প্রিথি (সায়েন্স ফিকশন)

(পূর্ব প্রকাশের পর)

(২য় পর্ব)
‘অতিথি বিজ্ঞানী!’ কথাটা অবাক হয়েই বললেন। অ্যামসন তার অবাক হওয়ার দিকে খেয়াল দিলেন বলে মনে হলো না। ‘হেঁ, তারা। তারা আসেননি? নাকি’
‘এসেছেন।’ দুই সেকেন্ড বিরতি দিযে় জানতে চাইলেন, ‘আপনি ট্যার্লু নিযে় এসেছেন নিশ্চয়?’ ওমর ফারুক শব্দ করে উত্তর না দিযে় মাথা উপর-নিচে দোলালেন। ‘রানওয়েতে তাহলে অদ্ভুত ধরনের একটি আকাশযান দেখে এসেছেন?’
‘খেয়াল করিনি।’
‘আমরা কিন্তু এখনও সে রকম অত্যাধুনিক কোন যান তৈরি করতে পারিনি। বরং এখনও অনেক পিছিযে় রযে়ছি। কতটুকু পিছিযে় আছি, তাদের যানের পাশে আমাদের পরিবহনগুলো দাঁড় করালে টের পাওয়া যায়।’ তারপর গলার আওয়াজ একটু নিচু করে যেন কেউ শুনতে না পায় সে রকম ফিসফিস আওয়াজ করে বললেন, ‘তবে দেখবেন, এবার তৈরি হবে। হেঁ।’
ওমর ফারুক সে কথায়ও কোন সাড়া দিলেন না। আগের মতো নীরব থাকলেন। ‘উনারা এখন কোথায়?’
‘গেস্ট হাউজে।’ বললেন অ্যামসন। জিজ্ঞেস করলেন, ‘তাদের সঙ্গে তো এখনও আপনার পরিচয় হয়নি? তাই না?’
‘না।’
‘আসুন তাহলে, পরিচিত হয়ে আসবেন।’
‘না। এখন না।’ ওমর ফারুক আস্তে করে বললেন। ‘পরে কোন এক সময় পরিচিত হওয়া যাবে। এ্যাঁ, হেড প্রোপাইটার এখনও আসেননি?’ দেয়ালের বাম পাশে লাল, নীল, হলুদ রঙের ছোট্ট বাতির মধ্যে হলুদটার দিকে তাকিযে় বললেন ওমর ফারুক। বাতিটা নেভানো। তার অর্থ হেড প্রোপাইটার কেন্দ্রে নেই। থাকলে বাতি জ্বলতো।
তার প্রশ্ন শুনে অ্যামসনও ওদিকে তাকালেন। ‘আপনি আসার একটু আগে তিনি বেরিযে় গেছেন। তবে আজ আবার এলেও হয়তো একটু দেরি হবে।’
‘ঠিক আছে তাহলে,’ বলে বসা থেকে উঠে দাঁড়ালেন ওমর ফারুক। ‘আসলে বলবেন, উনার সঙ্গে আমার জরুরী প্রয়োজন আছে। আমি এখন চললাম।’
‘আমি ভাবছিলাম আপনি এসেছেন জরুরী কিছু কথা বলবো।’
‘আজ না। অন্যদিন। খুব একটা ভাল লাগছে না আজ।’
‘হেড প্রোপাইটারকে কিছু বলবো? আপনি আসবেন, নাকি তাকে যেতে বলবো?’
‘আমিই আসবো।’
‘কখন? কোন দিন?’
‘আগামী কাল সকালে।’
‘ঠিক আছে। আমি তাকে সংবাদটা পৌঁছে দেবো।’
‘ভালো থাকবেন।’
ওমর ফারুক তাকে আর কোন কথা বলতে না দিয়ে হাঁটতে লাগলেন। অ্যামসনের রুম থেকে বেরিযে় কেন্দ্রের বাইরে এলেন। আসার পথে আগের মতো কারও সঙ্গে কথা বললেন না। একেবারে ক্ষুদ্রযান ট্যার্লুর কাছে এসে দাঁড়ালেন। দরজা খুলে গেলে তাতে চড়তে যেয়ে চোখ গেলো বায়ে। দৃষ্টি ওখানে থেমে গেলো কিছুক্ষণের জন্য। যানে না উঠে ওদিকে আগ্রহ নিযে় তাকালেন। মনে পড়লো অ্যামসনের কথা। তিনি বলেছিলেন, ভীনগ্রহীরা অদ্ভুত ধরণের আকাশযান নিয়ে এসেছে। এটা নিশ্চয় সেই যান। আগে কখনও তিনি পৃথিবীতে এই যান দেখেননি। কেউ বানিয়েছেও সেকথা শুনেননি। এটা নিশ্চয় এ্যালিযে়নদের।
তাহলে তো সত্যি! অদ্ভুত বৈজ্ঞানিক প্রতিভা তাদের। চোখ ফিরালেন ওদিক থেকে। যানে উঠে বসলে ট্যার্লুর ইঞ্জিন চালু হলো। যানকে নির্দেশ দেয়ার আগে ভাবলেন, কোথায় যাবেন। নিজের বাসায়? নাকি বিজ্ঞানী রুবল ডি রযে়র বাসায়? দেখা করে আসবেন তার সাথে? সিদ্ধান্ত নিলেন, তার আগে কল করে দেখবেন, তিনি বাসায় আছেন কি না। নাকি অন্য কোথাও গেছেন। ফোন করলেই জানা যাবে। সঙ্গে সঙ্গে অন করলেন হলোগ্রাফিক। যানে তার সীটের সামনে থাকা মনিটর সচল হয়ে উঠলো। পরপরই ভেসে উঠলো রুবল ডি রয়ের মুখ। তার মানে তার হলোগ্রাফিক অন ছিল? কোথাও নিশ্চয় কথা বলছিলেন তিনি। ‘মি. রুবল।’ একটু মুখ বাডি়যে় বললেন ফারুক।
রুবল কিছু একটা লিখছিলেন তখন। হলোগ্রাফিকে ওমর ফারুকের ডাক শুনে মনিটরে তাকালেন। ‘ও, মি. ফারুক? কেমন আছেন?’ উত্তরের আশা না করে বললেন, ‘নিশ্চয়ই ভালো?’
উপর নিচে মাথা দোলালেন। ‘হুঁ! আপনি?’
হাতের কলম কাগজের উপর রেখে পুরোপুরি মনোযোগ দিলেন মনিটরে। ‘এই তো, বেশ আছি।’
‘আপনি তো বাসায় আছেন দেখছি। আমি কি আসতে পারি?’
‘অবশ্যই, কেন নয়? প্লিজ ওয়েল কাম। আমি আপাতত কোথাও বেরুচ্ছি না। তা এক্ষুণি আসবেন?’
‘গবেষণা কেন্দ্র থেকে রওয়ানা দেবো। আসতে যতক্ষণ লাগে।’
‘ঠিক আছে।’ একটু নড়েচড়ে বসলেন। ‘আপনার অপেক্ষায় থাকবো তাহলে। প্লিজ আসুন।’
‘তাহলে আসি। আসলে কথা হবে।’
‘ধন্যবাদ।’
রুবলের স্ক্রীন ছায়াহীন হয়ে গেল। তার অর্থ লাইন কেটে দিয়েছেন ফারুক।
ট্যার্লু তখন নীরব। ‘হ্যালো ট্যার্লু, মি. রুবলের বাসায় চলো।’ ট্যার্লুকে আগেই রুলবের বাসা চিনিযে় দেয়া হয়েছে। সেটা অবশ্য একটা কোডের মাধ্যমে। এখন শুধু নাম বললেই হলো। ছোট যানের কম্পিউটার সিস্টেম সেভাবে কাজ করবে অর্থাৎ গন্তব্যে নিযে় যাবে। এটা অবশ্য প্রয়োগ হয় গাণিতিক নির্দেশনায়। সেখানে একটা মানচিত্র আছে এবং দূরত্ব ও দিক নির্দেশ করা আছে। স্যাটেলাইটের সহায়তায় ওযর়্াল্ড ম্যাপের মাধ্যমে এই কাজটি সারে কম্পিউটার। যানের ডাটাবেজে এটা আগে থেকেই সংযুক্ত করে রাখা। চাইলে সিকিউরিটি সিস্টেম থেকেও সহায়তা নেয়া যায়। ট্যার্লু গন্তব্যের নির্দেশনা পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে সচল হয়ে উঠলো। ততক্ষণে সে আকাশে উড়াল দিয়েছে। চলছে ঘণ্টায় ত্রিশ হাজার মাইল গতিতে। একেবারেই শব্দহীন।
ট্যার্লু নামলো রুবলের রানওযে়তে। অদূরে দালানের নিচে পথের মুখে দাঁড়িয়ে আছেন রুবল ডি রয়। তার মুখে হাসির ঝিলিক। চেয়ে আছেন ট্যার্লুর দিকে। অভ্যর্থনা জানাবেন বিশ্ববিখ্যাত গ্রহবিজ্ঞানী, গ্রেট বাবর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রহগবেষণা বিভাগের সাবেক স্বনামখ্যাত ডিন ড. ওমর ফারুককে। এখন ওসব রেখে যিনি শুধুই একজন গ্রহবিজ্ঞানী হিসেবে বিশ্বব্যাপি পরিচিত। এক নামে তার পরিচিতি। সম্ভবত গ্রহবিজ্ঞান নিয়ে তার মতো এতো জনপ্রিয়তা আর কোন বিজ্ঞানী এখন পর্যন্ত অর্জন করতে পারেননি। বিশ্বের যতটি বিশ্ববিদ্যালযে় গ্রহবিজ্ঞান বিভাগ আছে সেখানে তার লিখা বই ‘গ্রহান্তরে ও গ্রহকতা’ পাঠ্য। তাকে অভ্যর্থনা জানাতে বাইরে বেরিয়ে এসেছেন আরেক বিখ্যাত বিজ্ঞানী প্রফেসর রুবল ডি রয়। ট্যার্লু থেকে মুচকি হাসি দিযে় বেরিযে় এলেন ফারুক। ‘আপনার জন্য অপেক্ষা করছি, মি. ফারুক।’ বললেন রুবল। বিনিময়ে আবার মুচকি হাসলেন। ‘আসুন।’ দু’জন ভেতরের দিকে হাঁটছেন। ‘অনেকদিন পর হঠাৎ, সত্যি একটু অবাক লাগছে!’
‘জানেনই তো, কাজ ছাড়া আমার বেড়ানো খুব একটা ভালো লাগে না। গ্রীষ্মকালিন ছুটি কয় বছর কাটিয়েছি জানেনই তো মনে হয়।’
শুনে হাসলেন রুবল। ‘তার মানে কোন অভিযানে এসেছেন?’
‘আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এটি। আশা করছি আপনিও তাই বলবেন। আগে ভেতরে যাই, তারপর সব বলবো।’
তারা এসময় রুবলের স্টাডি রুমে ঢুকছিলেন। এই রুমেই চলে তার বৈজ্ঞানিক গবেষণা। পাশে আছে ল্যাবরেটরি। ‘সব বলবেন…’ কিছুটা চমকে উঠেছেন বলে মনে হলো। ‘মানে?’ বললেন রুবল। রুবল তার টেবিলের সামনে গিয়ে একটা চেয়ার টেনে দিলেন ফারুকের জন্য। ‘বসুন, প্লিজ।’ বসলেন দু’জনেই। ‘আপনার কথাটা শব্দগত কারণে অপেক্ষাকৃত স্বাভাবিক মনে হচ্ছে। আসলেই কি বিষয়টি ইতিবাচক?’
চেয়ারে হেলান দিয়ে বললেন, ‘মি. রুবল, আমি স্পষ্ট একটা বিপদ সংকেত পাচ্ছি। আর আপনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন, এবিষয়টিতে আমার কোন সন্দেহ নেই।’
‘বলেন কি?’ উত্তেজিত কণ্ঠ মনে হলো। ‘কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে তাহলে? কোন দুর্ঘটনা নয় তো?’
‘এ মুহূর্তে নয়। তবে অবশেষে তাই ঘটবে। অপেক্ষায় থাকুন।’
‘সৌরজগতে?’ প্রশ্ন করলেন রুবল। ‘না পৃথিবীতে?’
‘পৃথিবীতে।’
‘পৃথিবীতে! আমি সম্ভবত কিছুই বোঝতে পারছি না। আরেকটু পরিষ্কার করে বলবেন?’
‘আমরা যাদের এ্যালিযে়ন বলি। ভীনগ্রহের প্রাণী। তাদের তিন সদস্য এখন আমাদের পৃথিবীতে!’
‘সত্যি! সত্যি তারা কেউ এসেছেন?’
‘এখানে তারা অতিথির মর্যাদাও পেযে়ছেন!’
‘সত্যি তাহলে ভীনগ্রহের কেউ অবশেষে পৃথিবীতে পা রাখলেন? কি আশ্চর্য!’
রুবল ডি রয়ের বিষ্ময় দেখে ওমর ফারুক তার দিকে তাকালেন ভাল করে। একটু অবাক হলেন রুবলের উৎসাহ দেখে। ‘হেঁ, কিন্তু…’
‘আমরা খুব ভাগ্যবান মি. ফারুক। বাইরের জগতের সঙ্গে আমাদের স্যাটেলাইট যোগাযোগ তাহলে সঠিক ভাবে সম্পন্ন হযে়ছিল। রেডিও সিগনাল অকার্যকর ভাবে ফেরত আসেনি! আমাদের কযে়ক দশকের প্রচেষ্টা সফল হযে়ছে! যাক, শুনে ভালো লাগছে।’
ফারুক অবাক হচ্ছেন খুশীতে উন্মাদ রুবলকে দেখে। ‘আমার কিন্তু তা মনে হচ্ছে না। খুশির কিছু দেখছি না আমি।’
মুহূর্তেই চেহারা থেকে উচ্ছাস মিলিয়ে গেলো রুবলের, ‘মানে!’
‘ওদের চরিত্র আমার জানা।’
‘কি বলছেন!’
‘ওরা ট্রনিকটন গ্রহ থেকে এসেছে। তবে…’
‘পৃথিবী থেকে ৬০,০০০ পারসেক দূরের সেই খ্যাতিমান গ্রহ ট্রনিকটন? তারা সেই গ্রহের নাগরিক?’
একটা ঢোক গিললেন ফারুক। ‘হেঁ। আর আপনার হয়তো অজানা সেই গ্রহে ঘটে যাওয়া অনুন্মোচিত রহস্য।’
‘রহস্য! কি রহস্য?’
‘ওরা প্রতারণা জানে।’
‘প্রতারণা!’
‘ভীষণ প্রতারক। ট্রনিকটনে তারা প্রথমে ঠিক এভাবে অতিথি হযে় এসেছিল।’
‘তারপর?’
‘কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই অতিথিরা গ্রহের অতিথি পরায়ন প্রাণী সম্প্রদায়কে ভয়ঙ্কর ভাইরাস দিযে় ধ্বংস করেছিল। একেবারে নিশ্চিহ্ন হযে় গিযে়ছিল সেই গ্রহ। একসময় প্রাণহীন ট্রনিকটনে এসে তারা বসতি স্থাপন করে। সৌরজগতে আধিপত্য বিস্তারে তারা চরম কৌশলী। আর সেটাই চাইছে। এর অংশ হিসেবে তারা পৃথিবীতে এসেছে।’
‘আপনি সেই গ্রহে গিযে়ছিলেন, সেটা জানি। কিন্তু এসব জানেন, তা তো জানি না!’
‘আপনারা জানতে চাননি। কেন অভিযানে গিযে় ফিরে এলাম। কেউ তো তাতে আগ্রহ দেখাননি। সফল হয়নি কেন সেটাও তো কেউ শুনতে চাননি! চাইলে জানতে পারতেন। বাইরের একটা গ্রহ নিযে় আপনাদের আগ্রহ যে খুব ছিল তা কখনই মনে হয়নি।’
‘আপনার ধারণা ভিনগ্রহের সম্মানিত অতিথিরা সে রকম উদ্দেশ্য নিযে় পৃথিবীতে এসেছেন?’
‘এবং এটাই এতদিন সত্য প্রমাণিত হবে।’ একটু থামলেন ফারুক। দু’হাত বুকের মাঝখানে বেধে ফের বললেন, ‘আমি আমার কথায় একশ ভাগ নিশ্চিত মি. রুবল।’
‘এ ব্যাপারে তাদের কাছে কিছু জানতে চেয়েছিলেন?’
‘দেখা করার ইচ্ছেও হয়নি।’
‘মানে, দেখা করেননি?’
‘প্রযে়াজন হয়নি।’
‘আপনার ধারণা হয়তো একদিন মিথ্যা প্রমাণিত হতে পারে।’
‘মি, রুবল!’ অবাক কণ্ঠে বললেন, ‘আমি চাই সেটিই হোক। কিন্তু আপনি জানেন, এমন ধারণা যেটা শেষে মিথ্যে প্রমাণিত হবে তা নিয়ে আমি কখনই মাথা ঘামাই না।’
‘আপনার কথা সত্যি হলে আমি আপনার সঙ্গে থাকবো। আমাকে আপনি সাথে পাবেন।’
‘অন্তত কেউ না এলেও আমি আমার কাজ একাই করে যাবো।’
‘মানে? কি কাজ?’
‘প্রযে়াজনে প্রতিবাদ করবো। না পারলে বাধা দেবো। আর তাও না পারলে আমি আমার কোন সহযোগিতা তাদের দেবো না। তখন যে আমার সাথে আমার যুক্তিতে থাকতে চাইবে, সে থাকবে।’
‘আপনি যে এককথার বিজ্ঞানী সেটা আমার অজানা নেই মি. ফারুক। আপনার নিজের মনের উপর এতো বিশ্বাস আর আস্তা সেজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
শুনে মুচকি হাসলেন ওমর ফারুক। জবাবে তার যেন আর কিছু বলারও ছিল না। ‘আচ্ছা, আজ আসি।’ উঠে দাঁড়ালেন। ‘বিষয়টি ভাববেন। আমাদেরই কিছু না কিছু করতে হবে। বহির্বিশ্ব থেকে সাধারণ মানুষকে নিরাপদ রাখার বিষয়টি আমাদেরই ভাবতে হবে। বিজ্ঞানী হিসেবে এটা আমাদের দাযি়ত্ব। তাদের অনেক আস্তা আমাদের উপর। তাছাড়া প্রশ্নটা যেহেতু ভবিষ্যত পৃথিবীর জন্য জরুরী। সুতরাং আরও বেশি মনোযোগী হতে হবে। তা না হলে আমাদেরকে কেউ ক্ষমা করবে না। না বর্তমান প্রজন্ম, না ভবিষ্যত প্রজন্ম।’
‘দুশ্চিন্তার ব্যাপার।’
হাঁটতে শুরু করলেন ওমর ফারুক। এক সাথে দু’জনেই। ‘আপনি বিষয়টি নিযে় ইতিবাচক একটা ভূমিকা রাখতে পারেন। তাই আপনাকে জানালাম। আমি একা কি আর করতে পারবো, বলেন? ধন্যবাদ।’
ততক্ষণে তারা রানওয়েতে নেমে এসেছেন। ট্যার্লুর পাশে এসে দাঁড়ালেন ফারুক। ‘ভালো থাকবেন। জার্নিটা ভালো হোক।’ বিদায় জানালেন তাকে। ফারুক যানে ওঠলে রুবল একটু পিছিয়ে এলেন। দুই সেকেন্ড পর ট্যার্লু আকাশে উড়াল দিলো। আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকলেন কিছুক্ষণ। ফারুকের যান চোখের সীমানার বাইরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত সেদিকে তাকিযে় ছিলেন। আকাশে তখন আরও অনেক ছোট যান উডে় যেতে দেখা যাচ্ছে। রুবলের সেদিকে খেয়াল নেই। পাখির মতো যান এদিকে-ওদিকে যাচ্ছে। কিন্তু কোন সংঘর্ষ হচ্ছে না। ট্রাফিকিং সিগনাল আগে বেশ দুর্বল ছিলো। এখন স্যাটেলাইট টার্মিনাল-গুলোর সংস্কার করায় দুর্ঘটনার হার একেবারে শূন্যের কোটায় নেমে আসছে। ফিরলেন তিনি বাসার ভেতরে।
চলবে

Comments

comments

About

Check Also

মুবাহাসা (২য় পর্ব)

(পূর্ব প্রকাশের পর)মুসাল্লা উঠিয়ে নাওইমাম আযম আবু হানিফা র.-এর আদত মুবারক ছিল যখন তিনি শাগরিদকে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *