ধারাবাহিক উপন্যাস

ধূম্রদের অভিযান

By mumin

February 10, 2017

(পূর্ব প্রকাশের পর) ৬ষ্ঠ পর্ব ফ্লাইটের টিকেট পেয়েই দেরী না করে যুক্তরাষ্ট্র চলে আসেন অধ্যাপক আবু সালেহ। রাগে-ক্ষোভে ভেতরে ভেতরে ফুঁসছেন। তাঁর মন চাচ্ছে ড. আশরাফকে পিষে ফেলতে। তবে ব্যাপারটি যে এতো সহজ নয় তা ভালো করেই তিনি জানেন। একটা উপযুক্ত প্রতিশোধ নিতে এনএসজি বা নিউক্লিয়ার সাপ্লায়ার্স গ্র“পের অন্যতম সদস্য জন মেড়ীর সরণাপন্ন হলেন তিনি। এনএসজি হলো-পশ্চিমের যেসব দেশের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র ও টেকনোলজি আছে এবং সেটা অন্য কোনো রাষ্ট্রকে কেবল শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের জন্য দিতে পারে এবং সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে সেই ৪৮ সদস্যের গ্র“প। পারমাণবিক বিজ্ঞানী জন মেড়ী এক ভয়ঙ্কর ব্যক্তি। পশ্চিমা বিশ্বের যখন ধারণা হলো, পাকিস্তানের পারমাণবিক বিজ্ঞানী নাদের খান গোপনে ব্যক্তিগতভাবে ইরান ও উত্তর কোরিয়ার কাছে পারমাণবিক টেকনোলজি ও মালামাল সরবরাহ করেছেন তখন তাঁরা ভিন্নরূপ ধারণ করল। চীনকে চাপে রাখতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যতীত ভারতকে সব ধরণের সামরিক সহযোগিতা দিলো যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ভারত গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র সংগ্রহ করল জন মেড়ীর কাছ থেকে। এছাড়া বিজ্ঞানী মেড়ীর সহযোগিতায় ভারত তৈরী করে পিলে চমকানো সব অস্ত্র। চীন ও পাকিস্তানকে ঠেকাতে ভারতীয় নৌসেনারা প্রশিক্ষণ নেয় রাশিয়ায়। প্রশিক্ষণ পেয়ে ভারত তৈরি করে আরও অত্যাধুনিক পরমাণু শক্তিচালিত অ্যাটাক সাবমেরিন। সমুদ্রের গভীরে লুকিয়ে বহু দূরের ভূখণ্ডে পরমাণু হামলা চালাতে সক্ষম এমন অস্ত্র ঘণ্টায় প্রায় ১২০ কিলোমিটার গতিতে ছুটে। নিউক্লিয়ার অ্যাটাক সাবমেরিন বলে খ্যাত এই ডুবোজাহাজ টর্পেডো এবং ক্রুজ ক্ষেপনাস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালাতে পারে। সমুদ্রের গভীরে এটা চলাচলের সময় অত্যন্ত কম শব্দ নির্গত করে। ফলে শত্র“পক্ষ এর উপস্থিতি টেরই পায় না। রাশিয়ার সাথে ভারতের এই প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র চুক্তির কথা যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন জানে না। তাঁরা শুধু জানে-ভারতের কাছে যুক্তরাষ্ট্র কিছু অস্ত্র বিক্রি করেছে মাত্র। অধ্যাপক আবু সালেহের মাধ্যমে পাকিস্তান ও ভারতের ‘কলকলা পার্টি’ নামক সন্ত্রাসী গ্র“পের সাথে জন মেড়ীর সুসম্পর্ক। এই গ্র“পকে তিনি অত্যাধুনিক টেকনোলজি ও অস্ত্র চালনা প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। দ্বিমুখী নীতির অধিকারী বিজ্ঞান মেড়ী বিশ্বের সন্ত্রাসী গ্র“পগুলো ঠেকাতে, শত্র“দেশের আক্রমণ থেকে আত্মরক্ষার নানাবিধ অস্ত্র আবিস্কার এবং কৌশল বের করে সামরিক প্রশাসনকে দিয়ে থাকেন। অপর দিকে প্রতিপক্ষ দেশ ও বিভিন্ন সন্ত্রাসী গ্র“পের সাথে তাঁর রয়েছে দহরম মহরম সম্পর্ক, গোপন যোগাযোগ। জন মেড়ীর এহেন কার্যকলাপ বিশ্বকে সবসময়ই রেখেছে একটা ঝুঁকি উদ্বেগের মধ্যে। মাঝে মাঝে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সুরগোল উঠে। বিশ্বযুদ্ধের কথা উঠলেই রাশিয়া নড়ে-চড়ে বসে তাদের ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্রের মহড়া চালায়। রাশিয়া দাবি করে যে, তাঁর মজুদে এমন ভয়ঙ্কর অস্ত্র রয়েছে যার সামান্য অংশও মহড়ায় আসে না। বিশ্বের যেকোনো দেশের তুলনায় এখন সবচেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদ আছে রাশিয়ার। রাসায়নিক বোমা এমএস-২১, যার ডাক নাম ‘দ্য স্যাটান ভি’। এ ক্ষেপনাস্ত্র ছোড়া হলে যুক্তরাষ্ট্রের মতো মোড়ল ও শক্তিধর রাষ্ট্রের পূর্ব উপকূল মুহূর্তে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে। রাশিয়ার কাছে এখন ভয়াবহ অস্ত্র আছে অন্তত ৮৭টি। পুরো যুক্তরাষ্ট্র ধ্বংসস্তুপে পরিণত করতে ২০টি ক্ষেপনাস্ত্রই যথেষ্ট বলে খোদ যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক প্রশাসনের বদ্ধমূল ধারণা। রাশিয়ার তর্জন-গর্জণ হলো এরূপ-দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে যে পারমাণবিক বোমা ফেলা হয়েছিল তা ‘দ্য স্যাটান ভি’-এর তুলনায় খেলনার অস্ত্র মাত্র। এ পারমাণবিক বোমা ছোড়া হলে যুক্তরাষ্ট্রের মতো বৃহৎ ও শক্তিশালী দেশও পৃথিবীর মানচিত্র থেকে কয়েক হাজার বছরের জন্য নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। উক্ত বোমার একেকটি ৪৫ হাজার কিলোটন পারমাণবিক সরঞ্জাম বহন করতে সক্ষম এর তেজস্ক্রিয়তা ১২০০ মাইলেরও বেশি ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ অস্ত্র ব্যবহারের সময় কোনো ধরণের রাডার যন্ত্র দ্বারা তা সনাক্ত করাও সম্ভবপর হবে না। এছাড়াও রাশিয়ার রয়েছে ‘এস থার্মো নিউক্লিয়ার’ অস্ত্র। ফলে হিরোশিয়া ও নাগাসাকিতে যে বোমা ছোড়া হয়েছিল তাঁর চেয়ে ‘দ্য স্যাটান ভি’ অস্ত্র কয়েক লাখ গুণ শক্তিশালী।

নাগাসাকি শহরে বোমা ফেলা হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ১৯৪৫ সালে। ৬ আগষ্ট সকালে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী জাপানের হিরোশিমা শহরের উপর ‘লিটল বয়’ নামক নিউক্লিয়া বোমা ফেলে এবং এর তিনদিন পর নাগাসাকি শহরের উপর ‘ফ্যাটম্যান’ নামক আরেকটি কিউক্লীয়া বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে হিরোশিমাতে প্রায় এক লাখ চল্লিশ হাজার লোক এবং নাগাসাকিতে প্রায় চুয়াত্তর হাজার লোক প্রাণ হারান। পরবর্তীতে উক্ত দুই শহরে ছোড়া বোমার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় সৃষ্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান আরও তিন লাখ বাহাত্তর হাজার জন বেসামরিক মানুষ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বয়স এখন একশত সত্তর বছর। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আলোচনা উঠলেই সমস্ত বিশ্বের মানুষরা প্রতিক্রিয়া দেখাতে থাকে। কেননা হিরোশিমা ও নাগাসাকির করুণ ইতিহাস যেমন আজও জ্যান্ত আছে তেমনি যুদ্ধের মর্মান্তিক কুফল আজও মানবজাতিকে ভোগান্তি দিচ্ছে। ড. আশরাফ সেই ভয়াবহ যুদ্ধের ভিডিও ফুটেজ ‘স্ক্যানার টু স্ক্যানার মেইল’ যন্ত্র দিয়ে মাঝে মাঝে দেখে আৎকে উঠেন। তিনি জানেন, বর্তমানে বিভিন্ন দেশের কাছে এখন কিছু বিপজ্জনক অস্ত্র আছে যা ব্যবহৃত হলে পৃথিবীকে ২০ বার ধ্বংস করা সম্ভব। এতো ভয়াবহ অস্ত্রের তুলনায় তাঁর একমাত্র নতুন আবিস্কার ‘ধূম্র’। বিশ্বকে ‘এসথার্মো নিউক্লিয়ার’ এবং পারমাণবিক অস্ত্রের প্রতিরোধে ধূম্রকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দাঁড় করা বর্তমানে ড. আশরাফের একমাত্র লক্ষ্য। কাজটি অত্যন্ত কঠিন। তবুও তাঁর আত্মবিশ্বাস, মহান আল্লাহ সহায় হলে উদ্দেশ্য পূরণে সফল হবেন। পারমাণবিক বোমা ব্যবহারের কথা মনে হলে গা শিউরে উঠে ড. আশরাফের। কী দুর্বিষহ অবস্থা হয় মানুষের। হিরোশিমা ও নাগাসাকি শহরের মানুষদের নির্মম পরিণতির ভিডিও ক্লিপ তিনি দেখার ভেতর অনুপ্রেরণা পান তাড়াতাড়ি শক্তিশালী প্রতিপক্ষ অস্ত্র ধূম্রের উন্নতি সাধনে। কিছুদিন পূর্বেও দেখেছেন, ‘লিটল বয়’ ও ‘ফ্যাটম্যান’ বোমা নিক্ষেপের ভিডিও চিত্র। তার চোখ সেই দৃশ্যগুলো জলজ্যান্ত হয়ে আছে এখনও। ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট রাত ভোর হওয়ার আগেই ২ টা ৪৫ মিনিটে ‘এ নোলাগে’ নামের একটি বি-৫৯ বোমারু বিমান মেরিয়ানার টিনিয়ান দ্বীপ থেকে জাপান অভিমুখে যাত্রা করে। বিমানটির বিশেষভাবে নির্মিত বোমার খাঁচায় ছিল ‘লিটন বয়’ সাংকেতিক নামের ৯ ফুট লম্বা, ২ ফুট ব্যাসের ও ৯ হাজার পাউন্ড ওজনের একটি আনবিক বোমা। স্থানীয় সময় ৮টা ১৬ মিনিটে হিরোশিমার মাটি থেকে প্রায় ২ হাজার ফুট উপরে থাকা অবস্থায় বোমাটি বিস্ফোরিত করা হয়। বোমাটি ছিল পরিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম ২৩৫ দ্বারা তৈরি। ইউরেনিয়ামের প্রধান একটি বড় খণ্ড থেকে কয়েক ফুট দূরে বোমার অপর মাথায়, তার আরেকটি ছোট অংশ রাখা ছিল। ছোট অংশটিকে ট্রিগারের সাহায্যে বড়ো অংশে প্রবেশ করানো মাত্র ইউরেনিয়ামের ‘ক্রিটিক্যাল ম্যাস’ অতিক্রম করায় সেখানে ১৪০ পাউন্ড ইউরেনিয়ামে পারমাণবিক ফিশন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। ০.০২১ আউন্স ইউরেনিয়ামের ম্যাস মুহূর্তের মধ্যে গতি, তাপ, আলো প্রভৃতি ধরণের শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে অভাবনীয় এক বিস্ফোরণের জন্ম দেয়। বিস্ফোরণের শক্তি ছিল ১৫ হাজার টন টিএনটি-র সমান। বিশাল ব্যাঙের ছাতার মতো কুণ্ডলী হিরোশিমার আকাশকে ছেয়ে ফেলে। মুহূর্তের মধ্যে শহরের ৯০ শতাংশ মাটির সাথে মিশে যায়। ৩ দিন পর ‘বকস্ফার’ নামের অপর একটি আমেরিকান বি-২৯ বোমারু বিমান দক্ষিণ-পশ্চিম জাপানের কাইউসু দ্বীপের কোকুরা অভিমুখে উড়ে আসে। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে সে তাঁর গতিপথ পরিবর্তন করে নাগাসাকি শহরের দিকে মুখ ঘুরিয়ে নেয়। সে বহন করছিল ‘ফ্যাট ম্যান’ সাংকেতিক নামের আনবিক বোমা। এই বোমার ‘কোর’ টিতে ছিল তেজস্ত্রিয় প্লুটোনিয়াম। সেটির চতুর্দিক ছিল তার দিয়ে সংযুক্ত শক্তিশালী বিস্ফোরক পদার্থ। এসব বিস্ফোরক একসাথে বিস্ফোরিত হওয়ার সাথে সাথে ‘কোর’র প্লাটোনিয়ামে পারমাণবিক ফিশনের চেইন রিএ্যাকশন শুরু হয়ে যায় এবং বৃহত্তর আনবিক বিস্ফোরণটি ঘটে। সেই বিস্ফোরণের মাত্রা দাঁড়ায় ২২ হাজার টন টিএনটির বিস্ফোরণ শক্তির সমান। লম্বায় ১২ ফুট ও ব্যাসে ৫ ফুট আয়তনের ‘ফ্যাটম্যান’ বোমাটিকে স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ২ মিনিটে বিস্ফোরিত করা হয়। ০.০৩৫ আউন্স প্লুটোনিয়াম ম্যাস বিভিন্ন ধরণের শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। হিরোশিয়ামা-নাগাসাকির বীভৎসতার কথা বিশ্ববাসী প্রথম জানতে পারে ঘটনার ৪ সপ্তাহ পরে। এটি যে একটি তেজস্ক্রিয় এটম বোমা ছিল এ কথা আমেরিকা গোপন রেখেছিল পুরো ৪ সপ্তাহ। সভ্যতার ইতিহাসে এটা ছিল সময়ের এককের হিসেবে সবচেয়ে বড়ো গণহত্যা। বোমা নিক্ষেপের সঙ্গে সঙ্গে ধূয়োয় ঢেকে যায় সমস্ত আকাশ। কল্পনাতীত তাপমাত্রার লেলিহান আগুন পোড়াতে থাকে সবকিছু। এক নিমিষে অট্রালিকাগুলো মিশে যায় মাটির সাথে। দেখলে মনে হবে, দৈত্যাকৃতির একটি রোলার যেন শহরটিকে পিষে দিয়েছে। নারী-পুরুষ, শিশু ও প্রাণীকূল কিছু বুঝে ওঠার আগেই আগুনে পুড়ে কয়লা হয়ে যা। ড. আশরাফ মনে মনে ভাবেন, আল্লাহর সৃষ্ট একটি জীবন মানুষ যদি এতো যন্ত্রণাদায়ক আগুনের খনি তৈরি করতে সক্ষম হলো তাহলে আল্লাহ তায়ালা কতো উচ্চ তাপমাত্রার জাহান্নাম তৈরি করতে সক্ষম তা ভাবনারও অতীত। ‘লিটল বয়’ ও ‘ফ্যাট ম্যান’ বোমার তেজস্ত্রীয়তায় দূরবর্তী স্থানের অনেকেও আহত হন। এছাড়া প্রথমে সুস্থ-সবল দেখা গেছে কিন্তু পরে তেজস্ক্রীয় বিকিরণে আক্রান্ত হতে থাকেন এমনও অনেককে নেয়া হয় হাসপাতালে। এ দু’ধরণের রোগীদের দেয়া হয় ভিটামিন এ ইনজেকশন। দেখা যায় যে, ইনজেকশনের জায়গায় মাংস পঁচতে শুরু করেছে। এ ধরণের মানুষ একজনও বাঁচেনি। সমস্ত শরীর পঁচে পঁচে ঝরে পড়ে মাংস। এভাবে লাখো মানুষ তিলে তিলে নিঃশেষ হতে হতে ঢলে পড়ে মৃত্যুর কোলে। যারা ইনজেকশন নেয়নি তাঁরা আক্রান্ত হয় দূরারোগ্য ব্যধি ক্যানসারে। এক সময় তাদেরও হয় মৃত্যু। হিরোশিমা-নাগাসাকির এই কু-কীর্তির বোঝা এখনো বয়ে চলেছে সেখানকার অধিবাসীরা। প্রতিটি মাকে ভয়ে ভয়ে দিন গুণতে হয়, সে সন্তানটি তাঁর ভূমিষ্ট হবে সে বিকৃত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের অবয়ব নিয়ে জন্মাবে না তো! এভাবে বাড়তে থাকে বিকৃত, বিকলাঙ্গ ও পঙ্গুর সংখ্যা। এখন জাপানের একটি জনগোষ্ঠী বিকলাঙ্গের বংশ পরিচয়ে মানবেতন জীবন-যাপন করছে। ড. আশরাফ দৃশ্যাবলী সহ্য করতে পারেন না। তিনি অনুমান করেন, বোমার টার্গেটের কেন্দ্রে তাপমাত্রা কয়েক হাজার সেলসিয়াস হয়ে গিয়েছিল। মানবদেহসহ সব কিছু মুহূর্তে সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যায়। পৃথিবীর ধূলিকণায় নারী-পুরুষ ও শিশুর দেহ অবয়বের একটি আবছা চিহ্ন যেন শুধু থেকে যায়। দৃষ্টি ধাঁধানো আলোর রশ্মি ও প্রলয়ঙ্করী অগ্নিবর্ষণে ছাই-ভষ্মসহ সব মিলিয়ে যায় এটম বোমার ধোঁয়ার সাথে। বড়োই বিভৎস-করুণ সেই দৃশ্য। আমেরিকার গোপন আস্থানায় অধ্যাপক আবু সালেহ তাঁর সেই অপমানের একটা বিহিত করতে পরমাণু বিজ্ঞানী জন মেড়ীর কাছে কাকুতি মিনতি করলেন। জন মেড়ী ড. আশরাফের উপর প্রতিশোধ নিতে একটা উপায় বের করতে সম্মতি দিলেন। (চলবে)

(৫ম পর্ব)

Comments

comments