আজ সে ‘কুত্তা’ বিষয়ক কথা শুরু করেছে। আমি বললাম –
দুনিয়ার এতো বিষয় থাকতে কুত্তা নিয়ে এতো মাথা বেদনা কেন্? আত্তি (হাতী) নিয়াও তো বলতে পারতি? ‘
সে বললো –
বস, যারা বন্য আত্তি নিয়া হন্য হইছে তারা বনমানুষ, আমি বনমানুষ না। আত্তির কথা শুনলে আমার চান্দি গরম হয়ে যায়। ‘
তার কথা শুনে মুখ হা করে হি হি হি করে স্বশব্দে না হেসে পারলাম না। একগাল হেসে হাঁপানী রোগীর মতো জিজ্ঞেস করলাম –
কেন্ চান্দি গরম হয়? ‘
দেখেন না, ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া, সুশীলসমাজ সব খানে শুধু আত্তি আর আত্তি,
এখন চলছে আত্তি ইস্যু, আমরা হয়ে গেছি ইস্যু ভিত্তিক! ‘
কথা হচ্ছে ‘গিনেস আবুল’ এর সাথে। মাস তিনেক থেকে আবুল আমার সহচর, কথা বলার সঙ্গী। আমার আবার সবসময় এ রকম একজন ঝানু পাবলিক লাগে, মাছিমারা কেরানির মতো।
আবুলের নামের পিছনে যে ‘গিনেস’ লেঙ্গুড় ঝুলানো তারও একটা জবরদস্ত ইতিহাস আছে।
‘গিনেস আবুল’ একজন সমাজ সচেতন যুবক। হালের সমসাময়িক সব বিষয়ের উপর তার নজরদারী আছে। এমনকি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অনেক বিষয় নিয়ে বরাবর মাথা ঘামায় সে।
সহজ সরল আবুলের মাঝে দেশপ্রেম সবচেয়ে বেশি কাজ করে, কিন্তু সমস্যা এক জায়গায়। মেজাজ বিগড়ে গেলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে, আর মাথায় একবার কোন কিছু ঢুকে গেলে বেরুতে চায় না সহজে। আমার কাছে ভালই লাগে আবুলের সরলতাকে। এলাকার সব খবরাখবর আবুলই আমাকে দেয়। বিদ্যা- বুদ্ধি কম হলেও কঠিন পদার্থের আদমী সে।
এবার গিনেস আবুল আমাকে প্রশ্ন করছে –
বস এখন বাংলা কোন মাস? ‘ সহজেই বললাম –
কেন? ভাদ্রমাস।
ভাদ্রমাস কি হয় বেশি?
গরমই তো হয় বেশি।
হে হে হে বস। জানেন না, ভাদ্রমাসে কুত্তা পাগল হয় বেশি। যৌবন মাথাচাড়া দিয়ে উঠে সবকটা বালিগ কুত্তার।
হয়েছে হয়েছে। রাখ তোর পাগলা কুত্তার কিচ্চা।
বস, আমার কি মনে হয় জানেন? আত্তি নিয়া যারা মহাব্যস্ত ওদের সবকটাকে পাগলা কুত্তা দিয়া দৌড়াইয়া কামড়াইতে। ওদের মগজে কুত্তার বাচ্চারা ভেউ ভেউ করে চিল্লাইবে, নতুবা নাভী দিয়ে জলাতংকের ইঞ্জেকশন হান্দাইবে। এর পর তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে।
তাই নাকি!
বস, এই নির্লজ্জ নেড়ি কুকুর থেকে আরও বেহায়া এক কিছিমের মানুষ আছে চিনেন ওদের?
নাহ্।
কেন কোনো দিন পার্কে টার্কে যান নাই?
হয়েছে হয়েছে। জেনে রাখ গিনেস আবুল, ফেবুতেও এর চেয়ে জঘন্য মানুষ বাস করে, তোর চোখ থাকলে দেখতে পারিস। আর আশপাশের কথাতো তর জানাই।
আবুল আমার কথায় কোনো প্রতিক্রিয়া দেখালো না। মনে হয় সে কানে শুনেনি। মাঝে মাঝে সে কম শুনে। না শুনলে বাঁচলাম। যেভাবে পাগলা কুত্তার কিচ্ছা শুরু করছিল কি থেকে কী জানি বলে ফেলে।