আল্লামা ছাহেব কিবলার সামাজিক খেদমত

এম এ বাসিত আশরাফ

ফার্সী কবি বলেছেন:
তরীকত বজুয খেদমতে খালক্বে নেসত
বসুজ্জাদা তাসবীহ ওয়া দালকে নেসত।
ভাবানুবাদ : ‘তাসবীহ ও জায়নামাযে তরীকত সীমাবদ্ধ নয়
সৃষ্টির সেবাই হচ্ছে তরীকতের আসল পরিচয়।’
বাংলাদেশে তথা বিশ্বের প্রতিটি দেশে ইসলাম প্রচারের পাশাপাশি মানবতার খেদমত হয়েছে ওলী, আওলিয়া ও উলামা মাশায়েখের মাধ্যমে। এইসব হক্বপন্থী মানুষরাই হলেন প্রিয় নবী সাসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রকৃত উত্তরসূরি! যারা রাসুলে আরাবীর অনুপম আদর্শ ও সুন্দরতম আখলাক নিজেদের মধ্যে লালন করেন। মানব কল্যাণে একনিষ্ঠভাবে কাজ করে নিজেদের জীবন বিলিয়ে দেন। এসব ওলী আল্লাহদের আধ্যাত্মিক শক্তির বলেই অন্ধকার দূরীভূত হয়। মুরশিদে বরহক্ব আল্লামা ছাহেব কিবলা ফুলতলী ছিলেন তাদেরই সুযোগ্য উত্তরসূরি। তিনি গতানুগতিক কোন আলিম বা তথাকথিত গদিনশিন পীর ছিলেন না। তিনি আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য তসবিহ-তাহলিল, জিকির-আজকার মুরাকাবা মুশাহাদার পাশাপাশি খেদমতে খলক্বকে খুবই গুরুত্ব দিতেন। তাইতো ছাহেব কিবলাহর খেদমত শুধু খানেকা বা বাংলাদেশের গুটিকয়েক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলনা বরং দেশের গন্ডি পেরিয়ে ভারত উমহাদেশ সহ সুদূর ইউরোপ, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্য সহ পুরো বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। নিবন্ধের কলেবর বৃদ্ধির আশংকায় বিস্তারিত তথ্য বর্ণনা করা সম্ভব নয়, তাই সংক্ষেপে ছাহেব কিবলার যেসব মকবুল খেদমত বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত আছে তার যৎসামান্য উল্লেখ করার প্রয়াস করছি।
দারুল কিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাস্ট : ১৯৫০ সালে ছাহেব কিবলাহ নিজ বাড়িতে প্রথম সহীহ কোরআন শরীফ শিক্ষার দরস শুরু করেন! মহান এই খেদমতের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে স্বীয় মালিকাধীন ভূ-সম্পত্তি থেকে প্রায় ৩৩ একর জমি ট্রাস্টের নামে দান করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। এ প্রতিষ্ঠান থেকে লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী বিশুদ্ধ কিরাত শিক্ষা গ্রহণ করে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে দ্বীনের খিদমত করে যাচ্ছেন। উল্লেখ্য বর্তমানে (২০২০ সালে) বিশ্বের সর্ববৃহৎ পবিত্র কোরআন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র দারুল ক্বিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাস্টের অধিনে ২৫০০ এর অধিক শাখা বিশ্বব্যাপী পরিচালিত হচ্ছে এবং এর মাধ্যমে প্রতিবছর প্রায় ছয় লক্ষাধিক ছাত্র/ছাত্রী সহীহ শুদ্ধ কোরআন শিক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন।
লতিফীয়া এতীমখানা : ১৯৭২ সালে ছাহেব কিবলাহ ফুলতলী নিজ বাড়িতে মা বাবা হারা এতিমদের জন্য একটি এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে তাঁরই নামে এই প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয় ‘লতিফিয়া এতিমখানা’। এখানে হাজার হাজার এতিম সন্তানরা সঠিক অভিভাবকত্বের মাধ্যমে ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি আধুনিক শিক্ষা গ্রহণ করছে। বর্তমানে তিন হাজারের অধিক এতিম (ছেলে/মেয়ে) এখানে অবস্থান করছে।
বাদেদেওরাইল ফুলতলী কামিল মাদ্রাসা : ১৯২০ সালে এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ছাহেব কিবলার পৃষ্ঠপোষকতায় প্রাথমিক স্তরের এই মাদ্রাসাটি ক্রমান্বয়ে কামিল (এমএ) হদিস তাফসীর স্তরে উন্নীত হয়।
হযরত শাহজালাল দারুচ্ছুন্নাহ ইয়াকুবিয়া কামিল মাদ্রাসা : ১৯৮৩ সালে এই প্রতিষ্ঠানটি আল্লামা ছাহেব কিবলাহ ফুলতলী রাহিমাহুল্লাহ্ সিলেটের প্রাণকেন্দ্র সোবহানীঘাটে প্রতিষ্ঠিত করেন। খুব অল্প সময়ে এই প্রতিষ্ঠানটি কামিল (এমএ) হাদিস ও ফিকহ স্তরে উন্নীত হয়।
লতিফীয়া কমপ্লেক্স : ছাহেব কিবলাহ ফুলতলী রাহিমাহুল্লাহ্ তরুণ প্রজন্মের ছেলে মেয়েদের সঠিক শিক্ষা দানের লক্ষ্যে নিজ বাড়িতে ‘লতিফিয়া কমপ্লেক্স’ নামে একটি যুগোপযোগী প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন, এই কমপ্লেক্সের অধীনে রয়েছে তিনটি শিক্ষালয়।
১.আল কোরআন মেমোরাইজিং সেন্টার। ২. ফুলতলী ইসলামীক কিন্ডার গার্টেন। ৩. ইসলামীক প্রি-ক্যাডেট একাডেমী। এই প্রতিষ্ঠানটি সম্পুর্ণ আবাসিক পদ্ধতিতে অভিজ্ঞ শিক্ষকমন্ডলী দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছে।
বাংলাদেশ আনজুমানে মাদারিছে আরাবিয়া : মাদ্রাসা শিক্ষকদের ঐক্যের মাধ্যমে শিক্ষার মান উন্নয়ন ও শিক্ষকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আল্লামা ছাহেব কিবলাহ ফুলতলী রাহিমাহুল্লাহ্ ১৯৬৪ সালে এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন।
বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ : ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্র জীবনে ইসলামী তাহযীব তামাদ্দুন প্রতিষ্ঠার নিমিত্তে ১৯৭৯ সালে ছাহেব কিবলাহ গণমানুষের এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন।
লতিফীয়া ক্বারী সোসাইটি : সহীহ শুদ্ধ কোরআন শরীফ শিক্ষাদানের অনন্য প্রতিষ্ঠান দারুল ক্বিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাস্টের সকল কার্যক্রম সুষ্টভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে গঠিত হয়েছিল ‘লতিফিয়া ক্বারী সোসাইটি’ নামে ক্বারী সাহেবানদের বৃহৎ সংগঠন। ছাহেব ক্বিবলাহ ফুলতলী রাহিমাহুল্লাহ্ এ সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন।
বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামীয়া : ছাত্র সমাজকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের সঠিক আক্বিদা বিশ্বাস, সামাজিক অবনতি ও অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালনের নিমিত্তে আল্লামা ছাহেব কিবলাহ ফুলতলী রাহিমাহুল্লাহ্ ১৯৮০ সনে প্রতিষ্ঠা করেন ‘বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়া’।
ইয়াকুবিয়া হিফজুল কোরআন বোর্ড : হাফিজিয়া মাদ্রাসাগুলোকে সঠিক অবকাঠামোর মাধ্যমে পরিচালনার লক্ষ্যে ২০০৬ সালে ছাহেব কিবলাহ ফুলতলী রাহিমাহুল্লাহ’র নির্দেশে স্বীয় পীর ও মুর্শিদ বদরে বদরপূরী রাহিমাহুল্লাহ্’র নামানুসারে এই বোর্ডের নামকরণ করা হয় ‘ইয়াকুবিয়া হিফজুল কোরআন বোর্ড’। ইতিমধ্যে ৩০৪টির অধিক প্রতিষ্ঠান এই বোর্ডের অন্তর্ভূক্ত হয়েছে।
মুসলিম হ্যান্ডস বাংলাদেশ : আর্ত মানবতার সেবায় নিবেদিত এই প্রতিষ্ঠানটির তত্ত্বাবধানে গৃহহীনদের গৃহ নির্মাণ, অন্ধ অনাথ এতিমদের বৃত্তি প্রদান, বৃক্ষরোপন, নলকূপ স্থাপন, বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবাসহ নানাবিধ কার্যাবলী পরিচালিত হয়ে আসছে। আন্তর্জাতিকভাবে মানব সেবার কাজে নিয়োজিত বেসরকারী সংস্থা এবং বিশ্বের অর্ধ শতাধিক দেশে কর্মরত ইউ,কে ভিত্তিক চ্যারিটি সংগঠন মুসলিম হ্যান্ডস বাংলাদেশের পৃষ্টপোষক ছিলেন আল্লামা ছাহেব কিবলাহ ফুলতলী রাহিমাহুল্লাহ্।
মাসিক পরওয়ানা ও পরওয়ানা পাবলিকেশনস্ প্রতিষ্ঠা : ছাহেব কিবলাহ ফুলতলী রাহিমাহুল্লাহ্ ১৯৯২ইং সালে ঢাকা থেকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের মূখপত্র মাসিক পরওয়ানা প্রকাশ করেন। তিনি আজীবন এ পত্রিকাটির প্রধান পৃষ্টপোষক ছিলেন। পত্রিকার পাশাপাশি ‘পরওয়ানা পাবলিকেশনস্’ নামে একটি অত্যাধুনিক পাবলিকেশনসও প্রতিষ্ঠা করেন। এই প্রকাশনা থেকে ইতিমধ্যেই বহু সংখ্যক ইসলামীক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।
স্কুল অব এক্সিলেন্সি : সময়ে প্রয়োজনের কথা চিন্তা করে সিলেট শহরে ‘স্কুল অব এক্সিলেন্সি’ নামে একটি আন্তর্জাতিক মানের ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই প্রতিষ্ঠানটির প্রধান পৃষ্টপোষক ছিলেন আল্লামা ছাহেব কিবলাহ ফুলতলী রাহিমাহুল্লাহ্।
লতিফিয়া দারুল মুতালাআহ গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা : কোরআন শরীফ, হাদীস শরীফসহ সব ধরনের ইসলামিক বিষয়ে বিশেষ করে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আক্বীদা নির্ভর বিষয়াবলী নিয়ে উচ্চতর জ্ঞানচর্চা ও গবেষণার লক্ষ্যে ছাহেব ক্বিবলাহ শত শত বছরের পুরনো কিতাবাদি সংগ্রহের মাধ্যমে স্থাপন করেছেন একটি সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার, বর্তমানে এই গ্রন্থাগারের নামকরণ করা হয় ‘লতিফিয়া দারুল মুতালাআহ’। ‘লতিফিয়া দারুল মুতালাআহ’ তে প্রায় তিন হাজারের মতো আরবী, ফারসী, উর্দূ ও বাংলা, ইংরেজী ভাষার দূর্লভ-দূ¯প্রাপ্য কিতাবাদীর সংরক্ষণ করা হয়েছে।
দারুল হাদিস লতিফীয়া লন্ডন : হযরত আল্লামা ছাহেব কিবলা রাহিমাহুল্লাহ ১৯৭৮ সালে সর্বপ্রথম (যুক্তরাজ্যে) ইংল্যান্ডের রাজধানী পূর্ব লন্ডনের নিউ রোডে ভাড়া করা ঘরে ‘মাদ্রাসায়ে দারুল কিরাত মাজিদিয়া’ নামে একটি মাদ্রাসা শুরু করেন। পরবর্তীতে ১৯৮১ সালে ক্যানন স্ট্রিট রোড, লন্ডন ঊ-১ এর ফ্ল্যাট কিনে মাদ্রাসা স্থানান্তর করা হয়। পরবর্তীতে বৃহত্তর পরিসরে কামিল (টাইটেল) ক্লাস পর্যন্ত শিক্ষাদানের লক্ষ্যে একটি বড় ভবন ক্রয় করে নিজে ২০০৫ সালের ২৭ নভেম্বর ছাহেব কিবলাহ 1 Cornwall Ave, Bethnal Green, London E2 oHW এর বর্তমান ভবনটি উদ্বোধনও করেন। উচ্চতর ইসলামী শিক্ষার সুযোগ তথা কামিল জামাত পর্যন্ত মাদ্রাসা উন্নীত হওয়ার কারণে মাদ্রাসার নামকরণ করা হয় ‘দারুল হাদীস লতিফিয়া’।
দারুল হাদিস লতিফীয়া নর্থ ওয়েস্ট ওল্ডহ্যাম : ছাহেব কিবলা ফুলতলী রাহিমাহুল্লাহ জীবনের শেষ লগ্নে (২০০৭ সালে) যুক্তরাজ্য সফরকালে নর্থ ওয়েস্টে ১১৮-২০ মেইন রোড ওল্ডহ্যামে দুটি ছোট বাসা ক্রয় করে শুরু করেন ইভিনিং মাদ্রাসা। পরবর্তীতে ২০১১ সালে (1 Plum Street, Oldham, OL8 1TJ)) প্লাম স্ট্রিট ওল্ডহ্যামে খরিদ করা হয় একটি বড় বিল্ডিং এবং সেখানেই ২০১২ সাল থেকে ফুলটাইম সেকেন্ডারি স্কুল এবং কামিল জামাত পর্যন্ত মাদ্রাসা চালু করা হয়।
আনজুমানে আল ইসলাহ ইউকে এন্ড আয়ারল্যান্ড : যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত মুসলিম সমাজকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকীদা, আদর্শের উপর ঠিকিয়ে রাখা ও দ্বীনী খেদমত আঞ্জাম দেওয়ার লক্ষ্যে ১৯৭৮ সালে আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ রাহিমাহুল্লাহ্ ব্রিটেন সফরকালে গঠন করেন ‘আনজুমানে আল ইসলাহ ইউকে এন্ড আয়ারল্যান্ড’। বর্তমানে ইউকের প্রত্যেকটি বড় শহরে ‘আনজুমানে আল ইসলাহ’ এর শাখা রয়েছে।
লতিফিয়া উলামা সোসাইটি ইউকে : ১৯৮৭ সালের নভেম্বর মাসে হযরত আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা রাহিমাহুল্লাহ যুক্তরাজ্যে বসবাসরত আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের উলামায়ে কিরামকে একই প্লাটফর্মে ঐক্যবদ্ধ করে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে দ্বীনের সঠিক খেদমত আঞ্জাম দেওয়ার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা করেন ‘আল ইসলাহ উলামা সোসাইটি ইউকে’। ছহেব কিবলা রাহিমাহুল্লাহ’র ইন্তিকালের পর এ সংগঠনের নামকরণ করা হয় ‘লতিফিয়া উলামা সোসাইটি ইউকে’।


লতিফিয়া কারী সোসাইটি ইউকে : আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা এর নিকট ইলমে কিরাতের সনদগ্রহণকারী যুক্তরাজ্যে প্রবাসী ক্বারী সাহেবানদের প্রত্যেককে গ্রীষ্মকালীন ছুটির সময় সহীহ শুদ্ধ কোরআন তেলাওয়াত শিক্ষার জন্য আ’ম ইজাজত প্রদান করেন। পরবর্তিতে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা এবং শাখা প্রশাখা বেড়ে যাওয়ায় সনদপ্রাপ্ত কুররাগণকে ঐক্যবদ্ধ রেখে ১৯৯৩ সালের অক্টোবর মাসে প্রতিষ্ঠা করেন ‘লতিফিয়া কারী সোসাইটি ইউকে’। বর্তমানে (২০২০) সরাসরি মুল কেন্দ্রের (ফুলতলী ছাহেব বাড়ির) অনুমোদনে ‘দারুল কিরাত মজিদিয়া ফুলতলি ট্রাস্ট ইউকের অধীনে ইউকের বিভিন্ন শহরে প্রায় ৬৭ টি শাখা কেন্দ্রের মাধ্যমে হাজার হাজার ছাত্র/ছাত্রী (ছাদিছ জামাত পর্যন্ত) শিক্ষা গ্রহণ করছে।
আল ইসলাহ ইয়ুথ ফোরাম : ব্রিটেনের তরুণ ও যুব সমাজকে সঠিক ইসলামী চিন্তা ও চেতনায় উজ্জীবিত করে সংঘবদ্ধভাবে কাজ করার লক্ষ্যে ১৯৯৯ সালের অক্টোবর মাসে হযরত আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ রাহিমাহুল্লাহ গঠন করেন ‘আল ইসলাহ ইয়ুথ ফোরাম ইউকে’। ইয়ুথ ফোরাম গঠনের ঘোষণা দেন ওল্ডহ্যামের কুইন এলিজাবেথ হলে এবং পরে ইংল্যান্ডের রাজধানী লন্ডনে কমিটি অনুমোদন করেন।
আল মাজিদিয়া ইভিনিং মাদ্রাসা : আল্লামা ছাহেব কিবলা ফুলতলি রাহিমাহুল্লাহ যুক্তরাজ্যের জমিনে ইসলামী শিক্ষার বহুমুখী খেদমত আঞ্জাম দিতে গঠন করেন ‘আল মাজিদিয়া ট্রাস্ট ইউকে’। বিভিন্ন মক্তব, মসজিদ ও মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত ছোট্ট শিশুদের বিশুদ্ধ কোরআন তিলাওয়াত শিক্ষাদানের পাশাপাশি দ্বীনী প্রাথমিক শিক্ষায় পারদর্শী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে এ ট্রাস্টের অধীনে ‘আল মাজিদিয়া ইভিনিং মাদ্রাসা’ মাদরাসা’ পরিচালিত হয়ে আসছে।
লতিফিয়া গার্লস (বালিকা) স্কুল : ইসলামী শিক্ষা শুধু পুরুষদের জন্যই নয় বরং নারীদের জন্যও অপরিহার্য! এই চিন্তা চেতনা ধারন করেই প্রতিষ্ঠিত হয় ‘লতিফিয়া গার্লস স্কুল’। ২০০৭ সালের অক্টোবর মাসে যুক্তরাজ্য সফরকালে ছাহেব কিবলাহ রাহিমাহুল্লাহ্ ক্যানন স্ট্রিট রোডে মাদ্রাসা-ই দারুল কিরাত মজিদিয়ার পুরাতন বিল্ডিংয়ে এই প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন দেন।
যুক্তরাষ্ট্র (আমেরিকা) : বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান শহরে ২০০১ সালে ছাহেব কিবলাহ ফুলতলী রাহিমাহুল্লাহ’র নির্দেশে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘আল-ইসলাহ ইসলামিক সেন্টার’।
শুধু যুক্তরাজ্যেই নয় বরং ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আনজুমানে আল ইসলাহ’র মাধ্যমে গড়ে উঠছে অসংখ্য মসজিদ, মাদ্রাসা ও দাতব্য (পযধৎরঃু) প্রতিষ্ঠান। ছাহেব কিবলাহ ফুলতলী রাহিমাহুল্লাহ আজীবন সামাজিক ও দ্বীনি খেদমত হিসেবে অসংখ্য মসজিদ, মাদ্রাসা নির্মাণসহ পৃষ্ঠপোষকতা করে গেছেন। সেই মকবুল খেদমতগুলো আজ সামাজিক ও ধর্মীয় ক্ষেত্রে অতুলনীয় ভূমিকা রাখছে।
এসকল সামাজিক খেদমত ছাড়াও শামসুল উলামা আল্লামা ছাহেব কিবলাহ ফুলতলী রাহিমাহুল্লাহ্ জীবনে অসংখ্য খেদমত করে গেছেন। তিনি অসহায় মানুষকে উদারহস্তে সাহায্য করতেন, বিপদ আপদে তাদের পাশে দাঁড়াতেন। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের মুখে হাসি ফুটানোর চেষ্টা করতেন।

Comments

comments

About

Check Also

রাসুলুল্লার হিজরাত : প্রাসঙ্গিক ভাবনা

পৃথিবীতে তখন ঘোর অমানিশার রাজ। চারিদিকে বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্যের দৃঢ় ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে। যে ভিন্নতার জন্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *