জীবন ও কর্ম

স্মৃতির পাতায় আল মাহমুদ

By mumin

April 10, 2019

আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি আল মাহমুদ। ২০০৫ সালে আমার হামদ, নাত ও ইসলামী সঙ্গীতগ্রন্থ ‘আকাশ হাসে চাঁদও হাসে’ প্রকাশ করার পূর্বে কবিকে দেখিয়ে তাঁর অভিমত নেয়ার প্রবল ইচ্ছা জাগ্রত হল। আমি তখন বইয়ের পান্ডুলিপি নিয়ে ঢাকায়। আমার সাহিত্যগুরু মাসিক কুঁডি মুকুলের সাবেক সহকারী সম্পাদক কবি আবু জাফর ছালেহীকে সাথে নিয়ে রওয়ানা হলাম ধানমন্ডির কবিভবনের দিকে। ধানমন্ডির একটি ফ্ল্যাটে খুঁজে আবিস্কার করলাম কবির বাসা। কবি তখন অনেকটাই সুস্থ সবল। তবে নিজ হাতে লিখতে কষ্ট হওয়ায় একজন সহযোগী রেখেছেন বাসায়। আমি তখন ছারছীনা আলীয়া মাদরাসার ছাত্র। গুরু আমাকে কবির সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন। ছারছীনা ও আধ্যাত্মিকতার প্রতি কবির গভীর মমত্ববোধ ও সীমাহীন ভালোবাসার গল্প কবি মুহিব্বুল্লাহ জামীর কাছ থেকে আমি আগেই শুনেছিলাম। ছারছীনার ছাত্র জেনে আমাদের ভালোবাসা দিয়ে বুকে টানলেন কবি। আমার হামদ, নাতের বই প্রকাশ হবে জেনে ও পাণ্ডুলিপি দেখে একটি হামদ ও নাত শুনাতে বললেন। আমি সুর করে হামদ ও নাত গাইলাম। কবি তাঁর অনুভূতিতে লিখলেন-‘আধ্যাত্মিকতা ছাড়া হামদ ও নাত রচনা করা সম্ভব নয়..।’ কবির উৎসাহমূলক এ বাণী আমার হামদ, নাত রচনায় প্রেরণা ও চেতনার সেতুবন্ধন তৈরি করে। এ সেতু বেয়ে আমি হামদ ও নাতের সমুদ্রে খানিকটা সিনান করতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু কবির অমূল্য বাণীর আধ্যাত্মিকতা আমি আজও বুঝে ওঠতে পারিনি। পরবর্তিতে কবির আধ্যাত্মিকতার প্রতি নাড়ির টান ও হক্কানী পীর আউলিয়ার প্রতি গভীর ভালোবাসার আরো তাজা খবর পাই- কবি উপমহাদেশের প্রখ্যাত ওলিয়ে কামিল, মুরশিদে বরহক হযরত আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলার জকিগঞ্জস্থ বাড়িতে আগমন করলেন এবং হজরত ফুলতলী ছাহেব কিবলার আধ্যাত্মিক সান্নিধ্যে নিজেকে ধন্য করলেন। অতঃপর ফুলতলী ছাহেব কিবলার নুরানী চেহারা নিয়ে কবি রচনা করেন ‘চোখের পলক পড়ে না’ কবিতাটি সহ ছাহেব কিবলাকে নিবেদিত আরও দুটি কবিতা। জীবনের একটি বিরাট অংশ অতিক্রম করে ফেললাম। কিন্তু আমি আমিই রয়ে গেলাম! পাপের দরিয়ায় হাবুডুবু খেয়ে কবি আল মাহমুদকে আজ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। কবির পরকালীন জীবনে জান্নাতুল ফিরদাউসের সুউচ্চ আসন কামনা করছি।

Comments

comments