রঙ্-বাহারি

বুক রিভিউ
বালাই হাওরের কান্না : কান্না থামে না যে বই পড়লে
আল্লামা ইমাদ উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী (মা.জি.) লিখিত এক মূল্যবান বই এটি। লেখকের খিদমাতে খালক সম্পর্কে সকলেই মোটামুটি অবগত। তাঁর সাথে যারা মিশেছে, খুব কাছ থেকে তাঁকে দেখেছে তারা জানে কতটুকু মানবপ্রেমী এই মহামানব।
বালাই হাওরের কান্না একটি গল্পগ্রন্থ। এই বইকে শুধু গল্পগ্রন্থ বললে ভুল হবে; বরং আমাদের আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাস্তু-ভিটা ও স্বজনহারা অসহায় বনি আদমের অসহায়ত্বের সচিত্র উপস্থাপন এই বই। এর পাতায় পাতায় ছড়িয়ে আছে গুফরান দরবেশ, সুফিয়ান দরবেশ, ফারহান দরবেশ, মুন্সী কোরবান আলী আর রাহেল পাগলার মতো দুনিয়া বিরাগী পরকাল প্রত্যাশী খাঁটি আল্লাহওয়ালাদের খিদমাতে খালকের অনন্যসব ঘটনা।
মোট ১০টি গল্প দিয়ে সাজানো বইয়ের লেখক নিজে প্রতিবেদক হিসেবে নিজ মুখেই বলে যাচ্ছেন ঘটনাগুলো।
স্বামী-সন্তানহারা অন্ধ বৃদ্ধা হালিমার নিদারুণ কষ্টের দিনাতিপাত দিয়েই শুরু গল্পের পাতা। স্বামী-সন্তান সবাই চলে গেছে দুনিয়ার মোহ মায়া ভুলে। তারা আজ মাটির প্রাসাদে চির আরামে শায়িত। সাথে করে নিয়ে গেছে দুনিয়ায় দুঃখ কষ্টে দিনাতিপাতের সকরুণ চিত্র। রেখে গেছে অন্ধ বৃদ্ধা হালিমা আর দুই নাতনীকে। ভাঙ্গাচালা, জীর্ণ বেড়ায় আবৃত এক অসহায় গৃহে বসবাস এই তিন রমনীর। সমাজের কোলাহল ফেলে পাহাড়ে নিরিবিলি দিনাতিপাত করা ফারহান দরবেশ তাদের জন্যে সময়ে সময়ে সাহায্য নিয়ে আসেন। বৃদ্ধাকে মাটির কলসি দিয়েছিলেন বছরখানেক আগে। কয়দিন আগে একটি কুকুর তা ভেঙ্গে ফেলেছে। গল্পকথক যেদিন এই বাড়িতে যান অসহায় বৃদ্ধা একসময় শোনান তার মাটির কলসির দুখ। গল্পটির নাম তাই ‘মাটির কলস’। পরেরদিন মাটির কলস নিয়ে গল্পকার হাজির হন বৃদ্ধার বাড়িতে। কিন্তু ততক্ষণে দুনিয়ার মোহমায়া ভুলে অপারের অনন্তের পথে পাড়ি জমিয়েছেন এই বৃদ্ধা! কী নিদারুন চিত্র! গল্পাকারের মুন্সিয়ানা উপস্থাপনায় এই গল্প শেষ হওয়ার আগেই আপনার চোখ বেয়ে অশ্রু ঝরবে অনায়াসেই!
এই অশ্রু মুছতে মুছতে আপনি যখন ‘মধুমালতির তীরে’ গিয়ে হাজির হবেন, তখন স্বচক্ষে দেখবেন এক অসহায় বৃদ্ধের তার ছোট নাতনী নিয়ে দিনাতিপাতের স্বকরুণ চিত্র। বৃষ্টির দিনে টুপটুপ করে বৃষ্টি পরে তার ছোট্ট কুটিরে। খেয়ে না খেয়ে তাদের দিন চলে। শীতের দিনে কোনোমতে বেঁচে থাকে তারা। বাড়িঘরের জীর্ণ-শীর্ণ রুপ। এখানে অবশ্য গুফরান দরবেশের সাথে আছেন মুনসি কোরবান আলী আর রাহেল পাগলার মতো উদারদিল মানুষ। গল্পের শেষে যখন অসহায় এই বৃদ্ধ ও তার নাতনীর সলিল সমাধী হয় বৈশাখীঝড়ের তান্ডবলীলায়, তখন অজান্তেই কেঁদে উঠে মন। তাদের দাফন কার্যে এগিয়ে আসেন রাহেল পাগলা, মুনসি কোরবান আলী আর এই দুই মানবসেবীকে সুপথ দেখানো গুফরান দরবেশ। দাফনকার্য সম্পাদন করে দীর্ঘ বিশ বছরের পরিচিত এই বদরপীরের টিলা ছেড়ে অজানা গন্তব্যের পথে পা বাড়ান সস্ত্রীক গুফরান দরবেশ। অসহায় দুই বনি আদমের ইন্তেকাল আর তাদের সুপথের দিশারী গুফরান দরবেশের বিদায়ে শোকাহত রাহেল পাগলা আর মুনসি আবারো বেরিয়ে পড়েন অসহায় পল্লীতে আবাস গড়া বনি আদমের সুখ-দুঃখের সাথী হতে!
এরপরেই দেখতে পাই ছগির আলী নামক ভূমিখেকোর নৃশংসতা। যেখানে সফর আলীর শেষসম্বল ছ’ বিঘা জমি চালাকী করে নিজ নামে করে নেয় সে। মৃত্যু শয়ানে শায়িত সফর আলীর শেষ ইচ্ছা ছিল ৬ শতক বিক্রি করে নিজ দাফন-কাফনের ব্যবস্থা করা আর বাকি জমিটুকু স্ত্রী-পুত্র কন্যার জন্যে রেখে যাওয়া। কিন্তু সেটা আর হলো না। সফর আলীর দাফন-কাফনের পর অসহায়ত্ব বরণ করতে হয় আরমান ও তার মা-বোনের। ছগির আলীর নির্মমতায় বলি হয়ে ভিক্ষার ঝুলি কাঁধে নিয়ে ঘুরে বেড়ায় শিশু আরমান। মা বোনের মুখে দুমুটো খাবার তুলে দেয়ার আশায় সারাদিন যায় মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে। তবুও ভুলে না বাবার কথা। একদিন কিছু বকুল ফুল কুড়িয়ে এনে বাবার কবরে দেয়। অতঃপর দোয়ায় লিপ্ত হয়ে অঝোরে কেঁদে যায় আরমান ও তার মা-বোন। এখানেই শেষ নয়; অসহায় এই মহিলার শেষ অবলম্বন এই কিশোর ছেলেটাও পথ ধরে অনন্তের পানে। বাবার কবরপাশে শায়িত হয় সেও!
এখন ফিরে আসি সদান্দপুরে। শান্ত-শীতল আর রুহানিয়াতে ভরপুর এক গ্রাম। ধনী-গরীবের নিরাপদ ও ভারসাম্যপূর্ণ সহাবস্থান এখানে। কোনো বাজে লোকের আড্ডা নেই এখানে। মুলত এটি একটি কবিতা হলেও পূর্ণ একটি গল্প আছে এতে। আছে অসহায় মানুষের কথা। আছে মানব দরদী এক সুফিয়ান দরবেশের কথাও। যিনি গ্রামের সকল মানুষের ভরসার প্রতীক। অসহায় মানুষের দ্বারে দ্বারে যিনি ঘুরে ফিরের দিনের পর দিন। গ্রামের সকল মানুষের হৃদয়ে অক্ষত আসন গড়েছেন তিনি। এই কবিতায় বলেছেন দুনিয়ালোভী কবিদের কথা। এতে ব্যক্ত আছে ক্ষমতালোভী জনপ্রতিনিধির ভোটকালীন জনগণের পায়ে পড়ার কথা। আছে জয়ী হয়ে মানুষের সাথে সম্পর্কহীনতার কথাও।
পরিশেষে সুফিয়ান দরবেশরাই হয় অসহায়ের আশ্রয়স্থল। কবিতাটি শেষ হয় এক অসাধারণ উক্তি দিয়ে-
এমন মানুষ খুঁজিছে আজিকে বাঙ্গলার কোমল মাটি
অন্তর যার সহজ সরল সোনার মতো খাঁটি!
কবিতা পড়া শেষ হলেই পাবেন, ‘গায়ে ছেঁড়া-ফাঁড়া কাপড় পরে চুলে ঝটা বাঁধিয়ে পীর সেজে মানুষের ধন সম্পদ লুটেরা ভন্ড পীরদের কথা। শেষে দীনের পথে ফিরে আসে গুফরান দরবেশের কথায়। আছে ডাকাতদল কীভাবে আকৃষ্ট হয় রাহেল পাগলা ও মুন্সিকে দেখে তার কথা।
সাংস্কৃতিক দোহাইয়ে আমাদের অধঃপতনের সুযোগ নিয়ে কীভাবে লুটেপুটে খাচ্ছে স্বার্থান্বেষী লুটেরা বাহিনী তার একটি সচিত্র বর্ণনা পাওয়া যায় ‘সাংস্কৃতিক প্রতারণা’ নামক গল্পে। লটারীর হরিণের আশায় চাল-ডাল বেঁচে টিকেট কিনে গান শুনতে। শেষে দেখা যায় ধান্দাবাজদের কপটতার শিকার হয় গ্রাম্যবাসী।
ট্রেনের কামরায় এক বৃদ্ধের সাথে ভন্ডামী করতে যাওয়া এক পকেটমারের ধরা খাওয়ার মজাদার চিত্র রয়েছে ‘সহযাত্রী’ গল্পে। বড় বড় মানুষের নামে ধাপ্পাবাজি করতে করতে যখন মুরুব্বীর কাছে ধরা খায়, ধরা খায় ট্রেনের টিকেট চেকারের হাতেও। শেষমেশ গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয় রাস্তাতেই!
এক মৃত্যু পথযাত্রী অসহায় গরীবের শেষ বয়ান গল্পকার নিজের ভাষায় তুলে ধরেছেন ‘কুশিয়ারার তীরে অসহায় বনি আদমের অশ্রুঝরে’ গল্পে। মৃত্যু পথযাত্রী একজন অসহায় লোক বাক শক্তিহীন হয়ে পড়েছেন। বলার ছিল অনেক কিছু, কিন্তু বলতে পারেননি।
সন্তানদের অসহায় মুখের দিকে চেয়ে চেয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। তার অব্যাক্ত কথাগুলো বক্তব্য আকারে তুলে ধরেছেন বিদগ্ধ গল্পকার।
অবশেষে ‘মধুমালতীর তীরে’ ব্যক্ত করা সেই অসহায় বৃদ্ধের মতই একজনকে লেখক খুঁজে পেয়েছিলেন জকিগঞ্জে। ‘অন্ধের ঘরে’ গল্পে বাস্তব একজন মানুষের চিত্র চিত্রিত হয়েছে। তার অসহায়ত্ব থেকে শুরু করে তাকে ঘর বানিয়ে দেয়ার অপার্থিব দৃশ্যও দেখতে পাই এই গল্পে!
বইয়ের শেষভাগে এসেছে গল্পকারের নাতিদীর্ঘ এক বয়ান। পাড়া-প্রতিবেশী অসহায় কান্নার আওয়াজে কতটুকু আমাদের করণীয় তা তুলে ধরেছেন এক আল্লাহওয়ালা এই বুযুর্গ। এতিম-অনাথের মাথায় মমতার হাত বুলানোর কথা এতে তুলে ধরেছেন।
আমি এই বইটি প্রথম পড়েছিলাম ২০১২ সালে। তখন খুব একটা উপলব্ধি করিনি। এই কয় দিনে এই বইটি যখনই পড়েছি, তখনই মনের অজান্তে কেঁদেছি। সাহিত্যের রুপ-রস সমৃদ্ধ এমন আবেগঘন ভাষায় যে অসহায় মানুষের কথা ব্যক্ত করা যায় তা আগে দেখিনি। একজন পরিক্ষিত মানবসেবীর সাবলীল উপস্থাপনা আপনাকে যেমন কাঁদাবে, ঠিক তেমনিভাবে অনুপ্রাণিত করবে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে। একজন আদম সন্তান হয়ে জন্মানোর স্বার্থকতা যে কোথায় তা আমরা জানি না। অথচ বড় ছাহেব কিবলার এই গল্পগ্রন্থ আমাদের সেই মহত্বই শিখায়।
একবার হলেও পড়–ন এই মূল্যবান বইটি। জীবনের স্বার্থকতার পথ খুঁজে পাবেন সুনিশ্চিত!

ঠান্ডা লাগলে করণীয়
এখন আবহাওয়া বদলের সময়। রাতের দিকেও হালকা শীত অনুভূত হয়। আর এই সময়টাই হঠাৎ করে ঠান্ডা লাগা, সর্দি, জ্বর হয় মানুষের। তাই এই সময়টায় বিশেষভাবে সাবধান থাকার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। যদি এর মধ্যে ঠান্ডা লেগে যায় তাহলে কি করবেন জেনে নিন।
গরম পানি : শীতকালে গলায় ঠান্ডা লেগে বসে যেতে পারে। এতে কণ্ঠস্বর পরিবর্তন হয়ে যায়। এসময় কুসুম গরম পানি পান করবেন। এতে গলার উপকার পাবেন। এছাড়া বুকে জমানো কফ বের করতে সহায়তা হবে।
স্যুপ: যদি সর্দি লেগে থাকে তাহলে গরম গরম স্যুপ খেতে পারেন। এতে সর্দি থেকে কিছুটা স্বস্তি পেতে পারেন।
গরম পানিতে গোসল: ঠান্ডা লাগলে গরম পানিতে গোসল করুন। এতে আরাম পাবেন।
বাড়তি বালিশ: ঠান্ডা লাগলে ঘুমের সময় নাক বন্ধ থাকায় শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। তাই একটা বাড়তি বালিশ মাথায় নিয়ে খানিকটা উঁচু হয়ে শুতে পারেন।
গার্গল : ঠান্ডা লেগে গলা খুসখুস করা, গলা ভেঙে যাওয়া ইত্যাদি হয়ে থাকে। গার্গল করলে এসময়ে উপকার হয়। এছাড়া গলা ও নাকের সংযোগস্থলে আটকে থাকা সর্দিকেও টেনে বের করে। সর্দি ভিতরে নেবেন না: অনেকেই নাক টেনে বা কাশতে কাশতে সর্দিকে ভিতরে টেনে নেন। এমন হলে বারবার থুথু ফেলে তা বাইরে বের করে দিন।
আদা: সর্দি-কাশিতে আদা বহুদিন ধরেই প্রচলিত। আদার টুকরো মুখে পুরে রাখলে বা তা দিয়ে চা খেলে সর্দি-কাশিতে উপকার পাওয়া যায়।
দুধ খাবেন না: ঠান্ডা লাগলে দুধ জাতীয় জিনিস এড়িয়ে চলুন। দুধ শরীরে মিউকাস বাড়িয়ে তোলে। যা ঠান্ডা লাগলে আরও বেশি সমস্যার সৃষ্টি করে।

কৌতুক
এক ধার্মিক ব্যক্তি আর এক নাস্তিক পাশাপাশি হাটছিল। ধার্মিক ব্যক্তি স্বভাবসুলভ পাশের ব্যক্তিটিকে নামাজ-রোজা এসবের ফজিলত বর্ণনা শুরু করতেই নাস্তিক ব্যক্তির প্রশ্ন: আপনি আল্লাহকে বিশ্বাস করেন?
ধার্মিক ব্যক্তি একটু থতমত খেয়ে জবাব দেয়: হ্যাঁ।
নাস্তিক: কেন?
ধার্মিক: বাহ, আমাদের সৃষ্টিকর্তা, আমাদের পালনকর্তাকে বিশ্বাস করবো না?
নাস্তিক মহাশয় এবার একটা ব্যঙ্গ হাসি হেসে বললো: আপনি দেখেছেন কখনো আল্লাহকে? আর, আল্লাহকে মানতে গেলে তো ভাগ্যকেও মানতে হয়-ভালো আর মন্দ তাহলে তো সবই আল্লাহরই কাজ-তাতে আমাদের কি কোন হাত আছে?
নাস্তিকের প্রশ্ন দুটি শুনে ধার্মিক ব্যক্তি কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলো। তারপর, হঠাৎ করেই একটা ইট তুলে নাস্তিকের মাথায় মেরে বসলো।
থানা-পুলিশ হয়ে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ালো। বিচারক ধার্মিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করলেন-আপনাকে ঐ ব্যক্তি দুটো প্রশ্ন করলো- আর আপনি তাকে এভাবে আঘাত করলেন? বেচারা কত ব্যথা পেলো!
ধার্মিক ব্যক্তি: আমি তার দুটি প্রশ্নের জবাব এক ইট দিয়ে দিয়েছি।
বিচারক: সেটা কিভাবে?
ধার্মিক ব্যক্তি: সে বলেছে যা দেখা যায় না, তা বিশ্বাস করা যায় না। তাহলে সে যে ব্যথা পাচ্ছে তা তো আপনি আমি কেউ দেখছিনা। সে শুধু অনুভব করছে।
বিচারক: আর, দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর?
ধার্মিক ব্যক্তি: ওটা তার কপালে লেখা ছিল।

শিক্ষণীয় গল্প
একবার এক ইঁদুর লক্ষ্য করল যে বাড়িতে ইঁদুর মারার ফাঁদ পাতা রয়েছে। সে খুবই ভয় পেল। ফাঁদটি অকেজো করার জন্য সে ওই বাড়িতে থাকা মুরগির সাহায্য চাইল। মুরগি ঘটনা শুনে জবাব দিল-
‘ফাঁদটি আমার কোন ক্ষতি করতে পারবেনা। অতএব আমি এখানে কোন সাহায্য করতে পারব না’।
মুরগির কাছ থেকে এই উত্তর শুনে ইঁদুর খুব দুঃখিত হল এবং ছাগলের কাছে গিয়ে সাহায্য চাইল। ছাগল ফাঁদের কথা শুনে বলল-
‘ওই ফাঁদ বড়দের জন্য নয়। আমি এখানে তোমাকে কোন সাহায্য করতে পারব না’।
ইঁদুর ছাগলের কাছ থেকে একই উত্তর শুনে দুঃখিত হয়ে গরুর কাছে এলো। সব কথা শুনে গরু বলল-
“ইদুরের ফাঁদ আমার মত বড় প্রাণীর কোন ক্ষতিই করতে পারবে না। যা আমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না- তাতে আমি সাহায্য করতে পারব না”।
ইঁদুর শেষ পর্যন্ত নিরাশ হয়ে তার ঘরে ফিরে এলো।
রাতের বেলা বাড়ির গৃহিণী অন্ধকারের ভিতর বুঝতে পারলেন যে ফাঁদে কিছু একটা ধরা পরেছে। অন্ধকারে ফাঁদের কাছে হাত দিতেই উনি হাতে কামড় খেলেন এবং দেখলেন ফাঁদে ইঁদুরের বদলে সাপ ধরা পড়েছে।
তার চিৎকারে কর্তার ঘুম ভাঙল। তাড়াতাড়ি ডাক্তার ডাকা হল। চিকিৎসা শুরু হয়ে গেল। কিন্তু অবস্থা মোটেই ভালো না।
পথ্য হিসেবে ডাক্তার মুরগির সূপ খাওয়াতে বললেন। সুপের জন্য কর্তা মুরগিকে জবাই করে দিলেন।
অবস্থা আস্তে আস্তে আরও খারাপ হতে লাগলো। দূরদূরান্ত থেকে আরও অনেক আত্মীয় স্বজন আসতে লাগলো। বাধ্য হয়ে কর্তা ছাগলকে জবাই করলেন তাদের আপ্যায়ন করার জন্য।
আরও ভালো চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার দরকার হতে লাগলো। অবশেষে বাড়ির কর্তা তাদের গরুটিকে কসাইখানায় বিক্রি করে দিল।
একসময় বাড়ির গৃহিণী সুস্থ হয়ে উঠল। আর এই সমস্ত ঘটনা ইঁদুরটি তার ছোট্ট ঘর থেকে পর্যবেক্ষণ করল।

Comments

comments

About

Check Also

রঙ্-বাহারি

২০১৯ শেষে… বহু ঘটন-অঘটনে কাটলো ২০১৯ সাল। দীর্ঘ কয়েক দশক দশক পর জাতি দেখলো ‘ডাকসু’ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *