facebook বন্ধু

রাগটা একদিন দু’দিনের নয়। বাবা-মাযে়র ওপর সেই ছোট বেলা থেকে একটু একটু রাগ জমা হযে় হযে় এখন পাহাড় সমান হযে়ছে। সেতু এখন বড় হযে়ছে। জ্ঞান হবার পর থেকে দেখে আসছে কাজের বুয়ার কাছে সেতুকে রেখে বাবা-মা সেই বিকেলে পার্টিতে গিযে় ফিরেছে রাত বহর। সেতু হয়তো ঘুমিযে় পডে়ছে এখন। যেদিন ঘুমায়নি সেদিন দেখেছে বাবা মাযে়র অস্বাভাবিক আচরণ। এই অস্বাভাবিকতা সেতুকে ভীতু করে তুলত। কোন কথা বলত না। ঘুমের ভাব ধরে জেগে থাকত আর দেখত কত বেলেল্লাপনা। পরে কাজের বুয়ার কাছে এসব নিযে় প্রশ্ন করত। বুয়া প্রথম প্রথম এডি়যে় গেলেও পরে ধীরে ধীরে সব বলে দেয়। একেক করে সেতু জেনে যায়, পার্টিতে গিযে় বাবা-মা তার মদ খায় আর মাতাল হযে় বাসায় ফেরে। এগুলো দেখে দেখে সেতু বড় হযে়ছে। সব সময় মনে মনে বলেছে, নিজে সারা জীবন এসবের বিরুদ্ধে থাকবে। কখনো মদ স্পর্শ করবে না। কিন্তু না, সেতু তার মনের শপথ রক্ষা করতে পারেনি। নতুন কলেজে ভর্তি হবার পর যে সব বন্ধু সে পেযে়ছে তারা সবাই পূর্ব থেকেই নেশায় আসক্ত। প্রথমে সিগারেট তারপর গাঁজা। একবার যখন নেশা পেযে় বসে তখন আর বাদ যায় না কোনটা। নয় জন বন্ধুর মধ্যে নয় জনই নেশা করে। শুধু নেশা করেই ক্ষান্ত নয়। শারীরিক সম্পর্ক গডে়ছে সবার সাথে।
এই বয়সে সব ছেলেমেযে়দের অর্থাভাব ঘটে। সেতু সেদিক থেকে সচ্ছল। তার বাবার টাকা আছে। বিরাট ব্যবসায়ী তার বাবা। অফিসে গিযে় ম্যানেজারের কাছে চাওয়া মাত্রই টাকা পডে় ঝরঝর করে।
রাতের বেলা এখন আর পড়া হয় না। ল্যাপটপ নিযে় বসে ভধপবনড়ড়শ–এ। রাত জেগে বন্ধুদের সাথে আড্ডা হয় জমকালো। বন্ধুরা নতুন স্টাইলের ছবি, ভিডিও পোষ্ট করে। সেতু তা ডাউনলোড করে রেখে দেয়। সেগুলো দেখে পুলকিত হয়, হয় উত্তেজিত। ভধপবনড়ড়শ–এ বন্ধুর সংখ্যা এখন কযে়ক হাজার। এদের সাথে সরাসরি কথা হয় না কখনো। ঈযধঃ মাধ্যমে লিখে লিখে ম্যাসেজ দিযে় কথা হয়। প্রায় মাসখানেক একটি বন্ধু খুব জালাতন করে আসছে। ঢাকায়ই থাকে। সেতুর সাথে সে কথা বলবে এমনকি দেখাও করবে। সেতু অবশ্য ভধপবনড়ড়শ–এ বন্ধুদের এতো পাত্তা দিতে চায় না। সে চায় এই বন্ধুরা শুধু ভধপবনড়ড়শ–এ সীমাবদ্ধ থাকবে। ওখানে বসেই তোমরা লাফাও যতো পারো।
কিন্তু না, রেজা নামক সেই বন্ধুটি সেতুর নাগাল পেতে চায়। ভধপবনড়ড়শ–এ রেজার বেশ কযে়কটি ছবিও দেখেছে। যেমনি সুঠাম দেহ তেমনি স্মার্ট। অবশেশে মোবাইল নম্বর দিযে় শুরু হয় ফোনালাপ। একদিন কফিশপে, আরেকদিন বারে। তারপর মাঝে মাঝেই বারে সময় কাটায় ওরা। সেতু এর চে’ বেশী এগুতো দেয়নি রেজাকে।
ইদানিং নতুন এক নেশার সন্ধান মিলেছে। বন্ধুরা একে বাবা বলে ডাকে। নেশার জগতে বাবা এক ব্যতিক্রমী সংযোজন। ভধপবনড়ড়শ–এ বন্ধু রেজা এটার সন্ধান এনেছে। রেজা প্রতিদিন ইয়াবা সেবন করে। সেতুর সেটা হযে় ওঠে না। মূলত সেরকম জায়গা হযে় ওঠে না। এছাড়া রেজা ওকে তার আস্তানায় আমন্ত্রণ জানালেও একা একা সেখানে যেতে ভরসা হয় না।
কিন্তু এবার মিলেছে মওকা। বাবা-মা দু-জনেই কক্সবাজার গিযে়ছে। ফিরতে বার পাঁচ দিন লাগবে। দু’দিনের জন্য কাজের মেযে়টাকেও ছুটি দিযে় দিযে়ছে সেতু। এবার মাঠ একদম ফাঁকা। ফোন করে আমন্ত্রণ জানিযে় ডিটেল খুলে বলে রেজাকে। এক কথায় রাজি হয় রেজা। বলে, রাতের বেলা নয়, দিনেই আসবে সে। সেতুর জন্য অনেক ইয়াবা নিযে় আসবে। দু’জন মিলে অনেক আনন্দ করবে সারাদিন।
দুই
ক্লিনিক থেকে আজ বাডি় আসছে সেতু। ঘুমের ঘোর এখনো কাটেনি পুরো। আম্মুর কাছে শুনেছে, তিনটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার আর নগদ টাকা সহ প্রায় দু’ কোটি টাকার সম্পদ চুরি হযে় গেছে। সেতুর শুধু মনে পডে়, রেজা আসছে সুন্দর গোলাপ দিযে়ছে তাকে। সুন্দর ঘ্রাণ…

Comments

comments

About

Check Also

বিদায়বেলা

জামুরাইল হাই স্কুলের বাংলা শিক্ষক ইমরান হোসেন। প্রতিদিন সকাল ৯ টায় স্কুলে আসেন। যথারীতি তিনি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *