শোকর আলহামদুলিল্লাহ, মাহে রবিউল আওয়াল আগমনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। আকাশে আবার চাঁদ উঠবে। ক্যালেন্ডারের পাতাও সে ঘোষণা দিয়ে রেখেছে। রবিউল আওয়াল নামটি শুনলেই আশিকের মনে শুধু নবীজীর নাম প্রতিধ্বনিত হয়। সে নামের মধুর ধ্বনি বেজে উঠে বারবার। নিজেকে নিজেই বলতে থাকে, এ মাস তো সেই মাস, যে মাসে পিয়ারা নবীজীর জন্ম হয়েছিলো। সবার মনে একই ঐকতান, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাশরীফ এনেছিলেন এ পৃথিবীর বুকে সারা জাহানের সরদার হয়ে, সর্বশেষ নবী ও রাসুল হয়ে। সর্বোপরি, উম্মতে মুহাম্মাদীর দরদী হয়ে।
এখানে প্রসঙ্গত শিরোনাম নিয়ে দু-লাইন কথা বলা দরকার বলে মনে করছি। আশিকে রাসুলের বড় পরিচয়- তিনি নবীকে সবচে বেশী জানেন ও মানেন। সামান্য ভাবলেই কিন্তু বিষয়টা বুঝে আসে। একজন আশিক বা প্রেমিক তখনই বলা যায়, যখন প্রেমাষ্পদের সবকিছু তার জানা। তখন সে ভালোবাসা পূর্ণতা পায়। স্বার্থক হয়। মানাটা তো আরো সহজ বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। কারণ, প্রেম ও ভালোবাসার মাধ্যমে প্রেমিক ও প্রেমাষ্পদের বাহির-ভিতরের সবকিছু বিনিময় হয়ে যায় মনের অজান্তে। উভয় উভয়কে আয়না হিসেবে এমন ভাবে ভাবতে শুরু করে যে, সবসময় এর প্রতিচ্ছবি ওর সামনে, ওর প্রতিচ্ছবি এর সামনে ভেসে ওঠে। এবার পাঠক! স্ব স্ব বিবেকের কাছে প্রশ্ন করি, আমরা আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কতটুকু জানি! তাঁর নূরময় জীবন নিয়ে কতবার ভেবেছি জীবন চলার পথে পথে! তাঁর কয়টা জীবনীগ্রন্থইবা পাঠ করেছি বয়ে চলতে থাকা আমার এই জীবনে! মুখে মুখে ভালোবাসা শতসহস্রবার উচ্চারণ করেছি, কিন্তু তাঁর জীবন থেকে আমাদের জীবনে কিছু কি বিনিময় করতে পেরেছি? বুকে হাত দিয়ে কি বলতে পারবো, আমি দশটা গ্রন্থ পড়েছি আগা-গোড়া! তবু সব ইতিহাস বাদ। আমি-আপনি নবীজীর এই জন্মমাস থেকে নতুন করে শুরু করি এবং মরণ অবধি এ অধ্যয়ন চলতেই থাকবে। তাহলে তাঁর মহান জীবনীর প্রভাব ক্ষুদ্র এ জীবনে পড়বে, পড়বেই। আদেশ-উপদেশ কিছুই না। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নিজের ঝুলিটাই মূলত শুন্য; তাই আপন বিবেককে প্রশ্ন করেই লেখাটা টানলাম। যাইহোক, মূল লেখায় ফিরে যাই।
বিশ্বনবীর আগমনে মরহুম কবি কাজী নজরুল ইসলামের নজরানা-
‘খোদার হাবীব হলেন নাজেল- খোদার ঘর ঐ কাবার পাশে,
ঝুঁকে পড়ে আর্শ কুর্শী- চাঁদ সুরুয-তাঁয় দেখতে আসে।
আসিছেন হাবীবে খোদা, আরশ পাকে তাই উঠেছে শোর,
চাঁদ পিয়াসে ছুটে আসে আকাশ-পানে যেমন চকোর।
কোকিল যেমন গেয়ে ওঠে ফাগুন আসার আভাস পেয়ে,
তেমনি করে হরষিত ফেরেশতা সব উঠলো গেয়ে।’
‘সাহারাতে ফুটলো রে ফুল রঙিন গুলে-লালা,
সেই ফুলেরই খোশবুতে আজ দুনিয়া মাতোয়ালা।’
আমাদের মুখ থেকে আনন্দ আর কৃতজ্ঞতার উপযুক্ত ভাষা বের হয় না। তাই মাদীনার সেই শিশুদের কণ্ঠে কণ্ঠ মিলাই-
“তালাআল বাদরু আলাইনা,
মিন ছানিয়াতিল বিদায়ী’…
ওয়াজাবাশ শুকরু আলাইনা
মাদাআ’ লিল্লাহি দায়ী’…”
আমরা কবিতাও লিখতে পারি না। তাই আল্লামা শেখ সাদী র. এর কলমে কলম মিলাই-
“বালাগাল উলা বিকামালিহি…
কাশাফাদ্দুজা বিজামালিহি…
হাসুনাতু জামিউ খিসালিহি…
ছাল্লু আলাইহি ওয়া আলিহি…”
সত্যিই! পৃথিবী আবার হেসে উঠেছে। গাছের পত্র-পল্লব দুলে উঠেছে। মানুষের মনে আনন্দের তান ধরেছে। লিখনে-বলনে, ব্যানারে-মাহফিলে, অন্তরে-সবখানে আজ জ¦লজ¦ল করছে এই গীতি- বালাগাল উলা বিকামালিহি… কারণ, নবীর জন্মমাস আবার ফিরে এসেছে মুমিনের দ্বারে, সে মাসের বসন্তে আমোদিত হয়েছে তামাম জাহান। ভক্তি-শ্রদ্ধায়, আবেগে-ভালোবাসায় আহ্লাদিত এ ধরার জড়-অজড় পদার্থের সবই। আমার তো বিশ^াস, আল্লাহর ঘোষণা যদি হয়- নভোমন্ডলে ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, সবই আল্লাহর নামে তাসবীহ পাঠ করে, তবে তারাও আজ দুলে দুলে সমস্বরে মধুর সুরে পাঠ করছে দুরুদ। প্রেরণ করছে সালাম। হোক না তাদের ভাষায়! অসম্ভব কি?
যাইহোক, আসল কথায় আসি। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ জন্মমাসে আমাদের অতি আবেগী হয়ে খুশী উদযাপন করলেই হবে না, একটু বেশীই কিয়াম করে করে ভালোবাসার বহি:প্রকাশ করলেই হবে না, একটু বেশীই দুরুদ পড়ে ক্ষান্ত হলেই হবে না- এখানে আমাদের বিবেক থাকতে হবে। সতর্ক-জ্ঞান থাকতে হবে। আমাদের এ খুশী বজায় রাখতে হবে প্রতিটি দিন, উদযাপনের রেশ ধরে রাখতে হবে সারাটা বছর। দরুদ ও সালাম সহীহ পন্থায় জারী রাখতে হবে দিনে রাতে সর্বক্ষণে। সেটা কিভাবে? সমাধান দিয়েছেন মহান আল্লাহ জাল্লা শানুহু। দুটি আয়াতের অনুবাদ পেশ করছি, আশা করি বুঝে আসবে।
প্রথম আয়াত: করণীয় সম্পর্কে আল্লাহ পাক বলছেন,
-“এবং আপনার পালনকর্তার নেয়ামত বা অনুগ্রহের কথা আলোচনা করুন বা প্রকাশ করুন।” (সূরা দ্বুহা: ১১)
কি সেই অনুগ্রহ? সেটাও আল্লাহ পাক ইরশাদ করে বলেছেন,
-আল্লাহ ঈমানদারদের উপর অনুগ্রহ করেছেন যে, তাদের মাঝে তাদের নিজেদের মধ্য থেকে নবী পাঠিয়েছেন। তিনি তাদের জন্য সব আয়াত গুলো পাঠ করেন। তাদেরকে সংশোধন করেন। এবং তাদের কিতাব ও কাজের কথা শিক্ষা দেন। বস্তুত তারা ছিলো পূর্ব থেকেই পথভ্রষ্ট। (সূরা ইমরান: ১৬৪)
অর্থাৎ, সেই নেয়ামত বা অনুগ্রহ হলো, প্রিয় নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
দ্বিতীয় আয়াত: আল্লাহ পাক বলেন,
-যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রত্যাশা আশা করে এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করে, তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসুলের মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে। (সূরা আহযাব: ২১)
অতএব, বুঝা গেলো, রাসুলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনকে খুব গভীর ভাবে উপলব্ধি করতে হবে। অত:পর নিজের জীবনের সাথে তা একীভূত করতে হবে। এমন ভাবে যে, একজন মানুষ দেখেই বলবে, লোকটা উসওয়ায়ে হাসানা বা নববী আদর্শের পূর্ণ অনুসারী। তাহলে খুব সংক্ষেপে বা এক নজর দেখে নেয়া যাক, নবীজীর আদর্শ কি ছিলো? নবীজী কখন কি করতেন? ওয়ামা তাওফীকী ইল্লা বিল্লাহ।
১. আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন কোন দরজার সম্মুখে আসতেন, দরজার সামনে মুখ বরাবর দাঁড়াতেন না। বরং ডানে, বামে, পিছনে দাঁড়িয়ে বলতেন- আসসালামু আলাইকুম, আসসালামু আলাইকুম…
২. যখন কোন রোগীর নিকট আসতেন, বলতেন- হে মানুষের প্রতিপালক! তার সমস্যাটা দূর করে দাও। তুমি সুস্থ করে দাও। তুমি তো আরোগ্যকারী। তোমার আরোগ্যদান ছাড়া আর কারো এ ক্ষমতা নেই। অনুরূপ কেউই নেই অসুস্থতাকে বহাল রাখবে। কখনো বলতেন, কোন সমস্যা হবে না। আল্লাহ চাহে তো পবিত্রতা লাভ করবে।
৩. যখন তাঁর কাছে গাছের প্রথম ফল হিসেবে হাদিয়া আসতো, প্রথমত তিনি সামনে রাখতেন, ঠোঁটে নিতেন। অত:পর তাঁর কাছে যে সমস্ত বালকেরা থাকতো, তাদেরকে দিতেন।
৪. হাদিয়া আসলেই তিনি গ্রহণ করতেন না। প্রথমত জিজ্ঞেস করতেন, এটা সদকাহ নাকি হাদিয়া? যদি সদকাহ হতো, সাহাবীদেরকে বলতেন, সাহাবীরা! তোমরা খাও। যদি হাদিয়া হতো, তিনি আপন হাতে তা গ্রহণ করতেন এবং সকলকে সাথে নিয়ে খেতেন। কারণ হলো, সদকাহ হলো গরীব-মিসকীনদের জন্য।
৫. যখন তিনি শুতে যেতেন, ডান গালের নিচে হাত দিয়ে শুতেন অত:পর সূরা কাফিরুন পড়তেন। রাতে শুতে গেলে তিনি দুআ পড়তেন, হে আল্লাহ! পাশর্^ গ্রহণ করলাম। আমার গুনাহগুলো ক্ষমা করে দাও। শয়তানকে দূরে ঠেলে দাও। বিভিন্ন বাজি বা পণ বা চুক্তি থেকে মুক্তি দাও। মিজান বা দাড়িপাল্লাকে ভারি করে দাও। উত্তম মজলিসে আমাকে উন্নিত করো। কখনো বলতেন, হে আল্লাহ! তোমার নামেই মৃত্যুবরণ করছি (ঘুমাচ্ছি), আবার তোমার নামেই জাগবো। ঘুম থেকে উঠলে বলতেন, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদেরকে মৃত্যু (ঘুম) থেকে আবার জাগিয়েছেন, তার কাছেই তো আমাদের প্রত্যাবর্তন।
৬. তিনি যখন স্বাভাবিক শুতেন, বলতেন- হে আল্লাহ! তোমার শাস্তি হতে আমাকে মুক্তি দিও, যেদিন তুমি তোমার বান্দাদেরকে উত্থিত করবে।
৭. প্রবল বাতাস বয়ে গেলে নবীজীর মুখ থেকে উচ্চারিত হতো এই দুআ- হে আল্লাহ! বাতাসকে ফলদায়ক করে দাও। তীব্র বা প্রচন্ড করে দিও না।
৮. যখন তিনি পাগড়ী বাধতেন, দুই কাঁধের মাঝখানে ছেড়ে দিতেন।
৯. যখন তিনি খেতেন, আঙ্গুলগুলো হাতের মাঝে ঘুরাতেন না। স্থির রাখতেন।
১০. যখন মানুষেরা তাঁর কাছে বায়আত হতো, তিনি তাদেরকে তাই করতে বলতেন, যা তিনি নিজে করতে সক্ষম হতেন।
১১. যখন তিনি বসার ইচ্ছা করতেন, হাতদুটিকে পেচিয়ে বসতেন।
১২. যখন কোন গুরুতর বিষয় আসতো, বা কোন বিষয় হঠাৎ আপতিত হতো অথবা চিন্তা-হতাশা তাঁকে বেঁধে ফেলতো, তিনি সালাতে বা নামাজে দাঁড়িয়ে যেতেন। কখনো দুআ করতেন, ইয়া হায়্যু! ইয়া কাইয়ুম! তোমার রহমতের উছিলায় সাহায্য কর।
১৩. ঈদের দিনে বের হতেন এক রাস্তা দিয়ে, ফিরতেন অন্য রাস্তা দিয়ে। এবং হেঁটে হেঁটে যাওয়া আসা করতেন।
১৪. যখন তিনি খুতবা দিতেন, তাঁর চোখ মুবারকদ্বয় লাল হয়ে যেতো। আওয়াজ হতো মুক্ত কণ্ঠের বুলন্দ স্বরে। যেন মনে হতো, তিনি কোন বাহিনীর ভীতিপ্রদর্শনকারী।
১৫. নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন খুশী হতেন, তাঁর চেহারা মুবারক এমন মুনাওয়ার বা সমুজ্জ্বল হয়ে যেতো, মনে হতো তিনি চাঁদের একটি টুকরা।
১৬. মিম্বরে খুতবা বা বক্তৃতার জন্য তিনি বসলেই যে কথা-ই তিনি বলবেন না কেন, সালাম দিয়েই শুরু করতেন। অনেক বক্তার দেখা যায়, লোকদের আগে সোজা করে নিয়ে তারপর নতুন করে সালাম দিয়ে বক্তৃতা শুরু করে। সাহাবাদের দিকে মুখ করে খুতবা দিতেন। নিচে, উপরে তাকাতেন না পুন:পুন:।
১৭. দাফনের পর নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্মিলিত দুআ করতেন। সাহাবীদেরকে বলতেন, সাহাবীরা! তোমরা তোমাদের ভাইদের জন্য ইস্তিগফার পাঠ করো। তাদের দৃঢ় থাকার প্রার্থনা করো। কারণ, এখন তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
১৮. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খাদেমকে যত প্রশ্ন করতেন বা সর্বাধিক যে প্রশ্নটা করতেন- সেটা হলো, তোমার কি কোন কিছুর প্রয়োজন বা দরকার আছে?
১৯. নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জুমআবারের খুতবায় বক্তৃতা দীর্ঘ করতেন না।
২০. তিনি নিজ হাতে কাপড়ে তালি লাগাতেন, জুতা মেরামত করতেন। সাধারণত মানুষ ঘরে যে কাজগুলো করে, তিনিও সেগুলো নিজেই করতেন।
২১. তিনি যখন লুঙ্গি বাঁধতেন, সামনের থেকে সামান্য নামায়ে দিতেন, পিছনের থেকে সামান্য উঁচু করে দিতেন।
২২. নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন কুরআন তেলাওয়াত করতেন, প্রত্যেক আয়াত ওয়াকফ করে বা থেমে থেমে পড়তেন।
২৩. নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন রাস্তায় হাঁটতেন, মনে হতো না যে, কোন অলস বা বুড়া ব্যক্তি হাঁটছে।
পাঠক, এসমস্ত বিষয়গুলো যদি আপনি নবীজীর আদর্শ মনে করে পালন করেন, তাহলে শান্তি পাবেন। যখনই এ নীতির আলোকে আপনার কাজ সিদ্ধি করতে যাবেন, তখন আপনার মন আপনাআপনিই বলে উঠবে, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমন করেই করতেন। আমারটা তেমন হচ্ছে তো? নবীজীর সেই আদর্শ অনুযায়ী আমি করতে পারছি তো? ব্যস, ধরে নিবেন, আপনি আপনার রেজাল্ট পেয়ে গেছেন। কাজ করতে যেয়ে যদি নববী রীতির চিন্তা আপনার মাথায় আসে, মানে আপনি চেষ্টা করছেন সে অনুযায়ী করতে, সেটা কি চাট্টিখানি কথা? না, অনেক বড় কথা।
এভাবে অনেক অনেক তুলে ধরা সম্ভব প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবন মুবারক থেকে। সত্যিই, রাসুলে মকবুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের গোটা জীবনই উসওয়ায়ে হাসানা। উত্তম আদর্শ। সর্বশ্রেষ্ঠ, সর্বোত্তম, সর্বসেরা, সর্বব্যাপী অতুলনীয় এক আলোকবর্তিকা বা আলোর দিশা। যে দিশার সন্ধান মানুষকে দেওয়ার জন্য আল্লাহ পাক যুগে যুগে নবী-রসুল প্রেরণ করেছেন। সর্বশেষ, আমাদের নবীর মাধ্যমে তাঁর আদর্শ কিয়ামত তক সমুন্নত করে দিয়েছেন দয়াময় রব্বুল আলামিন। শোকর হে আল্লাহ! তোমার শোকর। আমাদের তৃপ্তি তো এখানেই যে, এ আদর্শের পরে আর কোন আদর্শ নেই। নেই কোন নবী ও রসুল। তাইতো আল্লাহ পাক শেষবারের মতো গোটা পৃথিবীবাসীকে জানিয়ে দিচ্ছেন-
“তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসুলের মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে। (সূরা আহযাব: ২১)”
মহান আল্লাহ পাক রসুলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ মোতাবেক আমাদের জীবনকে কবুল করে নিন। তাঁর নূরে মুনাওয়ার করুন। দুনিয়ার সকল ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বস্তু এমনকি প্রাণাধিক বস্তুর থেকেও তাঁর প্রেম ভালোবাসা আমাদের সবার হৃদয়ে গালেব করে দিন। জীবনের শেষ মূহুর্তে হলেও আমাদের মতো গরীব বান্দাদের জিয়ারত নসীব করে দুজাহানের কামিয়াবী নসীব করুন।
রব্বানা তাকাব্বাল মিন্না ইন্নাকা আনতাস সামিউল আলিম। বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমীন, বিহুরমাতিন নাবীয়্যির রাউফ ওয়াল কারীম…