অন্যান্য

গরগনদের রাজত্ব

By mumin

June 15, 2018

প্রাগৈতিহাসিক যুগের বিশাল দেহের প্রাণী ডাইনোসর। কিন্তু তার চেয়েও বড় আরেক প্রাণীর নাম গরগন। এদের মাথা ছিল সিংহের মতো আর শরীর ছিল কুমির আকৃতির। এরা লম্বায় ছিল দশ ফুট। এদের থাবার নখ ছিল চার ইঞ্চি। সেই সময় গরগনরাই ছিল পৃথিবীর হিংস্র প্রাণী। ২৫ কোটি বছর আগে এরা দোর্দণ্ড প্রতাপের সঙ্গে পৃথিবীতে বিচরণ করছে। এদের পরই শুরু হয়েছে ডাইনোসর যুগ। বিজ্ঞানিরা গরগনদের খোরাপসাইড প্রজাতির প্রাণীদের দলভুক্ত করেছেন এসব প্রাণীদের বৈশিষ্ট্য ছিল অর্ধেক স্তন্যপায়ী এবং অর্ধেক সরীসৃপের মতো। গরগনদের মতো এই গোত্রের আরো অনেক প্রজাতি পৃথিবীতে ছিল। যেমন, ডাইনোসর এদের আবির্ভাব ঘটেছিল ৫ কোটি বছর পর। গরগন ছিল সবচেয়ে লম্বা ভয়ঙ্কর এক পৌরাণিক প্রাণী যার দিকে তাকালেই যে কেউ পাথরে পরিণত হয়ে যেত। পৌরনিক প্রাণীর নামে হলেও বিজ্ঞানীদের মতে বাস্তবে গরগনের বিষয়টি পৌরাণিক কাহিনী নয়। তারা চিন, রাশিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় গরগনের কঙ্কাল খুঁজে পেয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার মরুভূমিতে এরকম একটি কঙ্কাল খুড়ে বের করার সময় বিজ্ঞানীরা ধারণা করেছিলেন এবার হয়তো গরগনের পূর্নাঙ্গ কঙ্কাল পাওয়া যাবে। কিন্তু যা পাওয়া যায় তা ছিল চেপ্টা নাকের এক সরীসৃপের কঙ্কাল। এদের লিসট্রোসারাস বলা হয়। দক্ষিণ আফ্রিকার গরগন কেপটাউন জাদুঘরের বিজ্ঞানী ও গরগন বিশেষজ্ঞ ড. রজার স্মিতের মতে, গরগনদের স্বভাব ছিল বড় বিড়ালের মতো। তারা গুটি সুটি মেরে ওৎপেতে শিকারের জন্য অপেক্ষা করত। শিকার কাছে এলে ঝাপিয়ে পড়ে থাবা দিয়ে আকড়ে ধরত। কুকুরের মতো দাঁত দিয়ে কামড়ে কামড়ে মেরে ফেলত শিকারটাকে। ২৫ কোটি বছর আগে পৃথিবীর শতকরা ৯০ ভাগ প্রাণীর বিলূপ্তির যে মড়ক হয়েছিল তার শুরুতেই গরগণদের বিলুপ্তি ঘটে। যদি বিজ্ঞানীরা গরগণের মৃত্যুর কারণ চিহ্নিত করতে পারেন তাহলে পৃথিবী জুড়ে কেন এমন মড়ক লেগে ছিল তা জানা যাবে। আগ্নেয়গিরির অগ্লুৎপাত খরা এবং ভুমিকম্প এ তিনটি কারণকে বিজ্ঞানীরা গরগনদের বিলুপ্তির কারণ হিসাবে সন্দেহ করেছেন। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, গরগনরা বংশ পরস্পরায় ঠিকে থেকেছে এবং মানুষসহ অন্যান্য স্তন্যপায়ীদের উত্থানে সহায়তা করেছে।

Comments

comments