কর্মের ফল

(পূর্ব প্রকাশের পর)

তাইতো অন্ধেরা বলে-
Oh,What is the thing called light which I can never enjoy. চোখ না থাকলে ভালো লাগা-ভালোবাসা সম্ভবপর হয় না। তাইতো বলা হয়- I love at first sight. চোখ না থাকলে তা কী করে হয়?
: আর কিছু বলবেন কি?… মিস ডলির প্রশ্ন।
: বলবো- দেখার মতো চোখ থাকা চাই, সেই সংগে ভালো লাগার মতো মন থাকা চাই। তবেই না ভালোবাসা হয়।
: আপনার কথা শুনে ভালো লাগলো।
: আমারও। … মাসুদ করিমের উক্তি।
: তারপরও একটা কথা থেকে যায়। …ডলির উক্তি।
: সেটা আবার কি? …মাসুদ করিমের প্রশ্ন।
: এইসব খুচরো আলাপে কিন্তু মন ভরে না। …মিস ডলির উত্তর।
: আমরাতো কাজ নিযে়ই ব্যস্ত সারাক্ষণ। দীর্ঘ আলাপের সাধ্য কি?
: যেখানে সাধ থাকে, সেখানে সাধ্য না থাকলে চলবে কেন?
: তা’ অবশ্য। সাধ্য না থাকলে মানসিক রোগ বাড়বার সম্ভাবনা।
: তাহলে কি করা যায়?… মিস ডলির প্রশ্ন।
: একদিন একটু সময় করা যায় না? … মাসুদ করিমের পাল্টা প্রশ্ন।
: সময় কখন পাওয়া যায়।
: ধরুন ছুটি-ছাটার সমযে় একদিন কোথাও নিরিবিলিতে প্রাণ খুলে আলাপ।
: মন্দ হয় না।
: বেশতো আগামী শুক্রবারেই চলুন কর্ণফুলির তীরে গিযে় বসা যাক। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে। আর, মনের রুদ্ধ কপাট খুলে আলাপও হবে।
: ঠিক আছে। তাই হোক। ভুলে যাবেন নাতো?
: ভুলবো কেন? যেখানে গরজ, সেখানে মন সর্বদা সচেতন থাকে।
: অবশ্যই।
: তাহলে অই কথাই থাকলো। আগামী শুক্রবার কর্ণফুলির তীরে, আমরা দু’জন একত্র হবো ইনশাআল্লাহ।

বারো
ডা. মাসুদ করিম এবং সিস্টার মিস ডলির অন্তরঙ্গতা দৈনন্দিন বৃদ্ধি পেযে় অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করলো। হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় সেলিমেরও তা নজর এড়ালো না। মিস ডলি এবং সেলিম একই গ্রামের লোক এবং সেই সুবাদে উভযে়র মধ্যে ঘনিষ্টতা ছিল। শুধু ঘনিষ্টতা নয়, একটু প্রেমের সম্পর্কও। হয়তো তা হৃদযে়র চাইতে দেহের, সৌন্দর্যের চাইতে স্বার্থের আকর্ষণটাই মূখ্য ছিল। এরও ব্যাখ্যা আছে। এবার সেটাই বলা যাক।
সেলিম এবং ডলি সমবয়সী। একই সঙ্গে পড়াশুনা করেছে। ডলি এসএসসি পাশ করতে পেরেছিল, সেলিম পাশ করতে পারেনি। এসএসসি পাশের পর ডলির বিযে় হযে়ছিল। তার স্বামী ছিল নপুংসক। বয়স চল্লিশের কোঠায়। তবে আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল ছিল। ডলির ভালো লাগেনি। তাই বিযে়টা বেশিদিন টিকলো না। দরিদ্র পরিবারের মেযে়, তাতে আবার তালাকপ্রাপ্তা, তাই ডলির পুনঃবিবাহ কঠিন হযে় দাঁড়ালো। রূপের-গুণের কদর থাকলেও বিযে়র বাজারে তালাকপ্রাপ্তা কিংবা বিধবা মেযে়র অবস্থা খোঁড়া গুরুর মতো। সহজে কেউ ধার ঘেঁষে না। ডলির অবস্থাও তদ্রুপ।
সেলিম দরিদ্র চাষী পরিবারের ছেলে। তার চাকুরী হযে় গেল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ওয়ার্ড বয় হিসেবে। তার বেকারত্ব ঘোচলো। ডলির বিযে় ভাঙ্গার খবর জেনে সেলিম এক সমযে় তাকে বললো : নার্সিং এ ভর্তি হবে নাকি?
: তুই পারিস নাকি ভর্তি করিযে় দিতে…ডলির জিজ্ঞাসা।
: আমার কি সে ক্ষমতা আছে নাকি? তবে এখনও সহজে ঢোকা যায়। ইন্টারভিউ দিলে চাকুরীর নিশ্চয়তা আছে। এখনও ভদ্র ঘরের মেযে়রা এ পেশায় আসতে চায় না। তাই সহজে এতে ঢোকা যায়। একদিন হয়তো এ-সুযোগ আর থাকবে না।
: না ভাই, এ পেশা আমার পছন্দ নয়।
: পছন্দ না করে যাবি কোথায়? তোর একবার বিযে় হযে় গেছে। এখন খুব তাড়াতাডি় বিযে়র পীঁডি়তে বসতে পারবি ভেবেছিস?
: না-ই বসলাম।
: তাহলে নার্সিং-এ দোষটা কি? অনেক পুরুষের সান্নিধ্য পাবার সুযোগ রযে়ছে এখানে।
: সে-সুযোগ আমার দরকার নেই।
: আরে, বেকার থাকার চাইতে তাইবা মন্দ কিসে?
: জানিনা। তবে আমার ভালো লাগে না।
: তবে বিযে়টা ভাংলি কেন?
: একটা ষোল-সতেরো বছরের মেযে় চল্লিশ বছরের দ্বোজবরের ঘর করতে পারে নাকি?
: তাহলে নাসিং-এ ভর্তি হযে় যাবে। এখানে এলে দেখবি মজনুর অভাব হবে না। হাতে পয়সা থাকলে, মানুষের কদর বাডে়।
: তাই নাকি?
: তবে আর বলছি কি? আমি কেওড়া গ্রামের করম আলী মন্ডলের ছেলে। আবার বাবা গ্রামের ভাগচাষী। আমি এসএসসি ফেল করে হাসপাতালের সামান্য ওয়ার্ড বয় হযে়ছি। এখন স্বামী ছেডে় আসা রুবিনা-সাবিনা সিস্টারেরা আমার পিছনে লাইন লাগায়। তাহলেই বোঝো, কেইসটা কি?
: আচ্ছা, ভেবে দেখি।
: তোর আর ভাবা-ভাবিতে কাজ নেই। তুই হলি আমার আপন জনের মতো। তোকে কাছে পেলে, ভাববো একজন দরদের মানুষ কাছে পেলাম। প্রবাসে আপনজন কাছে থাকলে মনটাও ভালো থাকে।
: ঠিক আছে নার্সিং-এ লোক নেবার সময় আমাকে জানাস।
: অবশ্যই জানাবো।

তেরো
ডলির প্রতি সেলিমের দূর্বলতা আছে। কিন্তু সরাসরি তা প্রকাশ করতে পারছে না। তাছাড়া এখনও সে বেশি টাকা বেতন পায় না। তার সামান্য উপার্জনে সংসার পাতা যায় না। তবে উপার্জনশীল কোনো মেযে়কে বিযে় করতে পারলে অভাব থাকে না। ডলিকে তার পছন্দ হয় যদিও একবার তার বিযে় হযে়ছিল। যদি তাকে নার্সিং-এ আনা যায় তাহলে তার সঙ্গে সংসার পাতা যায়। ডলি হয়তো আপত্তি করবে না। তাই তার এতো আগ্রহ।
নার্সিং-এ লোক নেবার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর সেলিম তার একটা কপি ডলিকে পাঠিযে় দিল। ডলি তা পেযে় বাবার কাছে জানালো খবরটা। তার বাবা পছন্দ করলো না এ পেশাটি। মেযে় হযে় পর পুরুষের সেবা করবে, এটা কেমন কথা? তার চেযে় বরং একটা বিযে় হলে ভালো হয়। তার বাবা বললেন : না, নার্সিং-এ গিযে় কাজ নেই।
ডলি বললো : আজকাল মেযে়দের উপার্জন করার দরকার। টাকা থাকলে অনেক মুশকিল আছান হয়।
তার বাবা বললেন : তা অবশ্য হয়। কিন্তু আমার যে ভালো লাগে না। যদি অন্য কোনো চাকুরী হতো, তবে কথা ছিল।
ডলি বলল : আজকাল এতো অল্প বিদ্যায় এ ছাড়া আর কী সহজে মেলে? কাজেই চাকুরী করতে হলে এ সুযোগ ছাড়া ঠিক হবে না।
ডলির বাবা ভাবলেন, মেযে় এসএসসি পাশ করার পরও দ্বোজবরে বিযে় দিতে হযে়ছিল। কারণ তার যৌতুক দেবার মতো টাকা ছিল না। নইলে ডলির মতো রূপসী এবং স্বাস্থ্যমতী মেযে়র পাত্রের অভাব হবার কথা ছিল না।
এ যুগে টাকাই আসল। টাকা না থাকলে সব কিছু ফাঁকা। যদি চাকুরীটা হয়, তাহলে মেযে়র হাতে টাকা থাকবে। উপার্জন করা মেযে়র বিযে়র বাজারে চাহিদা হতেও পারে। নইলে তালাকী মেযে়র জন্য ভালো পাত্র পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না। এই সব ভাবনার বশবর্তী হযে ডলির বাবা শেষ পর্যন্ত রাজী হলেন। ডলি যথাসমযে় ইন্টারভিউতে অংশগ্রহণ করলো। বলা বাহুল্য তার চাকুরীটা হযে় গেল।
ডলির চাকুরী হওয়ায় সেলিম খুব খুশি হলো। তার মনের কোণে ভবিষ্যতের রঙিন স্বপ্ন উঁকি মারতে শুরু করলো। তারই অনুপ্রেরণায় ডলির চাকুরী হলো। সে তাকে উৎসাহিত না করলে তার নার্সিং-এ আসা সম্ভব হতো না। সুতরাং তার একটা কৃতজ্ঞতাবোধ স্বাভাবিক। তাছাড়া তারা একই গ্রামের এবং একই সঙ্গে পড়াশুনা করেছে। তাদের মধ্যে একটা অন্তরঙ্গতাও রযে়ছে। তাছাড়া তার একবার বিযে়ও হযে়ছিল। সুতরাং তাকে সে উপেক্ষা করতে পারবে না, যদিও সে রূপসী এবং স্বাস্থ্যবতী। তাকে নিযে় সংসার পাতা যেতেই পারে। কিন্তু এতো শীঘ্র প্রস্তাব রাখা যায় না। কিছুটা সময় নেয়া দরকার। আগে ক্ষেত্র প্রস্তুত করা আবশ্যক। তাই সে প্রযে়াজনে-অপ্রযে়াজনে ডলির সংগে গল্প-গুজবে মত্ত হলো। ডলিও তাকে উপেক্ষা করে না। তাদের অন্তরঙ্গতা বাড়তে থাকলো। এমন সমযে় রঙ্গ মঞ্চে আবির্ভাব ঘটলো ডা. মাসুদ করিমের।

চৌদ্দ
হাসপাতালের কাছে প্রথম ডলি অস্বস্তি বোধ করলেও, ক্রমে ক্রমে গা-সওয়া হযে় গিযে়ছিল। এখানে রঙ-বেরঙের মানুষ। ডাক্তার, নার্স, টেকনোশিয়ান, ওয়ার্ড বয়, সুইপার কতোকি। তারপরও আছে মেডিকেল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী। আসে বিভিন্ন রোগের রুগী-রুগীনী। আসে তাদের বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন। কতো অজানা-অচেনা লোকের সংগে সাক্ষাৎ পরিচয় হয়। কারো বা সঙ্গে সামযি়ক অন্তরঙ্গতাও ঘটে যায়। নার্সের কাজ শ্রমসাধ্য বলা যেতে পারে যদি সত্যিকার সেবাধর্মের প্রতি ঝোঁক থাকে। অবশ্য ফাঁকিবাজী আছে সর্বত্র।
সেলিমের সংগে কখনও-কখরও দেখা হয় ডলির। সেলিম তাকে জিজ্ঞাসা করে : কিরে, কেমন লাগছে?
: কি?… ডলির পাল্টা প্রশ্ন।
: এই পেশা, বুঝলিনে? নাইট ডিউটি কেমন লাগে?
: মন্দ কি? সময় বেশ কেটে যাচ্ছে ঘুরে-ফিরে।
: এতো রাত জাগা কি শরীরে সয়?
: আরে, সে আর কতক্ষণ? সেবিকা কক্ষ আছে না? সেখানে পালা করে নাক ডাকিযে় ঘুমালে ঠেকায় কে?
: আরে, নাইট ডিউটিতো ঘুমানোর জন্য নয়। রাত জেগে রুগীর সেবা করা, এটাই কর্তব্য।
: সবাইকে যে ‘লেডী উইথ দ্যা ল্যাম্প’ হতে হবে, এমন কথা কি? ফ্লোরেন্স নাইটিংগেলের যুগ বহুপূর্বে গত হযে় গেছে।
: হ্যাঁ, তা গেছে। এখনতো ফস্টি-নষ্টিই চলে বেশি।
: ফস্টি-নস্টি আবার কি?
: ফস্টি-নস্টি বুঝিস না, কচি খুকি নাকি? এসব না বুঝলে তোর কোনো গতি হবে না। কথায় বলে- বাংলার নারী কুডি় হলেই বুডি়। তুইতো তাও ছাডি়যে় এগিযে় আছিস। তাই ওদিকটাও ভাবতে হবে।
: তা আমাকে উপদেশ দিতে আসিস কেন। নিজের ভাবনাটা ভেবে দ্যাখ।
: আরে, আমি একটা টেনশন নিযে় মুডে (গড়ড়ফ) আছি। তোরও সে-রকম বালাই আছে নাকি?
: না। আমি একজন সামান্য নার্স। আমার মুড-ফুড নেই বাপু। ভাগ্যে থাকলে হবে, না থাকলেই না। এ জন্য ঞবহংরড়হ করে ভুগতে চাই না। আপাতত : আমি ভাবছি- প্রাইভেটে এইচ.এস.সি পরীক্ষাটা দেবো।
: তাহলে তো হযে়ই গেলো। তারপর বি.এ. টাও হযে় যেতে পারে। সিনিয়র স্টাফ হতেও সময় লাগবে না। তোকে আর তখন পায় কে?
: আরে, তুইতো পুরুষ মানুষ। চেষ্টা করলে তোরও হতে পারে।
: আর, আমি তো অতি নগন্য ওয়ার্ড বয়। আমাকে পাত্তা দেয় কে?
: আমারতো তোকে খুবই পছন্দ হয়।
: তাই নাকি?
: সত্যি বলছি, তোকে আমার খুবই ভালো লাগে।
: কিন্তু ভালোবাসিস না।
: কে বললো ভালোবাসি না? ভালোও ভাসি। ওরে তা অন্য রকম ভালোবাসা। তাতে শরীরের রক্ত গরম করে না।
: হায় আল্লাহ! তাহলে আর ভরসা কি?
: নিরাশ হস্নে। ভেবে দেখতে সময় নেওয়া দরকার। ঝোঁকের মাথায় কিছু করতে নেই। সংসার-সুখ কে না চায়?
: তাহলে ভাবতেই থাকি। ভাবতে ভাবতে রাত পোহাক।

পনেরো
ডা. মাসুদ করিমের সংগে হৃদযে়র সম্পর্ক উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে থাকে। এক সময় ‘আপনি’ সম্বোধন ‘তুমি’তে নেমে এলো। দু’জন যখন একই ওয়ার্ডে কর্মরত থাকে, তখন ফাঁকে ফাঁকে তাদের অন্তরঙ্গ আলাপ জমে ওঠে। তাছাড়া সুযোগ পেলে তারা পার্কে, রেস্তোঁরায়, কর্ণফুলির তীরে গিযে় মিলিত হয়। কথার ফুলঝুরিতে হৃদযে়র আকাক্সক্ষা প্রকাশ করে। এমনি এক অন্তরঙ্গ মূহুর্তে ডা. মাসুদ সিস্টার ডলিকে বলে : আচ্ছা ডলি, এভাবে আর কতো কাল যাবে? কাছে থেকেও দূরত্ব কতো। এর অবসান হোক এবং তা যতো তাড়াতাডি় হয়। তুমি কি বলো?
: চাইলেই কি সবকিছু পাওয়া যায়? চাইতেও হয় হিসেব করে। বেহিসেবী হলে অনেক সময় শুধু মনোকষ্টই বাডে়।
: হিসেবের জের আর কতো কাল টানবো? এখন নিকেশ হলেই ভালো হয়।
: কিন্তু আরো একটু সময় ভাবলে ভালো হয় নাকি? এইতো বেশ আছি।
: না এ-ভাবে আর নয়। এবারে ঘর বাঁধি, এসো।
: তুমি ডাক্তার। তোমার সঙ্গে একজন সামান্য নার্স ঘর বাঁধবে, তা কি শেষ পর্যন্ত টিকবে? এটা ভেবে দেখা দরকার।
: যেখানে প্রেম থাকে, সেখানে পেশা অতি তুচ্ছ ব্যাপার।
: নার্সকে অনেকে ঘৃণা করে।
: কিন্তু একজন ডাক্তার ঘৃণা করতে পারে না। উভযে়ই মানব-সেবায় নিযে়াজিত।
: তুমি যা-ই বলো, ডাক্তার আর নার্স কখনও সমান হয় না। তাছাড়া ভালোবাসা যে অন্ধ।
: আবার এই ভালোবাসাতেও চিড় ধরে।
: এতো ভাবলে কোনো কাজ করাই সম্ভব হয় না। তাই যে বলে- হাঁটিতে সর্প, গাডি়-চাপা পড়ার ভয়, রেলে কলিশন হয়। এ-সব ভাবলোতো ‘নন্দলাল’ হযে় বসে বসে ঝিমুতে হয়। তাহলে প্রেমের কি হবে?
: প্রেম তো যখন-তখন হতেই পারে। তাতে ভাববার বিশেষ আবশ্যক হয় না। কিন্তু বিযে়র বেলায় অগ্রপশ্চাৎ ভাবতে হয়। এমন কোনো ঘটনা-দূর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে, যাতে প্রেমও যায়, বিযে়ও ভাঙ্গে।
: তবে কি বলতে চাও, আমরা বিযে় করতে পারবো না?
: হয়তো পারবো। তবে পর্যবেক্ষণ, যাচাই-বাছাই দরকার। আমার পারিবারিক পরিবেশ, বংশ পরিচয়- তোমার জেনে নেওয়া উচিত।
: উভযে়র মধ্যে দেহ মনে ধফলঁংঃ হলে, ও-সবের কোনো দরকার হয় না।
: কোনোও দরকার নেই?
ঃ না। খবর নেওয়ারই যদি দরকার থাকতো, তাহলে আগে কেন প্রেম করতে যাবো? জানো- তারেই বলে প্রেম, যখন থাকে না ঋঁঃঁৎব-এর চিন্তা, না থাকে ঝযধসব?
: ওসব শুধু শুনতেই ভালো। বাস্তবে তা মূল্যহীন। তাই আগে সব জেনে শুনে নিতে হয়।
: আমার দরকার নেই।
: তোমার দরকার না থাকলেও, তোমার পরিবার-পরিজনদের থাকতে পারে। শুনেছি তোমার বাবা একজন পরহেজগার হাজী মানুষ। তাছাড়া তিনি নাকি একটা মাদ্রাসা পরিচালনা করেন। আমার মতো বেপর্দা মেযে়কে পুত্রবধু হিসেবে মেনে নেবেন কিনা, সেটা ভাববার বিষয়।
: আমার বাবা পরহেজগার এবং হাজী হলেও উচ্চ শিক্ষিত। তিনি বড় চাকুরীও করতেন। আর যা-ই হোক, ছেলের পছন্দের উপর তিনি হস্তক্ষেপ করবেন না।
: এটাতো তোমার ধারণা মাত্র।
: তা অবশ্য। তবে আমি স্বনির্ভর। তিনি আমার পছন্দে সম্মত না হলে আমি পিছিযে় যাব না।
: তাতে পারিবারিক শান্তি ভংগের সম্ভাবনা।
: সেটা আমি বুঝবো। তুমি চলো একদিন আমার সঙ্গে আমাদের বাডি়তে। আমার বাবা-মা’র সংগে সাক্ষাৎ করে আসবে।
: তোমার সংগে যাওয়া কি ঠিক হবে?
: কেন যাবে না? বিযে় হয়নি বলে কি?
: ধরো তা-ই।
: আরে ধোৎ! কি যে বলো, চাকুরীজীবী ছেলে-মেযে়দের এক সাথে কোথায়ও যাওয়ায় বাঁধা আছে নাকি? তাছাড়া আমরা একই জায়গায় চাকুরী করি। তাছাড়া এন্গেজমেন্টের ব্যাপারও যখন রযে়ছে। নো হেজিটেশন। তোমাকে যেতেই হবে।
(চলবে)

Comments

comments

About

Check Also

মুবাহাসা (২য় পর্ব)

(পূর্ব প্রকাশের পর)মুসাল্লা উঠিয়ে নাওইমাম আযম আবু হানিফা র.-এর আদত মুবারক ছিল যখন তিনি শাগরিদকে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *