এক বৃদ্ধা মা ও তার ছেলের গল্প

এক বৃদ্ধা মা তার ছেলে, ছেলের বউ ও ছয় বছরের এক নাতীর সাথে বাস করতেন। বৃদ্ধা মা খুব দুর্বল ছিলেন। তিনি ঠিকভাবে হাঁটতে পারতেন না, চোখে কম দেখতেন, বৃদ্ধ হওয়ার কারণে তার হাত কাঁপতো, কিছু ধরতে পারতেন না। যখন বৃদ্ধা মা ছেলে ও ছেলের বউয়ের সাথে রাতে একসাথে খেতে বসতেন তখন প্রায়। প্রতিদিন ই কোন না কোন ঘটনা ঘটাতেন।
এক বৃদ্ধা মা ও তার ছেলের গল্প
কোনদিন হয়তো হাত কাঁপার ফলে দুধের গ্লাস ফেলে দিয়ে টেবিল নষ্ট করতেন, আবার কোনদিন ফ্লোরে তরকারী ফেলে দিতেন। প্রতিদিন খাওয়ার সময় এরকম ঝামেলা হওয়ায় ছেলে তার মায়ের জন্য আলাদা একটি টেবিল বানিয়ে দিল।
টেবিলটি ঘরের কোণায় সেট করে দিল। বৃদ্ধা মা সেখানে একা বসে খেতেন আর একা একা চোখের পানি ফেলতেন।
ছোট্ট নাতীটি এসব নীরবে দেখছিল।
একদিন বৃদ্ধা মা কাঁচের প্লেট ভেঙে ফেললেন। বৃদ্ধার ছেলেটি এজন্য তাকে কাঠের প্লেট কিনে দিল।
একদিন সন্ধ্যায় বৃদ্ধার ছেলেটি দেখলো তার শিশু বাচ্চা কাঠের টুকরা দিয়ে কি যেন বানাতে চাচ্ছে। বাবা তার ছেলের কাছে গিয়ে বললো, ‘বাবা তুমি কি করছো?’
তখন শিশুটি বললো, ‘আমি টেবিল ও একটি কাঠের প্লেট বানাচ্ছি। যখন আম্মু বুড়ো হবে তখন কিসে খাবে! তাই আগে থেকে বানিয়ে রাখছি।’
ছেলের এরকম কথায় বাবা তার ভুল বুঝতে পারলো। সে তার স্ত্রীকে বললো, ‘এখন থেকে প্রতিদিন আমরা দুজন মাকে খাইয়ে তারপর খাব।’
কিন্তু হায়, যখন সন্ধ্যার পর তারা দুজন মাকে খাওয়ানোর জন্য গেল তখন দেখলো, তার গর্ভধারিনী মা মারা গেছে।

Comments

comments

About

Check Also

বিদায়বেলা

জামুরাইল হাই স্কুলের বাংলা শিক্ষক ইমরান হোসেন। প্রতিদিন সকাল ৯ টায় স্কুলে আসেন। যথারীতি তিনি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *