সালাম : শান্তির এক অনুপম শিক্ষা

পৃথিবীর প্রতিটি সভ্য জাতিরই নিজেদের মধ্যে পরস্পর দেখা-সাক্ষাতের সময় ভাববিনিময় ও সাদর সম্ভাষণের জন্য একেকটি পদ্ধতি প্রচলিত আছে। এটি মানুষের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা-ভালবাসা প্রকাশের একটি উত্তম পন্থা। ছোটবেলায় আমাদের মা-বাবা শিখিয়েছিলেন, আলেম, মুসলমান শিক্ষক ও গুরুজনদের সালাম দেবে, অমুসলিম শিক্ষক-গুরুজনদের আমরাও আদাব দেব। অতিশয় নিষ্ঠার সঙ্গে তা মেনে চলতাম যদিও ভালভাবে বুঝতাম না, সালাম কী আর আদাবইবা কী? আর এসবের তাৎপর্যই বা কী? এখন জানতে পেরেছি, উভয়ই আরবি শব্দ, যদিও অমুসলিম গুরুজনদের আমরা সালাম না বলে ভক্তিভরে আদাবই জানাতাম।
একে-অপরকে কীভাবে সম্ভাষণ করতে হয়, তা শিখিয়েছে মানবধর্ম ইসলাম। কারণ, ইসলাম শুধু আচারসর্বস্ব ধর্ম নয়, রবং এক পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। ইসলামে সালাম কোনও সাধারণ কালচার নয়, বরং একটি এবাদত। কারণ এর মধ্যে পূণ্য রয়েছে। তাই ইসলামের অভিবাদন পদ্ধতি কেবল বাহ্যিকভাবে নয়, বরং আত্মিক দিক থেকে সম্পর্ক গড়ে তুলতে মানুষকে উদ্ধুদ্ধ করে। বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) আদেশ করেছেন, ‘হে মানবমন্ডলী, তোমরা পরস্পরকে সালাম কর, আর দরিদ্রদের আহার দান কর। ’ বলা হয়েছে যখন তোমরা গৃহে প্রবেশ করবে, তখন স্বজনদেরকে সালাম করে প্রবেশ করবে।
সালাম আরবি শব্দ, এর অর্থ শান্তি। এটা আবার মহান আল্লাহর অন্যতম গুণবাচক নাম। যেমন, কোনও কোনও মানুষের নাম রাখা হয় আব্দুস সালাম। কোনও মুসলমানের সঙ্গে অন্য মুসলমানের সাক্ষাৎ হলে পারস্পরিক প্রীতি, ভালবাসা ও সৌহার্দ বিনিময়ের লক্ষ্যে বলতে হয় ‘আস্সালামু আলাইকুম’ অর্থাৎ আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক। তখন অপর লোকটি বলবে ‘ওয়া আলাইকুমুস্সালাম’ অর্থাৎ আপনার উপরও শান্তি বর্ষিত হোক। এভাবে পরস্পরের জন্য শান্তির দোয়ার মাধ্যমে মুসলমানদের মধ্যে সাক্ষাৎ হয়ে থাকে। পবিত্র ক্বোরআনের ঘোষণা, ‘আর তোমাদের যদি কেউ দোয়া করে, তা হলে তোমরাও তার জন্য দোয়া কর, তার চেয়ে উত্তম দোয়া অথবা তারই মতো ফিরিয়ে বল’। (০৪ : ৮৬)। তাই আস্সালামু আলাইকুমের জবাবে অনেকে বলেন ‘ ওয়া আলাইকুমুস্সালামু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু’। অর্থাৎ আল্লাহ আপনাকে শান্তি, রহমত ও বরকত দান করুন।
প্রাক্-ইসলামি আরবে মানুষেরা পরস্পর দেখা হলে বলত ‘হাইয়াকাল্লাহ’ অর্থাৎ আল্লাহ তোমাকে জীবিত রাখুন। রাসুলুল্লাহ (সা.) এটাকে পরিবর্তন করে শিখিয়েছেন ‘আস্সালামু আলাইকুম’ অর্থাৎ আপনি সর্বপ্রকার কষ্ট ও বিপদ-আপদ থেকে নিরাপদে থাকুন। সুতরাং, যে ব্যক্তি অন্য ব্যক্তিকে যাবতীয় বিপদ-আপদ থেকে মুক্ত রাখার জন্য দোয়া করে, সে যেন পরোক্ষভাবে এ ঘোষণা করে যে, তুমি আমার হাত ও মুখ থেকে নিরাপদ; তোমার প্রাণ, সম্পদ, সন্তানের আমি সংরক্ষক। হাদিস শরিফে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যার হাত ও জিহ্বা থেকে অন্য মুসলমানরা নিরাপদে থাকে, সে-ই প্রকৃত মুসলমান।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রথমে সালাম করে, সেই আল্লাহর অধিক নিকটবর্তী। মহানবী (সা.) আরও বলেন, কোনও ব্যক্তি কাউকে সালাম করলে সেই ব্যক্তি যদি জবাব না দেয়, তবে তার চেয়ে উত্তম ব্যক্তিরা তার জবাব দেবেন, অর্থাৎ ফেরেশতারা। তাই সালাম করা সুন্নত আর জবাব দেওয়া ওয়াজিব। বোখারি ও মুসলিমের হাদিসে আছে-যে ব্যক্তি যানবাহনে সওয়ার তার উচিত পায়ে হাঁটা ব্যক্তিকে, যে চলমান সে উপবিষ্ট ব্যক্তিকে এবং যারা কম সংখ্যক তারা বেশি সংখ্যককে প্রথমে সালাম করবে।
সালাম করা সুন্নত আর জবাব দেওয়া ওয়াজিব। একে অপরকে সালাম না করলে উভয়কে সুন্নত ত্যাগের জন্য দায়ী হতে হবে। অবশ্য এটারও ব্যতিক্রম আছে। যেমন নামাজরত ব্যক্তিকে কেউ সালাম করলে জবাব দেওয়া ওয়াজেব নয়, জবাব দিলে নামাজ বাতিল হয়ে যাবে। একই ভাবে, যে ব্যক্তি খুৎবা দেন বা ক্বোরআন তেলাওয়াত করেন, আযান-একামত বলেন, ধর্মীয় গ্রন্থ পড়ান বা মানবিক প্রয়োজনে পানাহার, প্রস্রাব ইত্যাদিতে রত থাকেন, তাকে সালাম করাও জায়েজ নয় এবং তার পক্ষে জবাব দেওয়াও ওয়াজেব নয়। পুরুষ মহিলাদের সালাম দিতে পারেন তবে অপরিচিত যুবতী কিংবা এমন মহিলা যার প্রতি অসৌজন্যমূলক বা অশালীন দৃষ্টি হতে পারে, তাদের সালাম দেওয়া যাবে না। তবে মা, বোন, খালাম্মা, আপন স্ত্রী এবং যে কোনও বৃদ্ধ মহিলাকে সালাম দেওয়া যায়। অনুরূপভাবে মহিলাদেরকেও পুরুষদের সালাম দিতে এ ব্যাপারগুলো মনে রাখা দরকার। যে সমাবেশে মুসলিম-অমুসলিম সবাই উপস্থিত থাকেন, সেখানে অনেকে ‘আস্সালামু আলাইকুম’-এর বদলে ‘আস্সালামু আলা মানিত্তাবায়াল হুদা’ বলে থাকেন। অর্থাৎ সৎপথে থাকা লোকদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। যদি কোনও অমুসলিম ভাই-বন্ধু আপনাকে সালাম করে, তা হলে আপনি জবাবে উপরোল্লিখিত বাক্যটি বলতে হবে। সালাম বিভিন্নভাবে দেওয়া যেতে পারে। যেমন, সাক্ষাতের সময় প্রীতি সম্ভাষণ, বিদায়ের সময় সালাম-ভালবাসা বিনিময়, অনুমতির জন্য সালাম, বাহকের মাধ্যমে সালাম, চিঠিপত্রের মাধ্যমেও সালাম দেওয়া যেতে পারে।
আজকাল টেলিফোনে, এসএমএসে, ই-মেইলে সালাম পাঠানো যায়। ইসলামি দর্শনে সালাম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পবিত্র ক্বোরআনে আছে, “হে নবী! আমার আয়াতের উপর ইমান রাখে এমন লোকেরা যখন আপনার দরবারে আসে, তখস আপনি তাদের ‘আস্সালামু আলাইকুম বলুন’।” (০৬ : ৫৪)। অতএব সালাম করা ইসলামের এক মৌলিক শিক্ষা যে, এক মুসলমান অপর মুসলমানের সঙ্গে যখনই সাক্ষাৎ করবে, তখন একে অপরের জন্য শান্তি ও সুস্বাস্থ্যের জন্য দোয়া করবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, এক মুসলমানের উপর আরেক মুসলমানের কতিপয় অধিকার রয়েছে আর এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো আরেক মুসলমানের সাথে দেখা হলে সালাম দিবে। মহানবী (সা.) বলেছেন, তোমরা সালামের ব্যাপক প্রচলন ঘটাও। তিনি সর্বাগ্রে সবাইকে সালাম দিতেন এবং সাধারণত কেউ তাঁকে আগে সালাম করার সুযোগ পেত না।
ইসলামি অভিবাদন সালাম আসলে শান্তিপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এক অনুপম শিক্ষা। সালামের ব্যাপক প্রচলনের মাধ্যমে শত্রুতার ভাব দূর হয়, পারস্পরিক বন্ধুত্বপূর্ণ আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘তোমরা সালামের বহুল প্রসার কর, তা হলে শান্তি ও নিরাপত্তা লাভ করবে। ’ ইসলাম যেমন সর্বজনীন বিশ্বমানবের ধর্ম, তেমনি এর প্রতিটি বিধানও সর্বজনীন। এটা ছোট-বড়, ধনী-দরিদ্র, শিক্ষিত, অশিক্ষিত, সকাল-সন্ধ্যা, দেশ-কালের ঊর্ধ্বে। সালাম মুসলমানের সভ্যতা, সংস্কৃতির এক উচ্চ নিদর্শন। যার মূল কথা হলো, দুজন মানুষে দেখা হলে একে-অপরের জন্য শান্তির দোয়া করা। হ্যাঁ, এখানে হয়তো গুড মর্নিয়ের ঝঙ্কার নেই, আছে শান্তির এক স্বর্গীয় বার্তা! এতে রয়েছে পারস্পরিক নিরাপত্তা দেওয়ার কথা, ভালবাসার কথা এবং একে-অপরের প্রতি দোয়া ও কল্যাণ কামনার সুমহান শিক্ষা। গুড মর্নিং, গুড আফটারনুন, গুড ইভিনিং বা গুড নাইটের মতো সালামে বিভিন্ন সময়ের জন্য কোনও পরিবর্তন করতে হয় না। অর্থাৎ এটা সময়নির্ভর নয়। সালাম এ ঝামেলা থেকে মুক্ত। কারণ, ইসলাম সহজ-সরল ধর্ম। তাই এর শিক্ষা জটিলতামুক্ত।
আরবী ভাষায় অভিবাদন সালাম আমাদের সমাজে অনেক বিবর্তনের সম্মুখীন হচ্ছে। সে কয়েকদিন আগের কথা। অফিসে যাওয়ার উদ্দেশে ঘর থেকে বেরোতেই এক ভদ্রলোকের সঙ্গে আরেকজন ‘স্লা-মালিকুম’ বলে এগিয়ে এলেন। আমি হতকচিত হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, কী হয়েছে? এটা আবার কী ? বললেন, ‘আপনাকে সালাম। আমরা এলাকার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চাঁদার জন্য আসছি।’ আমি বললাম ‘নিজে শুদ্ধভাবে সালাম করা জানেন না, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাচ্চাদের কী শিখাবেন?’ সঙ্গের ভদ্রলোক বললেন, তিনি এত বেশি জানেন না।’ এভাবে ‘আস্সালামু আলাইকুম’ বিকৃত হয়ে স্লা-মালিকুম’ হয়ে গেছে অনেকের কাছে। তাই শুদ্ধ উচ্চারণে একে-অপরকে সালাম জানানো আমাদের কর্তব্য। ছোটবেলা বিভিন্ন পোস্টারে পড়তাম ‘ওমুকভাই তোমায় জানাই লাল সেলাম।’ ভাবতাম, তা হলে কি সালামের রং লাল? আবার, বিয়ে বাড়িতে সালামের কী কদর বা দাম। বেচারা বরকে কত মুরব্বিদের সালাম করতে হয়। আবার কনেকে যে শ্বশুড়বাড়ি সালাম করতে করতে গলদঘর্ম হতে হয়। অবশ্য এতে দু’পয়সা কামানোর সুযোগ আছে। কারণ, সালামের জন্য বকশিস পাওয়া যায়। অনেকে আবার কোনও কাজের জন্য ঘুষ দিয়ে এসে বলেন-সেলামি দিতে হলো।
সাধারণত ছোটরা বড়দের আগে সালাম করে থাকে। অনেকে আবার পায়ে হাত দিয়ে সালাম করে। অনেকে পায়ে হাত দিতে বাধা দেন, কারণ এটাতে শিরকির গন্ধ আছে। তবে যেহেতু এক আল্লাহ ছাড়া কারও সামনে মাথা ঝোঁকানো জায়েজ নয়, অতএব এসব ক্ষেত্রে আগে বসে পরে সালাম করা উচিত। অনেকে ভাবেন, সালাম করা যদি দোয়া হয়, তবে ছোটরা বড়দের আগে করবে কেন? হ্যাঁ, ছোটরা আগে করার মধ্যে বেশি মাহাত্ম্য। একে তো শ্রদ্ধা-ভক্তির কারণ, তারপর ছোটরা বড়দের তুলনায় প্রায় নিষ্পাপ। নিষ্পাপের দোয়ার মূল্য যে বেশি, তাতে সন্দেহের অবকাশ নেই।
আমাদের মধ্যে অনেকে ভাবেন, সালাম পাওয়া মর্যাদার প্রতীক। এটা একেবারে ভুল ধারণা। কারণ, যে আগে সালাম দেয়, সে আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয়। তাই আগে সালাম করার অভ্যাস গড়ে তোলা আমাদের সবার কর্তব্য। আগেই উল্লেখ করেছি, দুই মুসলমানের দেখা হলে সালাম করা প্রত্যেকের জন্য সুন্নত। ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দিলে উভয়কেই গোনাহগার হতে হয়। এতে ছোট-বড়, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, ধনী-গরিব বলে কোনও কথা নেই। অনেক অমুসলিম ভাই রয়েছেন, যারা আমাদের মধ্যে অনেককে সালাম করেন। আমরা জবাবে বলি ‘ওয়া আলাইকুম’। অর্থাৎ আপনাকেও। কারণ যিনি সালাম করলেন, তার উদ্দেশ্য কতটুকু মহৎ তা নিয়ে সন্দেহ থেকে যায়। একবার কতিপয় ইহুদি হযরত (সা.)-এর দরবারে এসে বলে ‘আস্সামু আলাইকুম’। হযরত আয়েশা (রা.) হযরত (সা.) এর পক্ষ থেকে জবাব দিলেন ‘ওয়াআলাকুমুসসাম ওয়াল্লায়ানাত’ অর্থাৎ তোমাদেরও সর্বনাশ হোক এবং তোমরা অভিশপ্ত হও। এতে আল্লাহর নবী মোহাম্মদ (সা.) হযরত আয়েশাকে সাবধান করে বলেছিলেন, নিজের মুখ খারাপ করো না। আল্লাহ নম্রতা ও বিনয়কে ভালবাসেন। তাই সাধারণত অমুসলিম বন্ধুদের সালামের উপযুক্ত জবাব হলো ‘ওয়া আলাইকুম।’ অর্থাৎ, আপনি যেভাবে আমার জন্য দোয়া করেছেন আমিও আপনার জন্য করলাম।
ইসলামি অভিবাদন সালাম এত সুন্দর শিক্ষা, এর মাধ্যমে মানুষের মধ্যে শান্তি স্থাপন করা অতি সহজ। কোনও কারণে দু’জন মন কষাকষি হলে একে-অপরকে সালাম করলে মন থেকে হিংসার ভাব দূর হয়ে যায়। তাই বিশ্বশান্তি স্থাপনে সালাম উপযুক্ত ভূমিকা নিতে পারে। এক রাষ্ট্রপ্রধান যদি অন্য রাষ্ট্রপ্রধানকে সালাম করেন বা পাঠান, তাতে দেশে দেশে শান্তি স্থাপন সহজ হতে পারে। কিন্তু আমরা ইসলামের এ সুমহান শিক্ষার যথার্থ মূল্যায়ন করিনি বলে সালাম আমাদের কাছে ব্রাত্য বা সম্মান কামানোর মাধ্যমে পরিণত হয়ে তার সুমহান মর্যাদা হারিয়ে ফেলতে চলেছে বললে বোধহয় ভুল হবে না। আজকাল যুব সমাজের মধ্যে সালামের প্রচলন একেবারে নেই বললেই চলে। অথচ এই প্রথা আমাদের জন্য অত্যাবশ্যকীয়। বর্তমান বস্তুতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় নৈতিক শিক্ষার যে অবক্ষয় ঘটেছে, তার প্রভাবে যুবসমাজ প্রভাবিত হওয়া অতিশয় স্বাভাবিক ব্যাপার। অতএব, এ ব্যাপারে আমাদের সবার সাবধান হওয়া যে অতিশয় প্রয়োজন, এতে সন্দেহ থাকার কথা নয়।

Comments

comments

About

Check Also

রাসুলুল্লার হিজরাত : প্রাসঙ্গিক ভাবনা

পৃথিবীতে তখন ঘোর অমানিশার রাজ। চারিদিকে বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্যের দৃঢ় ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে। যে ভিন্নতার জন্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *