বৃষ্টি ও অন্তুর গল্প

হঠাৎ করেই বৃষ্টির বেগ বেড়ে যায়। আকাশভাঙা বৃষ্টিরা অন্তুদের টিনের চালে রাজ্যের গল্প নিয়ে আসে। অন্তু বৃষ্টিদের সাথে গল্প জুড়ে দেয়।
আব্বু কেমন আছে?
কোথায় আছে?
বৃষ্টিরা ওদের ভাষায় জবাব দেয়। অন্তু সে কথার অর্থ বোঝেনা। আব্বু কোথায় আছে? কেমন আছে??-মাকে অনেক বার জিজ্ঞেস করেছে ও। সেই যে গেল বর্ষায় বাবা ওকে স্কুলে নামিয়ে দিয়ে অফিসে গেল, আর ফিরলনা। মা অন্তুর কথার জবাব দেননা। আশিকের বোন বলে, তোমার আব্বু তো মরে গেছে। মরে কোথায় গেছে? কবে ফিরবে?-আশিকের বোন সে কথার জবাব দেয়না। কেমন মায়া মায়া করে অন্তুর দিকে তাকিয়ে থাকে শুধু।

মা দৌড়ে এসে অন্তুর ঘরের জানালা বন্ধ করে দেয়। ততক্ষণে জানালার কোনঘেঁষা ফুলদানির কৃত্রিম ফুল ভিজে চুপসে গেছে। ফুলদানির ভেতরেও পানি জমে গেছে অনেকটা। মা ফুলদানিটা হাতে করে বেরিয়ে যাওয়ার সময় অন্তু মার আঁচল টেনে ধরে। সেই পুরনো প্রশ্ন-আব্বু কোথায় গেছে? কবে আসবে?? মা অন্তুর মাথায় হাত বুলিয়ে দেন। তোমার আব্বু আল্লাহর কাছে চলে গেছে বাবু। একদিন আমরা সবাই মরে যাবো। মা অন্তুকে বোঝায়। ও এখন বড় হচ্ছে। সব বোঝা দরকার ওর।
মরলে কারও কিচ্ছুটি করার ক্ষমতা থাকে না?-অন্তুর আহত কন্ঠস্বর।
মা হাসেন। তা না থাক। মা আরও অনেক কিছু বোঝায় অন্তুকে। বৃষ্টির শব্দের সাথে মার স্বর মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। অন্তু মার কথা খানিকটা বোঝে, বাকিটা ওর কাছে দূর্বোধ্য ঠেকে। তবে একটা জিনিস ও ভাল করেই বুঝেছে। সদকায়ে জারিয়া-হ্যা বাবা মার নেক সন্তান হবেও। নিজে নিজেই প্রতিজ্ঞা করে অন্তু।

Comments

comments

About

Check Also

বিদায়বেলা

জামুরাইল হাই স্কুলের বাংলা শিক্ষক ইমরান হোসেন। প্রতিদিন সকাল ৯ টায় স্কুলে আসেন। যথারীতি তিনি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *