ইস্তিগফার-এর সুফল

নির্বাচিত আয়াত
তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা চাও, তিনি তো মহাক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের জন্য প্রচুর বৃষ্টিপাত করবেন, তিনি তোমাদেরকে সমৃদ্ধ করবেন ধন-সম্পদ ও সন্তান সন্তুতিতে এবং তোমাদের জন্য স্থাপন করবেন বনবনানী আর প্রবাহিত করবেন নদী-নালা। -সূরা নূহ ৭১:১০-১২
নির্বাচিত হাদীস
রাসূলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেন, যদি কোন ব্যক্তি নিয়মিত আল্লাহর কাছে ইস্তিগফার করতে (গুনাহ ক্ষমা চাইতে) থাকে, আল্লাহ তাকে প্রতিটি সংকট থেকে বের করে আনবেন, দুশ্চিন্তা থেকে রেহাই দিবেন এবং ধারণাতীত উৎস থেকে রিযিকের ব্যবস্থা করবেন। -আবু দাউদ, হাদীছ নং ৫৯৯
সারমর্ম
ইস্তিগফার বা ক্ষমাপ্রার্থনা আল্লাহ তাআলার অত্যন্ত পছন্দের কাজ। ইস্তিগফার আল্লাহর ক্রোধের আগুনকে নিভিয়ে দেয়, বান্দার সাথে আল্লাহর দূরত্ব দূর হয়ে নৈকট্য তৈরি হয়। আল্লাহ ইস্তিগফারকে অত্যন্ত পছন্দ করেন বিধায় তাঁরই তরফ থেকে কুরআন-হাদীছে এর অনেক ফযীলাত বিবৃত হয়েছে।
শিক্ষা
মহামহীয়ান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলে-
১. আল্লাহ আসমান থেকে প্রয়োজন অনুপাতে পর্যাপ্ত বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, যা দিয়ে জমিন উর্বর হয় এবং ভূপ্রকৃতি সজীব হয়ে ওঠে।
২. ইস্তিসফারকারী জাতিকে আল্লাহ সন্তান-সন্তুতি ও জনবলে বলীয়ান করবেন এবং
৩. সম্পদ ও ধনবলে সমৃদ্ধ করে দেবেন; এগুলো আল্লাহর ওয়াদা।
৪. পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারী বৃক্ষ-বনানী দান করবেন এবং তাতে বরকত দিবেন।
৫. নদী-নালা, যা না হলে শস্য ও সম্পদে প্রাচুর্য আসে না, প্রকৃতিতে যথার্থ সৌন্দর্য সৃষ্টি হয় না, সেই নদ-নদী ও পানির উৎস দান করবেন এবং নদীতে পর্যাপ্ত নব্যতা দিবেন, যাতে সেসব নদী ও নদীবন্দরকে ব্যবহার করে জাতীয় উন্নতি আসতে পারে।
৬. ইস্তিগফারের মাধ্যমে বড়-বড় বিপদ থেকে লৌকিক বা অলৌকিকভাবে উদ্ধার হওয়া যায়।
৭. টেনশন, দুশ্চিন্তা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ইস্তিগফার এক মহৌষধ।
৮. ইস্তিগফারকারীকে আল্লাহ তাআলা অকল্পনীয় উৎস থেকে হালাল রিযিকের ফায়সালা করে দেন।
৯. পরোক্ষভাবে তার মানেটা যেন এরকম যে, কেউ যদি চাকুরী বা পেশা সংকটে ভোগে, ইস্তিগফার সেই সমস্যার আসমানী সমাধান।

উপসংহার
১. ইস্তিগফার একটি উঁচুস্তরের ইবাদাত, যা বান্দার তরফ থেকে মহাপরাক্রমশালী আল্লাহকে ম্যানেজ করা এবং সন্তুষ্ট করার আল্লাহপ্রদত্ত শক্তিশালী হাতিয়ার।
২. অতএব, আমাদেরকে আস্তাগফিরুল্লাহ বা এ জাতীয় বাক্যের মাধ্যমে বেশি-বেশি ইস্তিগফার করতে হবে।
৩. কাজে এবং আচরণে সেই ক্ষমাপ্রার্থনার প্রমাণ রাখতে হবে।
৪. ইস্তিগফার আমাদের সকাল-সন্ধ্যার অযীফার অংশ হওয়া উচিত।

Comments

comments

About

Check Also

আল্লামা স্যার মুহাম্মদ ইকবাল

ঊনবিংশ শতাব্দির শেষের দিকে যে কয়জন কবি, সাহিত্যিক, দার্শনিক, চিন্তাবিদ এ ভারত উপমহাদেশে কাব্য ও …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *