সাত সেকেন্ড বনাম সাত মাস

‘আর কয়দিন পরেই হবে বিযে়র নতুন পাত্রী/ ভুল লিখিতে ভুল করেছ ক্লাশ টেনের ছাত্রী’
ছন্দটি প্রসংগক্রমে প্রায়ই আমি আবৃত্তি করে থাকি। এটি আমার লেখা নয়। আমার সবচেযে় প্রিয় এক ছাত্রের লেখা। তাকে একটা প্রিয় নামও দেব। ইসমাইল, আমার ভ্যারাইটিস কোয়ালিটির মেজরিটি আয়ত্বকারী সফল ছাত্রের নাম। আমাদের বাডি় থেকে তিনটি বাডি়র পরেই ওদের বাডি়। মাধবখালী গ্রামের একটি মেযে় ওকে একটা প্রেমের চিঠি দিযে়ছিল। তাতে ভুল বানানেই ভুল করে দীর্ঘ ঊ কারে (ভূল) লেখা ছিল। ঐ চিঠির জবাবে সে তাকে উক্ত ছন্দটি লিখে পাঠিযে় দিযে়ছিল। অবশ্য আজকাল শিক্ষার্থীরা ‘প্রভু’ আর ‘ভুল’ যেন দীর্ঘ ঊ কার না দিযে় লিখতেই পারে না। তাদের কাছে হ্রষ¦ উ কারটাই যেন এখানে ভুল। তাই তারা পারলে অন্যের লেখায় হ্রষ¦ উ কার গুলো কেটে দীর্ঘ উ কার দিযে় সেরেও থাকে। আফসোসের নিঃশ্বাস কোথায় আর ফেলি! একটা শব্দও অভিধান খুলে দেখার কোন রুচি না থাকলেও অন্যের লেখা আন্দাজে কাটতে আমরা খুবই রুচিশীল। কোন লেখা তবে সার্টিফিকেটধারী কিছু পণ্ডিতও যখন ঐ ছাত্রী-প্রেমিকার মত ভুল লিখতে ভুল করে, তখন তা হয় আরো হাস্যকর।
খুব হাসির খোরাক জুগিযে়ছিল সে দিন ২০০৪ সালে। ছারছীনা মাদরাসায় কামিল তাফসীরের ক্লাশে বায়জাবী শরীফের ঘণ্টা নিতে এসেছিলেন নাজিরপুরী হুজুর (জনাব হযরত মাওলানা সিরাজুম মুনীর তাওহীদ)। উর্দু শরাহ সম্বলিত একটা পুরানা কিতাব নিযে় তিনি আসতেন। পড়াবার সময় তার “সাকতাহ ও ওয়াক্ফ” এর ধরনে মনে হত, বইটির ছাপা অস্পষ্ট। বিরক্ত হযে় আজকে বললেন বইটিতে অনেক ভুল আছে। একপৃষ্ঠা শেষ করে যখন পাতাটি উল্টালেন, অমনি হো হো করে হেসে দিলেন। অথচ তাঁর পাহাড় সমান গাম্ভীর্যের ব্যক্তিত্বে ও রকম প্রাণ-খোলা উল্লাস কোন দিন দেখিনি। সকলে চোখ দুটি সূর্যমুখী ফুলের মত মেলে ধরে সাগ্রহে তার দিকে তাকিযে় আছি। তিনি বললেন “এই পৃষ্ঠায় কলম দিযে় একটা বিশেষ দ্রষ্টব্য লেখা আছে। লিখেছে- ‘এই কিতাবে অনেক ভুল আছে। পাঠককে তা সেরে পড়তে হবে।’ কিন্তু এই ভুল লেখতেও সে ভুল করেছে।” তার উপস্থাপনার ভংগিতে, সবাই কষ্ট করেই সেদিন অট্টহাসি থামিযে় রেখেছিল। ও কিতাবটি তিনি কোথা থেকে বা কার কাছ থেকে সংগ্রহ করেছিলেন জানি না। তবে এটা বলা যায় যে, উর্দূ ভাষায় লেখা ঐ তাফসীর কোন সাধারণ লোকে পড়তেও যায়নি আর কিছু লিখতেও যায়নি। ছারছীনা মাদরাসার শিক্ষক হযে় তাঁর চোখে বাঁধল যে, এখানেও ভুল লিখতে ভুল হযে়ছে।
ভাবতে অবাক লাগে। কত তলানিতে আমাদের মাতৃভাষার যোগ্যতা! শুধু ঐ একটি শব্দ নয়, বাংলায় লেখা সারা দেশের সাইনবোর্ড, ব্যানারগুলো খুঁজলে কয়টা নির্ভুল পাওয়া যাবে? তা শতকরায় দূরে থাক হাজারেও প্রকাশ করা যাবে কিনা সন্দেহ। কিন্তু ইংরেজি সাইনবোর্ড বা নেম- প্লেট যেগুলো, তাতে কিন্তু এই বাঙালীদের শতকরা পাঁচটিতেও ভুল হযে়ছে কিনা সন্দেহ। তাহলে রফিক-জব্বার- সালামেরা কি জন্য ভাষার তরে প্রাণ দিতে গেল? শুধু ২১ ফেব্রুয়ারি এলে মাইক বাজিযে় বছরে মাত্র এক দিন বাংলা গান বাজানোর জন্য? তাও আবার ধার-কর্জ করে, কারণ কোন যুবকের মোবাইল মেমোরিতে বাংলা গান বা নজরুল সংগীত থাকে না তো। যা আছে তা সবই প্রায় হিন্দী। রফিক-সালামেরা হিন্দীর জন্য প্রাণ দিযে়ছিল কিনা জানি না। না হয় সাগর সমান জ্ঞান কিংবা এলেমের অধিকারীদের বাংলা ভাষার অবস্থা এমনটা কেন? আমি কি একবারও হিসাব করেছি, মাতৃভাষায় আমার স্কোর কত? জাতির কাছে এটা নিষ্প্রযে়াজনই থেকে গেল। কারণ আমেরিকা, লন্ডন, কোরিয়া যেতে এই স্কোরের দরকার হয় না তো। এই তো সেদিন আমার এক মুসল্লী বলেন, সত্তর হাজার টাকা দিয়া ভর্তি হযে়ছেন, কোরিয়ান ভাষা কোর্সে। যার টাকা আছে তাকে আমরা কোথাও যেতে নিষেধ করি না কিন্তু যদি প্রশ্ন করি, ঘরে সত্তর টাকা দামের একটা বাংলা অভিধানও কি আছে? তখন এই মুসল্লিরা তো দূরে থাক, রানিং স্টুডেন্ট যারা, তাদের ক’জনের টেবিলে পাওয়া যাবে, একটু খতিযে় দেখলেই হয়।
সেই ক্ষোভ করেই রবি ঠাকুর “শিক্ষার বাহন” প্রবন্ধে লিখেছেন “ব্রাহ্মণ ছেলে ধাত্রীস্তন্যে মোটাসোটা হইয়া উঠুক না কেন কিন্তু চ-ালের ছেলেকে মাতৃদুগ্ধ হইতে বঞ্চিত করা কেন?” এখানে ব্রাহ্মণ বলতে ধনাঢ্য শ্রেণী, ধাত্রীস্তন্য বলতে বিদেশী ভাষা আর মাতৃদুগ্ধ বলতে বাংলা ভাষাকে বুঝিযে়ছেন। তিনি প্রশ্ন করেছেন যে, কেন আমাদেরকে জাতীয়ভাবেই বাংলা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে? কেন আমরা বাংলার জ্ঞান থেকে বঞ্চিত? অদ্যবধি এ প্রশ্নের জবাব না মিললেও একথা চরম সত্য যে দু আড়াই বছর মাযে়র দুধ খেযে় দেহটা মজবুত করে নিতে হয়। শক্ত দাঁত উঠলে, তার পরেই কেবল মাছ-গোশত, হাজারো রকমের উন্নত-দামী খাবার খাওয়া যায়। কিন্তু তা না করে কেউ যদি আগেই তার সন্তানকে উন্নত ও দামী খাবার খাওয়াতে চায়, তার সন্তানের অবস্থা কি হবে? নিশ্চয়ই বদহজম, প্রাণহানি। অথচ আজ আমাদের ব্রাহ্মণরা (ধনাঢ্যরা) কথা বলতে শিখলেই তার সন্তানকে নিয়া ইংলিশ মিডিয়ামে পড়তে দেয়। চষধু – ঙ খবাবষ ব্যানারে তাই ব্যাঙের ছাতার মত ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল (ধাত্রীস্তন্য) গজিযে় উঠছে। প্রাণহানি হচ্ছে জাতি ও জাতিসত্তার। এই বাঙালীরা যেই পরিমাণ ইংরেজি গ্রামার জানি, তার ১০০ ভাগের ৩৩ ভাগও (পাশের মার্ক) বাংলা ব্যাকরণ জানি না।
ইসমাইলকে এজন্যই আমি সফল বলতে চেযে়ছি যে, সে বাংলা দিযে়ই প্রাইভেট শুরু করেছিল। তার কথাই ছিল আমি আগে বাংলা শিখবো। বানান, ব্যাকরণের নিয়ম, কবিতা লেখার উপায় খুটে খুটে জিজ্ঞাসা করতো। আমার লেখা গানগুলো মুখস্তই হুবহু সে আমার মত গাইত। তখন সেটা ছিল আমাদের শখ বা খেলনা। তখন মোটেও ভাবিনি যে, এই গানগুলো ছরছীনা শরীফ থেকে ক্যাসেট হবে, সারা দেশে ছডি়যে় যাবে। “তুমি যদি হও আমার প্রভু/ বিশ্বের সব হবে মোর” এটি ছারছীনা ছেলছেলার অনুসারিরা তো বটেই, এমনকি অন্যরাও এ গানটি গায়। আমাকে কেউ চিনুক আর না চিনুক, এ গানটি অনেকেই শুনেছে। ২০০৫ সালে ক্যাসেট করেছিলাম, আজো এটি পুরানা হয়নি। চৈতা আবু ইউসুফ আলী (চুন্নু) মোল্লা গার্লস হাই স্কুলের (মির্জাগঞ্জ, পটুয়াখালী) স্পোর্টস অনুষ্ঠানে এক হিন্দু মেযে় এই গানটি গেযে় ফার্স্ট পুরস্কার পেযে়ছিল। কিন্তু হিন্দু মেযে় কি আনন্দে এটি গাইল? নবী রাসুলের ইতিহাস টানা হযে়ছে, এ গানে তো ওদের কিছু নেই। গেযে়ছিল গানের আনন্দেই। ছারছীনা হতে প্রকাশিত “শাহী গজল” বইতেও আমার অনেক সংগীত স্থান পেযে়ছে। আরেকটি সংগীত গেযে় রহমতপুর ফাজিল মাদরাসায় (বেতাগী, বরগুনা) যথেষ্ট বাহবা অর্জন করেছিল আমার অত্যন্ত ¯েœহের আরেক ছোটভাই নিজাম উদ্দীন (জনাব হযরত মাওলানা নিজাম উদ্দীন তাওকীফ, শিক্ষক, দারুন্নাজাত মাদরাসা) সে সংগীতটি ছিল ‘তোর জ্ঞান থাকলে সবাই ভালবাসিবে/ জ্ঞান না থাকলে সবাই পাযে় ঠেলিবে’ এটি এখনও ক্যাসেট বা বই কিছুই করা হয়নি। ১৯৯৭ সালেই এগুলো লিখেছিলাম।
কিন্তু ইসমাইল চোখে মুখে অসীম আগ্রহ নিয়া বার বার বলতো ভাইয়া, আমিও কি এরকম গান- কবিতা লিখতে পারবো? সেদিন তাকে একটা টিপস্্ই দিযে়ছিলাম। “জীবনের ছোট ছোট সুখ-দু :খের কথা ছন্দ বা সুরে প্রকাশ করতে চেষ্টা করো।” আমাদের কাছে প্রবাদ আছে ‘সস্তায় পাওয়া যায় উপদেশ।’ ইসমাইল এটাকে সস্তা উপদেশ মনে করেনি। শুরু করে দিল হাতে কলমে প্রশিক্ষণ। একদিন মাদরাসায় যাবার সময় চৈতা হাইস্কুলের এক ছাত্রী রাস্তায় মুখোমুখি ওকে ক্রস করার সময় শরীরে একটা বিশেষ ঢং দিযে় আওয়াজ দিল “পালাই ফুঁক।” রাস্তায় আর কোন লোকও ছিল না। ও আমার কাছে এসে মাতালের মত আচরণ শুরু করলো। হাত, পা, মাথা দুলিযে় অস্থির। ভাইয়া, ‘পালাই ফুঁক’ মানে কি? এটা দিয়া বুঝায় কি? কাকে এটা বলতে হয়? তাকে তো আদৌ চিনি না। আমাকে কেন বলল? এখন এটা আমি কিভাবে ছন্দে প্রকাশ করবো?
মূলত আমিই তো ও কথা কখনও শুনিনি আর জানিও না, ও কথাটির বিশেষ কোন অর্থ আছে কিনা। কিন্তু আমি তো তাকে যে কোন আবেগ ছন্দে প্রকাশ করার নসীহাত করেছিলাম। তা তো বাস্তবায়ন করে দেখাতে হবে। নিজ হাতে ওর খাতাটা খুলে ওর সামনেই লেখা শুরু করলাম-
আনমনে একদিন পথ দিয়া চলতে/ শুনিনু হঠাৎ যে ‘পালাই ফুঁক’ বলতে/ চেযে় দেখি চাঁদ-রূপা সুন্দরী ললনা/ অজানা ষোড়ষী বলে কথা আর হল না/ মন করে আনচান খুঁজি তারে পুনরায়/ জানতেই হবে মোর যাহা সে বোঝাতে চায়।”
এ রকমের প্রায় ২০ লাইন লিখে খাতাটা তাকে দিযে় দিলাম। আমার কাছে এর কোন কপি রাখার প্রযে়াজন তখন মনে করিনি বিধায় রাখি নি। ওর কাছে এখনও থাকতে পারে। সেদিন ওর কি যে আনন্দ! অদ্যবধি পালাই ফুঁকের জট না খুললেও ছন্দের জট তার কাছে ঠিকই খুলেছিল। তখন পর্যন্ত মোটেও কিছু সাজাতে না পারলেও চোখে মুখে এত সাহস এসে জমা হযে়ছে, ও যেন বেগুন ভর্তা বানানো শিখে ফেলেছে, প্রায় অর্ধেকটা।
নজরুলের ‘সঞ্চিতা’ পডে় আমরা সময় কাটাতাম। এই গ্রন্থটা বড় ভাবি ‘শিউলী বেগম’ আমাকে উপহার দিযে়ছিলেন। কিন্তু, তিনি কি আজও জানেন, যে এই একটি কাব্যই আমাকে কবিতা লেখার দুর্বার উৎসাহ ও শক্তি সরবরাহ করে দিযে়ছে। ‘ভোর হল দোর খোল’ শিশু বেলা যে কয় লাইন বইতে পেযে়ছিলাম, তাই তো পডে়ছি। এটা আরো আছে? পৃষ্ঠা পর পৃষ্ঠা এটা একটা দীর্ঘ কবিতা? চোখ খুলে গেল। তাহলে পাঠ্য বইতে এরকম কিছু তুলে দেয়া হয়! পূর্ণাঙ্গ মূল কবিতা থাকে কাব্যে!
প্রায় দু’ সপ্তাহ হল, ইসমাইল শুধু বাংলা ব্যাকরণ ও সঞ্চিতার কবিতা চর্চা করছে। স্তবক, চরণ, পংক্তি, ছন্দ, মাত্রা, অন্ত মিল দেখে আনন্দিত ও আশ্চর্যান্বিত হচ্ছি আমরা। ইতোমধ্যে ঘটল আবার আরেক কাহিনী। সে তার এক আত্মীযে়র সাথে এক বাডি়তে গিযে়ছিল। সে আত্মীয় তাকে অপেক্ষায় রেখে ঘরের ভেতরে চলে গেল। দুয়ারের পাশেই ছিল কযে়কটা ফুল গাছ। সবগুলো গাছই শূন্য, কেবল একটি গাছে একটি ফুল, আকারেও বড়। ফুলটি বাতাসে দোলতে দেখে তার ফূর্তি লাগছিল। দুয়ারের দুপাশে শান-বাঁধানো গদিতে বসা ছিল সে ঘরেরই মেযে়টি। তার সাথে ওর কোন কথা হয়নি। ওর নজর ছিল ফুলটির দিকেই নিবিষ্ট। হঠাৎ কোত্থেকে একটা ছেলে এসে ছো মেরে সেই ফুলটা ছিডে় নিযে় গেল। জিহ্বা কেটে দুভাগ করে ফেলি। আহা! কি করলি? একটাই ফুল, কেন ছিড়লি? ফুলটা তোর কি ক্ষতি করলো?। কিন্তু কী অদ্ভূত! সেই মেযে়টি, গৃহ ও ফুলের মালিক, সে কিছুই বলল না। মেযে়টি যদি একটু কিছুও বলতো তাহলেই আমি ওরে ধরতাম। কিন্তু আমি তো মালিক নই। আমি বলতে গেলেই তো সে বলবে- কেন, ফুল আপনাগো? আপনি চেতেন (ক্ষেপেন) কেন? মনে চায় ওরে ধরে একটা আছাড় দিযে় চুরমার করে ফেলি। চোখমুখে অসহ্য আগ্রহের ছাপ নিয়া বলল- ভাইয়া, এই কহিনীটা আমারে কবিতা বানিযে় দিতেই হবে।
বললাম দিব, তবে এর পর তুমি নিজেই লিখবা কিন্তু। আমি আর লিখে দেব না। আসো এই তোমার শেষ প্রশিক্ষণ। ওর সামনেই ফুলটিকে সম্বোধন করে আবার লেখা শুরু করলাম-
ফ্লাওয়ার দুঃখ/ব্যাপারটা সূক্ষ্ম/ভাল লেগেছিল বলে ফল হল রুক্ষ-/ফ্লাওয়ার দুঃখ॥/ফ্লাওয়ার যাতনা /দিন কিবা রাতও না,/ভাসে চোখে সেদিনের সকরুণ দ্যোতনা-/আসলে ছেলেটি সেই, মানুষের জাত-ও না॥/ফ্লাওয়ার ফ্লাওয়ার/তোরে ছিডে় নিল আর/আক্রোশে ফেটে মরি, নাই কিছু করবার/মন চায় ছেলেটিরে ধরে করি চুরমার॥/ফ্লাওয়ার বোকা সে/কিছু নাহি বলে যে,/মালী তোর পাশে বসা চুপ করে আছে সে/আমি তো মালিক নই বলি কোন সাহসে-/ফ্লাওয়ার বোকা সে॥
ইসমাইলের ছোট্ট আবেগটিকে এরকম করে টেনে ৫৯ লাইন বানিযে় দিলাম। খুশির খবর এই যে, খুঁজে পেযে়ছি, এটি আমার সংরক্ষণে আজও আছে। নজরুলের বিখ্যাত কাব্য ‘অগ্নিবীণা’র আনোয়ার কবিতার সাথে মিলিযে় ওকে দেখালাম যে, এটা এই কবিতার কিছুটা কাছাকাছি। ইসমাইলের সেদিনের আনন্দ আমার কাছে ভিডিও করা নেই যে, পাঠককে উপভোগ করাবো। তবে আপনার কোন আনন্দ লেগে থাকলে, তার সাথে কমপেয়ার করতে পারেন যে, এটি যার নিজের জীবনের অনুভূতি- তার তখন কেমন লেগেছিল! সেই অনুভূতিই তাকে ও রকম ছন্দের গর্বিত ছান্দিক বানিযে়ছিল, যা আপনি এই গল্পের শুরুতেই পড়লেন।
যাইহোক, সে আমার ছাত্র এবং আমি তার শিক্ষক। তবে ছাত্র ছাড়া এর বাইরে সে আর কী কী ভূমিকা পালন করেছিল, তা অবলিগ বা অপশন দিযে় দিযে় আমি সব শো করার যোগ্যতা রাখি না। দৃঢ়ভাবে শুধু এ কথা বলতে পারি যে, জীবনে আর কোন দিন, কোন ছাত্র, যদি কোন খিদমাতও না করে; আমার তাতে কোন আফসোস থাকবে না।
ঘরে আমার বৃদ্ধা মা আর আমি, আর কোন লোক নেই। সে ঘরে ঢুকে অগোছালো কোন কিছু দেখলেই আগে সেটা গুছ করতো। এতে পড়ার টেবিল, বিছানা-পত্র ও ঘর-দরজার যা যা সে করেছে তা খোলামেলা করে লিখব না। কারণ এই গল্প যদি তার চোখে পডে় তাহলে হয়তো এখন ঈষৎ দ্বিধা লাগতে পারে। তবে এটুকুই বলি, জোহরের নামাজে দেরি হবার আশঙ্কা করলে, গোসলের পরে খালের ঘাটে ‘মা’ ভেজা কাপড় রেখে আসতেন। আছরে আমি আগে গেলে- আমি ধৌত করে আনতাম আর মা গেলে তিনিই ধুযে় আনতেন। আমি ঘাটে গিযে় তাঁর কাপড় না পেলে ভাবতাম, মা ধুযে় নিযে় গেছেন। আবার মা গিযে় না পেলে মনে করতেন আমি ধুযে় এনেছি। দুপুরের খাবার খেযে় আমি বিশ্রামে থাকতাম, ইসমাইল যখন আসতো তখনই উঠতাম। একদিন মনে হয় থুক ফেলতেই চৌকিতে উঠে বসেছি। অমনি দেখি সে মাযে়র ভিজা কাপড় মেলে খুঁটায় খুঁটায় গিঁট দিযে় রোদে দিচ্ছে, বারান্দার আড়ালে যেভাবে মা দিতেন। সেদিন অবাক লাগছিল। আহা! কি করছিলাম, আমি যে স্পীডে আঠালো থুক থ্র করতাম, তা প্রায় আঠারো ফুট দূরে গিযে়ই পড়ত। সেদিন স্পীড নিয়ন্ত্রণের আগেই ছুড়লে কী অবস্থা হতো! ও কি করছিল! আর আমি কি উপহার দিতে উদ্যত হযে়ছিলাম। তৎক্ষণাৎ ঘটনাটি মাকে ডেকে বললাম। তিনি প্রায় চোখের পানি ছেডে় দিলেন। বললেন বাবা, তোমার কারণে ওরা আমার কাপড়ও ধুযে় দেয়? আমি তো ভাবছি তুমি প্রতিদিন এ কাজটি করো। তখন যা তাতো বটেই। মা আমার আজো ইসমাইলকে ভুলেনি, আজও দোয়া করে।
ছাত্রদের তো স্বভাব যার কাছে পডে় তার খিদমাত করতে উৎসুক, তার উস্তাদ বা মুরব্বির নয়। যেমন কাঁঠালতলী বাজার থেকে এক বস্তা কুড়া (মুরগি ও গবাদির খাবার) কিনে রাস্তায় দাঁডি়যে় আছেন আঃ খালেক স্যার। তিনি তা বহন করতেও পারছেন না আর আশে পাশে কোন উপায়ও দেখছেন না। এমন সময় রাস্তায় উঠল মাসূম। ওকে দেখেই স্যার ডাক দিলেন “এই ছেমরা, (ছেলে) এ দিকে আয়। তোর বাবার নাম কি?”
– শাহ জাহান বেপারি
– (চোখের ভ্রƒ উঁচিযে়) শাহ জাহান বেপারি, ঐ পুব কান্ধা তোগো (তোদের) বাডি়?
– জী,
– আরে তোর বাপে আমার ছাত্র, এই বস্তাটা ল’
– আচ্ছা, আপনি এখানে দাঁড়ান, আমি বাডি় গিযে় আব্বাকে পাঠিযে় দিচ্ছি।
প্রিয় পাঠক, কত আর বলবো? ছারছীনা শরীফের সকল শিক্ষকের উস্তাদ, সবচেযে় বযে়াবৃদ্ধ উস্তাদ বানারীপাড়ার হুজুর (জনাব হযরত মাওলানা আবুল হাশেম)। একদল ছাত্র খেদমত করতো তাঁর। আমিও একদিন একটা জামা এনে ধুযে় দিযে়ছিলাম। তিনি অবসর নিযে়ছেন, তাও প্রায় দুই যুগ আগে। যে কারণে প্রতি বছর নতুন নতুন ছাত্র আমরা অনেকেই তাঁকে চিনতাম না। অতি বৃদ্ধ হওয়ায় তিনি ছিলেন খিদমাতের বেশি মুখাপেক্ষী। নতুনরা তাকিযে় দেখতো যে, দুইজন ছাত্র দুই পাশে দুই বগলের ভিতরে হাত দিয়া শক্ত করে ধরে ইঞ্চি ইঞ্চি করে এক বৃদ্ধকে প্রতি ওয়াক্তে মসজিদে জামাতে নিযে় যাচ্ছে। আজ আমাদের উস্তাদ যাঁরা, তাঁদের সবার উস্তাদই যে ঐ বৃদ্ধ, তা অনেকে জানতোও না। তিনি থাকতেন মোনাযে়ম হলের নিচ তলায়।
ছারছীনা মাদরাসার ইংরেজি স্যার (জনাব হযরত মাওলানা নজরুল ইসলাম) একদিন সেই বানারীপাড়ার হুজুরের খোঁজ নিতে তাঁর রুমের দিকে আগাচ্ছেন। বারান্দা দিযে় হাঁটতে হাঁটতে বলছেন “পোলাপানরে এত বলি যে, বেটা বানারীপাড়ার হুজুরে আমার উস্তাদ, হুজুর চরম মা’জুর মানুষ, তোরা হুজুরের খেদমাত কর। তাতে আমার খেদমতও হবে। ডবল সাওয়াব পাবি, তা শুনাইতে পারি না। খেদমতের কিছু না পাইলে যেন আমারে ধইরা নিয়া গোসল করাইয়্যা আনতেও প্রস্তুত। কিন্তু আমার উস্তাদের লুঙ্গিটা নিয়া ধুইয়্যা আনতেও গডি়মসি।” বিভিন্ন পরিস্থিতিতে তাঁর কথা শুনে না হেসে চুপ করে দাঁডি়যে় থাকবে এমন বেজারমুখোও দুনিয়ায় নাই। সুখ দুঃখের মন্তব্যটি তিনি এমনভাবে করেন, যে ঠোঁট ফাঁকা হযে় হো হো করে দাঁতের পাটি খুলে আসে। দোকানের শাটার টানার মতো হাত দিযে় আমরা তা আড়াল করার চেষ্টা করতাম। তিনি যে কোন প্রকৃতির মানুষ, পরিচিতদের তা কাছে বলার অপেক্ষা রাখে না। তাঁর স্পষ্টবাদিতার কারণে সবাই তাঁকে একটু সমীহ করেই চলতো। কাউকে উল্টা বা অন্যায় কিছু চোখের সামনে করতে দেখলেও, আমরা অনেকেই তা বলার সাহস ও যোগ্যতা রাখি না। সে যোগ্যতা মনে হয় আল্লাহ তাঁকে একশ ভাগই দিযে়ছেন। যারে যা বলবেন খাড়ার উপর ঝাড়া দিযে় দিবেন। যেই হোক তাঁর কাছে কোন ছাড়া ছাডি় নেই। এ জন্য ছারছীনাতে কোন অডিটর বা ভিজিটর আসলেও পথে পথে অন্তত ইংলিস স্যারের নামটা মুখস্ত করে আসে।
যাইহোক, এসব হাসি ঠাট্টার মাঝে আমার মুখস্ত ছিল ইসমাইল নামটা। আমি মনে মনে ভাবতাম স্যার কি বলছেন আর কোথায় আমার ইসমাইল! সে আমার বলা ছাড়াই স্বেচ্ছায়… যা করতো, তা কি কেউ তাগিদ দিযে়ও করাতে পারে? পাকা রাস্তা থেকে আমাদের বাড়ী ঢুকতে পরাণখালী খালপাডে়র রাস্তায় যে কেমন কাদা ছিল, তা বর্ণনা দিযে়ছি “যে কয়টাকা আয় করে ইংরেজি শিখেছি” গল্পে। এখানে শুধু এইটুকু বলে রাখি যে, বিশেষ কোন প্রযে়াজনেও যদি আপনি ওই রাস্তার মুখে এসে দাঁড়াতেন, তা হলে আপনার প্রযে়াজনের আর উপযোগ থাকতো না। পাকা রাস্তা দিযে়ই ফেরৎ চলে যেতেন। আমি বাডি়তে অসুস্থ। যে এলার্জির প্রভাব আজো কাটিযে় উঠতে পারি নি। তবে তখন মাসের অধিকটাই থাকতাম বিছানায় শোয়া, যেটা এখন লাগেনা। ইসমাইল তখন ঐ পরাণখালীর কাদা রাস্তায় ঢুকতো। তখন আর পড়তে আসত না। শুধু আট মিনিটের একটু কাজের জন্য। দক্ষিণ পাশের বাডি়র টিউবওযে়ল থেকে এক কলসি ‘কলের পানি’ এনে দেয়া। যা কিছু পডে়ছে বাংলা ও আরবী ব্যাকরণ। (ইংরেজি পড়াইনি, ইংরেজি তখন আমিই কিছু বুঝতাম না) সাংসারিক কাজে বছরের এই মউসূমে সে খুব ব্যস্ত। যার পড়তে আসার সময় নেই, তার সেই কাদা ভেঙে আমার বাডি় ঢোকার সময় ঠিকই হত। ঘরে কেউ না থাকলে হুড়মুড় করে রান্না ঘর থেকে কলসি বের করে একটা ছেলে এক বাডি় থেকে আরেক বাডি়র মানুষকে পানি এনে দিযে় যেত। কত ভক্তি, বিশ্বাস, অনুরাগ ও আবেগের স্থাযি়ত্ব থাকলে কত দিন এটা পারা যায়! সে কি আর এক দুই দিন! পড়া শুরু করা থেকে প্রায় সাত মাস বা তারও বেশি! এরপর থেকে একে অপরের ব্যস্ততায় যোগাযোগ ও সাক্ষাৎ কমে আসে। তার জীবনেও নেমে আসে বৈচিত্র। মাদরাসা থেকে দাখিল, পরে কলেজে, সেখান থেকে সেনাবাহিনীতে চাকরি। দু’বছরের মত থেকে আবার চাকরি পরিত্যাগ করে আসা, আবার ডিগ্রিতে পড়াশোনা শুরু। শেষের দিকে ঠিকমত বলতেও পারিনা যে কোথায় কিভাবে আছে। এই গল্প লিখতে গিযে় ওর রিলেটেড এক জনের নম্বর খুঁজে একটা তথ্যের জন্য ফোন দিলাম। সে আমাকে দুইটা তথ্য দিযে় দেয়। একটা আমি প্রশ্ন করেছিলাম আর বোনাস উত্তরটা হলো সে নাকি বিযে় করেছে। কোথায় কি তা আর জিজ্ঞাসা করিনি। তবুও যা বলল- “অনার্স পড়–য়া মেযে়, আমাকে যেতে বলেছিল, আমার সে সুযোগ ছিল না।”
যাক মনে একটা তৃপ্তিই পেলাম যে, গল্প লেখা পুরোটাই সার্থক। এই অছীলা না হলে বিযে়র খবরটা তো অজানাই থেকে যেত। আমি যেমন তাকে স্মরণ করি হর-হামেশা, আমাকেও তার তেমনই মনে আছে, এতে আমার সন্দেহ নেই।
কিন্তু কোথায় হারিযে় গেল সেই সোনালী অতীত? আজ ভেবে কূল পাচ্ছি না যে, কোথায় সেই এফেকশন? কোথায় সেই ইনটেনসিফিকেশন? তাহলে কি ওই ছোট্ট বেলার ছোট্ট ভুলের মাশুল দিযে় কেটে পড়ল?
স্মৃতির পাতায় আজ চাঙ্গা হযে় উঠেছে সেই দশ বছর আগের পুরানো ইতিহাস। সে দিন চৈতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালযে় আমি পঞ্চম শ্রেণির আর ইসমাইল তৃতীয় শ্রেণিতে। স্কুলের বারান্দায় ছিল মাদরাসার লাকডি়। দীর্ঘ বন্ধের পরে স্কুল খুলেছে। খোলা তারিখ স্কুলের পরিবেশ গোছানোর জন্য লাকডি় সরাতে আমরা সবাই মিলেমিশে কাজ করছি। তাতে কি যেন একটু ভুল বুঝাবুঝি হযে়ছিল। তা এত তুচ্ছ ছিল যে, আমি কেয়ার-ই করি নি। কারো হাতের লাকডি়তে কোন খোচা খেযে়ছিল হয়তো ওর গাযে়, যা আজ মনে হচ্ছে। তখন তাও মনে করে নেয়ার মত কোন জ্ঞান সেই ছোট্ট বয়সে ছিল না। ভীডে়র মধ্যে হয়তো তার মনে হযে়ছে যে, আমিই দিযে়ছিলাম। তাই সে বলেছিল “দেখামু আনে”। কিন্তু কি দেখাবে? কাকে দেখাবে? তাতে আমার দরকার কি? আওয়াজটি কানে আসলেও কোন ভ্রƒক্ষেপ করি নাই। আমাদের ক্লাশ রুমটি ছিল উত্তর দিকের শেষ রুম, মাদরাসার সন্নিকটে। একই মাঠের দু’ধারে পাশাপাশি দুটি প্রতিষ্ঠান। আমাদের প্রাইমারি আর মাদরাসা। ঐ মাদরাসাতেই ইসমাইলের ইমেডিযে়ট বড় ভাই পড়ত। কাজ শেষে ক্লাশে চলে এসেছি। আমাদের শিক্ষক ঢোকার পূর্বেই দেখলাম তার বড় ভাই ক্লাশে ঢুকে পড়লেন। ইসমাইলের বড় ভাই বলে তাকে আবছা আবছা চিনতাম তখন। ভরপুর ক্লাশে তিনি আমাদের কারো পরিবর্তে পড়াবেন কিনা, তাও বুঝতে পারছিলাম না। বাইরের লোক ক্লাশটাইমে ঢুকতে দেখে সবাই তার দিকে তাকিযে় আছে। সে কোন কথা না বলেই আমার সামনে এসে দাঁডি়যে় সজোরে এক থাপ্পড় কষে দিল আমার গালে। আমি অবাক হযে় দাঁডি়যে়। কিছুই বুঝতে পারলাম না। সে কোন কথা না বলে শক্ত পদক্ষেপে বেরিযে় গেল। সবাই হা করে তাকিযে়ছিল তার দিকে। বড় আপার মেযে় ‘কলি’ বারবার আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিল ‘নূরুল আমীন, কি হযে়ছে?’ আমি তাদের কোন সদুত্তর দিতে পারি নি। জানিনা অবুঝ- বেলার লক্ষ দৃশ্যের মাঝে এই দৃশ্যটি সেই ‘কলি’ র মনে আজও আছে কি না?
তবে আমারও ইমেডিযে়ট বড় ভাই ছিল, ঠিক তার ভাইযে়র বয়সী-ই। উপযুক্ত একশন নেয়ার মত। কিন্তু সারা জীবনে বাল-সুলভ, চপল-সুলভ বা অবুঝ-সুলভ কোন মারামারি করি নি। বাডি়তে কাউকে জানাইনি। মারামারি বাঁধবে এমন কথাও পছন্দ করতাম না। এটা ছিল আমার ফিতরাত, স্বভাব। যাকে এক কথায় আপনারা বোকামি বা দুর্বলতা বলতে পারেন। তবে বড় হযে়, জ্ঞানার্জন করে আজ আমি খুব স্বস্তি পাচ্ছি মনে। বিরাট একটা সুন্নাত আমার আদায় হযে় গেছে। বুখারী শরীফের ৩৫৬০ নং হাদীসে উল্লেখ- “রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনও নিজের কারণে কারো উপরে প্রতিশোধ নেন নি; যতক্ষণ না আল্লাহর হুরমাত বিনষ্ট না হয়।”
এ কথাটি আজ আমার হৃদযে় এক গতিময় তৃপ্তি সরবরাহ করে যাচ্ছে। মা জীবিত থাকতেই এসব কথা বলে শেষ করা দরকার। মাযে়র চেযে় কে আর আমার খবর ভাল জানবে? কাউকে একটা চড় দেই নাই আর খাইও নাই। কেবল এই একটি ছাড়া। সে দিন সে ক্লাশে ঢুকলো আর বের হল, তাতে সময় লেগেছিল হয়তো সাত সেকেন্ড। তাই আজ বড় ভাবনায় ডুবে আছি। সাত মাস পডি়যে় তার কাছ থেকে একটি টাকাও নিযে়ছিলাম না। সে দিযে়ছিল আর মোহাব্বাতের কারণে গ্রহণ করিনি, আমি ফেরত দিযে় দিছিলাম, ব্যাপারটা এমনও নয়। তাহলে তার সাত মাসের সেই অকল্পনীয়, অতুলনীয়, সীমাহীন…। যেটাকে আমি খিদমাত বলছি, আমি প্রতিশোধ না নিলেও আসলে ওটা কি ছিল? স্বেচ্ছায় প্রায়শ্চিত্ত? নাকি নীরব প্রতিশোধ!

Comments

comments

About

Check Also

বিদায়বেলা

জামুরাইল হাই স্কুলের বাংলা শিক্ষক ইমরান হোসেন। প্রতিদিন সকাল ৯ টায় স্কুলে আসেন। যথারীতি তিনি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *