন্ম: ১৯৫২)
১০ ফেব্রুয়ারী, রবিরার, ইন্তেকাল করেন সিলেটের স্বণামধন্য আলিমে দ্বীন ভূরকী হাবিবিয়া হাফিজিয়া দাখিল মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা মুহতামিম মাওলানা আব্দুল মতিন। তিনি ১৯৫৪ সালে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার ভূরকী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
১৫ ফেব্রুয়ারি – আল মাহমুদ, একুশে পদক প্রাপ্ত কবি ও সাহিত্যিক (জন্ম: ১৯৩৬)
১ মার্চ – পলান সরকার, একুশে পদকপ্রাপ্ত সমাজকর্মী। বাড়ি বাড়ি বই নিয়ে যেতেন সম্পুর্ন বিনামূল্যে। উদ্দেশ্য ছিল মানুষকে বই পড়ায় উৎসাহিত করা।
১৪ জুলাই – বাংলাদেশের ১১তম রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ সিএমএইচ হাসপাতালে মৃত্যুকরণ করেন। (জন্ম: ১৯৩০)
০৩ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার, বিকাল ৩.৩০ মিনিটে ইন্তেকাল করেন সিলেটের স্বণামধন্য আলিমে দ্বীন, প্রখ্যাত বুযুর্গ আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ রহ এর খলিফা অধ্যক্ষ মাওলানা শুয়াইবুর রহমান বালাউটি। তিনি জালালপুর আলিয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন দীর্ঘ সময়।
২০ ডিসেম্বর – ফজলে হাসান আবেদ, একজন সমাজকর্মী এবং ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা।

কৌতুক
বিবির পিড়াপিড়িতে নাসিরুদ্দিন একটা গরু কিনল। কিন্তু গরু ও গাধার জন্য গোয়াল ঘরে পর্যাপ্ত যায়গা না থাকায় একটা ঘুমালে আরেকটাকে দাড়িয়ে থাকতে হতো।
প্রিয় গাধার এই দুরবস্থা দেখে হোজ্জা একদিন খোদার কাছে প্রার্থনা করছে, ‘হে আল্লাহ, দয়া করে গরুটাকে মেরে ফেল যাতে আমার গাধাটা একটু আরাম করে ঘুমাইতে পারে’।
পরদিন সকালে সে গোয়াল ঘরে গিয়ে দেখে যে গাধাটা মরে পরে আছে।
প্রাণপ্রিয় গাধার মৃত্যুতে হতাশ হয়ে হোজ্জা বিরস বদনে আকাশের দিকে তাকায়ে বলল, ‘কোন অভিযোগ করব না খোদা, কিন্তু তুমি এতদিন ধরে সারা দুনিয়ার মালিক হয়েও, কোনটা গরু কোনটা গাধা এইটা চিনলা না!’

Comments

comments

About

Check Also

রঙ্-বাহারি

বুক রিভিউ বালাই হাওরের কান্না : কান্না থামে না যে বই পড়লে আল্লামা ইমাদ উদ্দিন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *