ইসলাম

ইসলামে পর্দার গুরুত্ব ও আধুনিকতা

By mumin

June 04, 2019

পর্দা মূলত ফার্সী শব্দ, তবে উর্দু এবং বাংলা ভাষায় শব্দটির ব্যবহার ব্যাপক। পর্দার আরবি হলো হিজাব, পবিত্র কোরআনুল ক্বারিমে একাধিক আয়াতে কারিমায় হিজাব সম্পর্কে খুবই গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। হিজাব এর আভিধানিক অর্থ হলো প্রতিহত করা, ফিরিয়ে আনা, আড়াল করা, আবৃত্ত করা, আচ্ছাদিত করা ইত্যাদি। ইসলামী শরীআতে পর্দা বা হিজাব সেই বিধিব্যবস্থাকে বলা হয় যার মাধ্যমে নিজ ঘর থেকে শুরু করে রাস্তাঘাট, ব্যবসা-বাণিজ্য, অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সহ সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের মধ্যে অপ্রয়োজনীয় নিয়ন্ত্রণহীন কথাবার্তা, দর্শন, দৃষ্টি বিনিময়, সৌন্দর্য প্রদর্শন ও লাগামহীন আচরণ থেকে বিরত থাকা যায়। পর্দা ইসলামের একটি মহা গুরুত্বপূর্ণ আধ্যাত্মিক ও বৈজ্ঞানিক অবদান, যা শুধুমাত্র ধর্মীয় অনুভূতি নিয়ে নয়, বরং বিশ্ব মানবের জাতীয় সত্ত্বার রক্ষকও বটে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কোরআন শরীফে পর্দা করার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন: মুমিনদেরকে (পুরুষ) বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাজত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা রয়েছে। নিশ্চয় তারা যা করে, আল্লাহ তা অবহিত আছেন। আর মুমিনা নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাজত করে। তারা যেন যা সাধারণত প্রকাশমান-তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের ওড়না বক্ষদেশে দিয়ে রাখে (সুরা নুর:৩০:৩১)। হাদিস শরীফে এসেছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন “স্ত্রীজাতির পর্দায় গুপ্ত থাকার সত্তা। কিন্তু যখনই তারা পর্দার বাহিরে আসে, তখন শয়তান তাদের দিকে ঝুঁকে।” (তিরমিযী) অবরোধ প্রথা বা নারীকে চার দেয়ালের ভিতরে গৃহবন্দি করে রাখাকে আমরা অনেকেই পর্দা বা হিজাব মনে করি। প্রকৃতপক্ষে পর্দা প্রথা নারীকে শৃঙ্খলিত করার পরিবর্তে তাকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছে, সমাজে একটি ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থার প্রবর্তন করেছে। ইসলাম শান্তি ও সার্বজনীন ধর্ম, ইসলামে নারীর হিজাব বা পর্দার বিধান এবং পুরুষের দৃষ্টি অবনত রাখার অন্তর্নিহিত তাৎপর্য হল- সমাজ জীবনে কোনো ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের মাঝে নৈতিক মূল্যবোধের স্থলন যেন না ঘটে। হিজাব বা পর্দার বিধান নিঃসন্দেহে নারীর নিরাপত্তা, মর্যাদা ও সম্মানের প্রতীক। এটি নারীর ব্যক্তি জীবনে, সমাজ ও রাষ্ট্রে স্বমহিমায় অবস্থান ও অগ্রগতির জন্য উপযুক্ত বিধান। নারী-পুরুষের মাঝে রয়েছে সৃজনিক ও প্রাকৃতিক ভিন্নতা। তা সত্ত্বেও প্রত্যেকে স্ব-স্ব অবস্থান থেকে অনন্য। একজন নারী তার কর্মগুণে হতে পারেন পুরুষের চেয়েও অনেক বেশি মর্যাদাবান। ইসলাম নারীকে অশিক্ষিত, অবরোধবাসিনী হতে বলেনি। হিজাব বা পর্দার বিধান পালন করে নারী নিরাপদে এগিয়ে যেতে পারে জ্ঞান-বিজ্ঞানে, শিক্ষাঙ্গনে, শিল্প ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনসহ সমাজ ও রাষ্ট্রের সর্বস্তরে। তবে প্রাকৃতিকভাবে নারীর মাঝে রূপ-সৌন্দর্যের যে বিশেষত্ব রয়েছে, তা সে প্রদর্শন করবে না। এতে সে বখাটের কুদৃষ্টির রোষে পতিত হওয়া থেকে নিরাপদ থাকতে পারে। পর্দার আধ্যাত্মিক ও বৈজ্ঞানিক উপকারিতা: ইসলামে মুসলমান নর ও নারীকে পর্দার যে বিধান দিয়েছে, সে সম্পর্কে গভীরভাবে চিন্তা করলে আমরা এর বেশ কিছু উপকারিতা উপলব্ধি করতে পারি:

Comments

comments