কুরবানির গোশত ফ্রিজে নয়

মায়ের ডাকে ঘুম ভাঙল তাহসিনের। কিরে তাহসিন তোর বাবার সাথে গরু কিনতে যাবি নাকি? বেড থেকে লাফিয়ে উঠল তাহসিন, হুমম মা অবশ্যই যাব। সকালের নাস্তা সেরে বাবার সাথে গরু কিনার জন্য বেরোলো তাহসিন। হাটে যেতে যেতে বাবার সাথে হালকা কথোপকথন সেরে নিল।
-আচ্ছা বাবা ঈদুল আদ্বহার সময় কি সবাই কুরবানি করে?
-না বাবা,শুধু যাদের সামর্থ আছে তারাই করে।
-তাহলে তো আমরা সামর্থবান,তাইনা বাবা?
-হুমম, একটা মজার বিষয় হচ্ছে মুসলমানরা গরুর গোশত খেতে খুব পছন্দ করে কিন্তু হিন্দুরা এটা খায় না।
-কিন্তু কেন বাবা?

-কারণ হিন্দুরা গরুকে দেবতা হিসাবে মান্য করে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে তো গরু কুরবানি করতেও নিষেধ আছে।
এইসব বলতে বলতে চলে এল গরু ছাগলের হাটে। তাহসিন বাবার হাত ধরে ভয়ে ভয়ে হাঁটছে, কখন জানি কোন গরুর লাথি খেতে হয়! যাই হোক অনেক দেখাশুনা করে একটা মোটাতাজা গরু কিনা হলো। তাহসিন এবার শুধু দিন গুনছে ঈদের অপেক্ষায়। অবশেষে কাক্সিক্ষত ঈদের দিন আসল। তাহসিন ঘুম থেকে উঠে গোসল সেরে বাবার সাথে ঈদগাহে নামাজ আদায় করল। বেশ উৎফুল্ল মেজাজে গরু জবাই করা হলো। তাহসিনের বাবা তার মাকে উদ্দেশ্য করে বললেন গোশত গুলো ফ্রিজে রেখে দেওয়ার ব্যবস্থা কর। তাহসিন আশ্চর্য হয়ে বলল, কিন্তু কেন বাবা?
-আমরা তো প্রতি বছরই ফ্রিজে রাখি তাহসিন।
-তুমি কি শুননি বাবা? গত জুমাবার ইমাম হুজুর ওয়াজ করেছেন, কুরবানির গরুর গোশত তিনটি ভাগ করে এক ভাগ গরিব মিসকিনদের, এক ভাগ আত্মীয়দের এবং এক ভাগ প্রতিবেশীর মাঝে বণ্টন করতে হয়। তাহসিনের কথায় তার বাবার বিবেক জাগ্রত হলো, তাকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে কপালে চুম্বন করে বললেন, চলো আমরা এলাকায় গোশত বণ্টন করে আসি। তাহসিন খুব খুশি হয়ে মনে মনে স্লোগান তুলল-
‘কুরবানির গোশত ফ্রিজে নয়
সঠিক ভাবে যেন বণ্টন হয়’।

Comments

comments

About

Check Also

এক বছরের রাজা

এক শহরে একজন বড় ব্যবসায়ী ছিল। সে দেশ বিদেশে মালামাল বিক্রি করত। তার ছিল অনেক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *