আল-কুরআনের আলোকে একনজরে মহানবি স.-এর পরিচয় ও অধিকার

মহানবি স.-এর গুরুত্বপূর্ণ পরিচয়-০১
আল-কুরআন অনুসারে তিনি ছিলেন একাধারেÑ
১. নবি
২. রাসুল
৩. উম্মি বা অক্ষরজ্ঞান অর্জন না করেও মহাজ্ঞানী/শ্রেষ্ঠতম মনীষী
৪. তাওরাত, ইনজিল-এর মত আসমানি কিতাবে তাঁর বৈশিষ্ট্যাবলির জীবন্ত বিবরণ ভবিষ্যদ্বাণী আকারে লিপিবদ্ধ ছিল
৫. আমর বিল মা’রুফ এবং
৬. নাহি আনিল মুনকার তাঁর ও তাঁর-আনীত দীন-এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য
৭. পবিত্র ও রুচিসম্মত কিছু জিনিসকে হালাল করেছেন, যেগুলো অতীতের কোনো কোনো সময় বিশেষ কারণবশত হারাম ছিল
৮. আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে তিনি খবিছ কিংবা অপবিত্র জিনিসকে হারাম করার ক্ষমতাপ্রাপ্ত
৯. তিনি পূর্ববর্তী শরিআতের দুঃসহ বোঝা অপসারণকারী Ñ(৭:১৫৭)
১০. তিনি খতামুন নাবিযি়্যন বা সর্বশেষ নবি Ñ(৭:১৫৮; ৩৩:৪০)
১১. তিনি একাধারে শাহিদ (শেষ বিচারের রাজসাক্ষী),
১২. মুবাশ্শির (মুমিন ও সৎকর্মীর জন্য সুসংবাদদাতা),
১৩. নাজির (আল্লাহর নাফরমানির পরিণাম সম্পর্কে সতর্ককারী) Ñ(৩৩:৪৫)
১৪. দাযি় ইলাল্লাহ (আল্লাহর দিকে আহ্বানকারী), সিরাজুম মুনির (আলোকদাতা প্রদীপতুল্য) Ñ(৩৩:৪৬)

মহানবি স.-এর গুরুত্বপূর্ণ পরিচয়-০২
১৫. তিনি মানুষকে ওহি তিলাওয়াত করে শোনান
১৬. তাজকিয়া বা ভেতরে-বাইরে পবিত্র করে দেন
১৭. কিতাব ও হিকমাত (সুন্নাহ’র) তালিম (শিক্ষণ/প্রশিক্ষণ) দেন Ñ(৬২:২)
১৮. তিনি স. জবান ও অন্তরের দিক থেকে কোমল
১৯. মানুষের ত্রুটি, বিশেষ করে অধীনস্তদের কঠিন লঙ্ঘনের ব্যাপারেও ক্ষমাশীল এবং উপেক্ষাকারী
২০. পরামর্শ করে কাজ করাই তাঁর নীতি ও স্বভাব
২১. নিজ সিদ্ধান্তে তিনি অটল ও আল্লাহর ওপর ভরসাকারীÑ(৩:১৫৮)
২২. তিনি মানুষের কল্যাণকামী এবং তাদের ক্ষতি তিনি সহ্য করতে পারেন না
২৩. মুমিনদের প্রতি রউফ ও রহিম (দয়ালু ও পরম ¯েœহপরায়ণ) Ñ(৯:১২৮)
২৪. তাঁর দুআ/দাওয়াত/আহ্বান অন্য কারুর আহ্বানের মত নয়, তাঁর ডাকে সাড়া না দেয়া ফাসাদ/বিপর্যয় ও মর্মন্তুদ শাস্তি নেমে আসার কারণ Ñ(২৪:৬৩)
২৫. কোনো বিষযে়ই তাঁর ওপর অগ্রণী হওয়া চিরনিষিদ্ধ Ñ(৪৯:১)
২৬. তাঁর বা তাঁর মাকবারার (রওজা) সামনে গলার আওয়াজ উঁচু করা দ-নীয় অপরাধ
২৭. এমনকি সাধারণের মত উঁচু আওয়াজে কথা বলাও আমল ধ্বংস হওয়ার কারণ Ñ(৪৯:২)
২৮. তাঁর ব্যাপারে আদব প্রদর্শন তাকওয়ার লক্ষণ এবং ক্ষমা ও মহাপুরস্কারের পথ Ñ(৪৯:৩)
২৯. তাঁর নাম ধরে ডাকা বেআদবি ও নির্বুদ্ধিতার লক্ষণ Ñ(৪৯:৪)।

তাঁর হক : তাঁর ব্যাপারে উম্মাতের করণীয়
১. তাঁর আনীতি যাবতীয় বিষয়কে প্রশ্নহীনভাবে বিশ্বাস করা
২. তাঁকে ভক্তি সহকারে উচ্চতর সম্মান করা
৩. তাঁকে/তাঁর আনীত দীন-এর সহায়তা করা
৪. সাথে নিযে় আসা তাঁর ওপর নাজিলকৃত নূর-এর ইত্তিবা’ (অনুসরণ) করা। Ñ(৭:১৫৮)
৫. তাঁর ওপর সালাত/দরুদ পেশ করা (তাঁর জন্যে বেশি-বেশি রহমাতের দুআ করা)
৬. সম্মানের সাথে তাঁর ওপর সালাম পেশ করা Ñ(৩৩:৫৬)
৭. তাঁকে কষ্ট না দেয়া। কারণ, তাঁকে কষ্ট দেয়া, দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহর লা’নাত বা অভিশাপপ্রাপ্তি এবং অপমানজনক শাস্তির কারণ Ñ(৩৩:৫৭)
৮. তাঁকে যে বুঝে-শুনে কষ্ট দেয়, সে অভিশপ্ত এবং নির্মমভাবে হত্যা ও মৃত্যুদ-ের যোগ্য Ñ(৩৩:৬১)
৯. তাঁর আহলে বায়ত বা নিকটজনের প্রতি আন্তরিক মাহাব্বাত পোষণ করাও তাঁর হক-এর অন্তর্ভুক্ত Ñ(২৬/৪২:)।

Comments

comments

About

Check Also

রাসুলুল্লার হিজরাত : প্রাসঙ্গিক ভাবনা

পৃথিবীতে তখন ঘোর অমানিশার রাজ। চারিদিকে বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্যের দৃঢ় ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে। যে ভিন্নতার জন্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *