এশিয়া মহাদেশে ইসলাম প্রচার ও শাহজালাল রহ.

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া মহাদেশ এবং পাক ভারত উপমহাদেশে যেসব ওলী-আউলিয়ারা ইসলাম প্রচারে নিরলস ভূমিকা রেখেছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন হযরত শাহজালাল মুজাররদে ইয়ামনী রহমতুল্লাহি আলাইহি। ভারত উপমহাদেশে খাজা মইনুদ্দীন চিশতীর পরে এই ভূখণ্ডে ইসলাম প্রচার ও প্রসারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন বিখ্যাত এ মনীষী। বাংলাদেশ, আসাম তথা বৃহত্তর বঙ্গে ইসলামের আলোকে আলোকিত করার ক্ষেত্রে যাঁর নাম সবচেয়ে উজ্জ্বল এবং এদেশের সূফী-দরবেশ, আউলিয়াগণের মাঝে যার প্রভাব ও মর্যাদা সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা যায়, তিনি হলেন সুলতানে বাংলা হযরত শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি। এতদঞ্চল ধর্ম-বর্ণ, নির্বিশেষে জনসাধারণের মাঝে তাঁর প্রতি ভালবাসা এবং নামের মাহাত্ম্য ব্যাপক ও অতুলনীয়। তার পূর্ণ নাম জালাল উদ্দীন জালাল উল্লাহ। আপামর জনসাধারণের কাছে প্রচলিত নাম শাহজালাল।
জন্ম ও বংশ পরিচিতি :
বিশ্ব পর্যটক ইবনে বতুতার বর্ণনা অনুসারে গবেষকদের মতে শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি ৭৪৬ হিজরী সনে ১৯ শে জিলক্বদ ওফাত (ইন্তেকাল) বরণ করেন। সে মতে তাঁর ১৫০ বছর জীবনকাল ধরে জন্ম সাল হয় ৭৪৬-১৫০ = ৫৯৬ হিজরী। তাঁর জন্মস্থান হলো- ইয়ামনের তাইজ নগরীর কুন্যা নামক স্থানে। এখানে একটি বিষয় উল্লেখ্য যে, কোন কোন লেখক শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং শায়খ জালাল উদ্দীন তিবরিজীকে আলাদা দু’জন দরবেশ বলে বর্ণনা করে জালাল উদ্দীন তিবরিজীর জন্ম ও ইন্তেকালের তারিখ এবং পান্ডুয়াতে তার মাজার বলে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু যেসমস্ত গ্রন্থের সূত্রে তা বর্ণিত হয়েছে, মূল গ্রন্থে কিন্তু তা বর্ণিত হয়নি। সেগুলো পরবর্তীতে প্রমাণিত হয়েছে এবং পান্ডুয়াতে তার মাজার নেই বলে সেখানকার খাদেমগণই বর্ণনা করেন। সেখানে তার স্মৃতিসৌধ বিদ্যমান।
বংশ তালিকা :
হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু, ফাতেমা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু, ইমাম জয়নুল আবেদীন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু, ইমাম জায়েদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু, ইমাম আলী আসগর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু, ইমাম তাজ উদ্দিন তাইজী রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম সৈয়দ জাফর সাদিক রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম ইব্রাহীম কোরেশী রহমতুল্লাহি আলাইহি, জালাল উদ্দিন সুরুখ রহমতুল্লাহি আলাইহি, শায়েখ মুহাম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি, ফাতিমা হাসিনা সায়্যিদা রহমতুল্লাহি আলাইহি, শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি।
শিক্ষা :
শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহির পিতা-মাতা শৈশবেই ইন্তেকাল করেন। তখন তাঁর লালন-পালন ও শিক্ষা-দীক্ষার ভার গ্রহণ করেন তাঁর বুযুর্গ মামা সৈয়দ আহমদ কবির সোহরাওয়ার্দী। তিনি সোহরাওয়ার্দীয়া তরিকার একজন প্রখ্যাত সুফী দরবেশ এবং মক্কার বিশিষ্ট আলেম ছিলেন। শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহির শিক্ষা সম্পর্কে বিস্তারিত কোন বিবরণ পাওয়া যায়নি। তবে বিশ্বপর্যটক ইবনে বতুতার বর্ণনায় শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহিকে তাঁর মুরীদ কর্তৃক ‘মাওলানা’ সম্বোধন থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, তিনি বিদ্যা শিক্ষায় একজন প্রখ্যাত আলেম ছিলেন। এছাড়াও শায়খ আবু সাঈদ তিবরিজী, বাহাউদ্দিন সোহরাওয়ার্দী ও সপ্তম শতাব্দীর মুজাদ্দীদ খাজা মঈনুদ্দীন চিশতীর মতো জগত বিখ্যাত তরিকতের ইমাম-বুযুর্গ ও দরবেশ সাধকগণের শিষ্যত্ব ও সান্নিধ্য ছিলো তার। কুতুব উদ্দীন বখতিয়ার কাকী, ফরিদ উদ্দীন শকরগঞ্জী, নিজাম উদ্দীন আউলিয়া, হাদীস বিশারদ বাহাউদ্দীন যাকারিয়া মুলতানী, শেখ ফরিদ উদ্দীন আত্তার, বোরহান উদ্দীন সাগরজী রহমতুল্লাহি আলাইহির মতো যুগের দিকপাল মহান মনীষীগণের সাথে তাঁর গভীর বন্ধুত্ব থাকাটাও প্রমাণ করে যে, শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি আধ্যাত্মিক অতিন্দ্রীয় জ্ঞান তো বটেই, ইন্দ্রীয়গ্রাহ্য জ্ঞান, রাজ্যের বিভিন্ন শাখায় বুৎপত্তি সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব ছিলেন।
পীরগণ :
শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি শৈশব থেকে প্রায় ২২/২৩/৩০ বছর পর্যন্ত তার মামা সৈয়দ আহমদ কবির সোহরাওয়ার্দীর নিবিড় তত্ত্বাবধানে শরীয়ত ও মারফতের দীক্ষা গ্রহণ ও আধ্যাত্মিক সাধনা করেন। এরপর তিনি আবু সাঈদ তিবরিজীর নিকট মুরীদ হন এবং তাঁর সোহবতে প্রায় দুই বছর কাটান। এরপর শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি সোহরাওয়ার্দী তরিকার ইমাম শায়খ শিহাব উদ্দীন সোহরাওয়ার্দীর নিকট মুরীদ হন। এ সূত্রে শেখ সাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি হন তাঁর পীর ভাই বা সতীর্থ। শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি প্রায় ৭ বৎসর শিহাব উদ্দীন সোহরাওয়ার্দীর সান্নিধ্যে কাটান। তাঁর ইন্তেকালের পর শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি শিহাব উদ্দীন সোহরাওয়ার্দী রহমতুল্লাহির সুযোগ্য পুত্র শায়খ বাহাউদ্দিন সোহরাওয়ার্দীর নিকট মুরীদ হন এবং দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছর তাঁর খেদমতে ছিলেন।
শাজরা শরীফ :
হযরত মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু, হবিব আজমী, শেখ হায়দর আলী, শেখ মারুফ কারখী, শেখ সরিস খতি, মমসাদ দিনুরী, শেখ মুহাম্মদ, শেখ আহমদ দিনুরী, শেখ অজিহ উদ্দিন, আবু নছর জিয়া উদ্দিন, মখদুম বাহাউদ্দিন, আবুল ফজল সদর উদ্দিন, রোকনুদ্দিন আবু ফতাহ, জালাল উদ্দিন বোখারী, সৈয়দ আহমদ কবির, শাহজালাল ইয়ামনী রহমতুল্লাহি আলাইহি।


সিলেটের পথ ধরে বাংলায় আগমন :
বিভিন্ন জীবনীকারগণের বৃত্তান্ত থেকে জানা যায় যে, শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি বাংলাদেশের সিলেটে আগমনের পূর্বে একটি স্বপ্ন দেখেন। সেই স্বপ্নের বৃত্তান্ত পীর-মুর্শিদ ও মামা সৈয়দ আহমদ কবীর সোহরাওয়ার্দী এবং সংগীয় পীর বাহাউদ্দীন সোহরাওয়ার্দীর নিকট বর্ণনা করেন। স্বপ্নের বৃত্তান্ত শুনে তারা তাকে অবিলম্বে হিন্দুস্তান যাত্রার আদেশ দেন। স্বপ্নের ইঙ্গিত মতে মুর্শিদ একমুষ্ঠি মাটি তাঁর হাতে দিয়ে বলেন, এই মাটির বর্ণ, গন্ধ ও স্বাদ যেখানে পাবে, সেখানেই তুমি অবস্থান ঠিক করবে। তিনি আরো বললেন- এই মৃত্তিকা মুষ্ঠি যে স্থানে পরিত্যাগ করিবে, সে স্থানের মহত্ত্বের আর তুলনা থাকবেনা। পীরের নির্দেশের পর শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি বাংলাদেশে আসার আগে জন্মভূমি ইয়ামন গমন করেন। সেখানে পূর্বপুরুষ ও মাতা-পিতার মাজার জিয়ারত করেন এবং উলুহিয়াতের তত্ত্ব প্রচার করেন। তাঁর ব্যক্তিত্ব ও গুণে আকৃষ্ট হয়ে দলে দলে লোক তাঁর দিকে ধাবিত হয়। এতে ইয়ামনরাজ ঈর্ষান্বিত হয়ে শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহিকে বিষ মিশ্রিত শরবত দ্বারা কামালত পরীক্ষা করতে চাইলেন। শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি বিষ মিশ্রিত শরবত ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ বলে পান করলে, সে বিষের প্রতিক্রিয়ায় উল্টো ইয়ামন রাজই মৃত্যুবরণ করে। ইয়ামনের পরবর্তী রাজা শাহজাদা আলী পিতার মৃত্যু এবং শাহজালালের অলৌকিক ঘটনা দেখে তাঁর ভক্তে পরিণত হন এবং শাসকের তখতে (সিংহাসনে) না বসে শাহজালালের সাথী হতে চাইলেন, কিন্তু শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি তাকে রাজ্য পরিচালনার ভার দিয়ে ইয়ামন হতে যাত্রা করেন। ইয়ামন হতে শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি বাগদাদ আসেন। বাগদাদে বাহাউদ্দীন সোহরাওয়ার্দীর নিকট হতে পুনরায় বিদায় গ্রহণ করেন। সেখানে থেকে বিশ্বের প্রধান প্রধান জনপদে কিছুদিন করে অবস্থান করে সমরকন্দ, আফগানিস্তান হয়ে মুলতান উপস্থিত হন। মুলতান হতে শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি দিল্লীতে এসে উপস্থিত হন। ইয়ামনের শাহজাদা আলী সিংহাসন ছেড়ে এসময়ে তাঁর সাথে মিলিত হন। দিল্লীতে নিজাম উদ্দীন আউলিয়ার সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। এ প্রসঙ্গে একটি ঘটনা বর্ণিত রয়েছে-শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি দিল্লীতে অবস্থানকালে নিজাম উদ্দীন আউলিয়ার একজন শিষ্য জানালেন যে, আরব দেশ থেকে এক দরবেশ এসেছেন- তিনি নারী মুখ দর্শন করেননা। চাদর দিয়ে মুখ ঢেকে পথ চলেন এবং সবসময় একজন কম বয়সী সুদর্শন বালককে সঙ্গে রাখেন। নিজাম উদ্দীন আউলিয়া উৎসুক হয়ে একজন শিষ্যকে পাঠালেন দরবেশকে নিয়ে আসার জন্য। শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি অবস্থা বুঝতে পেরে প্রেরিত শিষ্যের হাতে একটি কৌটার মধ্যে তুলা দিয়ে তার উপরে একটি জ্বলন্ত অঙ্গার দিয়ে কৌটার মুখ বন্ধ করে ফেরত পাঠান। নিজাম উদ্দীন আউলিয়া কৌটার মুখ খুলে দেখলেন যে, তুলার উপর একটি জ্বলন্ত অঙ্গার, কিন্তু এতে তুলার একটি আশও জ্বলছেনা। নিজাম উদ্দীন আউলিয়া এ ঘটনা থেকে আগত দরবেশের কামালিয়াত ও ফজিলত বুঝতে পেরে নিজেই শাহজালালের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং শ্রদ্ধা ও প্রীতির নিদর্শনস্বরূপ একজোড়া কবুতর উপহার দেন। সেসময় থেকে আজও এ কবুতর ‘জালালী কবুতর’ নামে পরিচিত ও প্রসিদ্ধ। দিল্লি থেকে শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি মুর্শীদ প্রদত্ত মাটি সহকারে বাংলাদেশে আগমন করেন। খুলনা, রংপুর, সোনারগাঁসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় সফর করেন। এখানে প্রাসঙ্গিক একটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন। তা হলো-তিনি যখন ত্রিপুরা রাজ্যের বর্তমান কুমিল্লা সফর করছিলেন, তখন কুমিল্লার মাটির সাথে মুর্শীদ প্রদত্ত মাটির মিল পেয়ে তিনি বলেছিলেন কুহু মিলা। কিংবদন্তী মত অনুসারে কোনকোন ঐতিহাসিকদের মতে সেখান থেকে কুমিল্লা শব্দটির উৎপত্তি। কুমিল্লার যে স্থানটিতে একটি টিলার উপরে শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি কিছুদিন অবস্থান করে ধ্যানমগ্ন হয়ে আল্লাহর ইবাদত বন্দেগীতে নিমগ্ন ছিলেন, সেখানে তাঁর কর্তনকৃত চুল ও নখ প্রোথিত আছে। এখনো নয়নাভিরাম টিলার উপরে ঐ আস্তানাটি রয়েছে। আস্তানাকে কেন্দ্র করে একটি সমাধি, মসজিদ ও মাদ্রাসা গড়ে উঠেছে। বর্ণিত রয়েছে যে, এই আস্তানাটির নিকটবর্তী শাহপুর গ্রামে ভারতের ভাগলপুর হতে আগত প্রায় ২৫০ বছর পূর্বের প্রসিদ্ধ আউলিয়া শাহ নুর উদ্দীন আল-কাদরী প্রতি বৃহস্পতিবার শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি’র মাজার শরীফ জিয়ারতে সিলেট আসতেন, এরপর চট্টগ্রাম শাহ আমানত রহমতুল্লাহি আলাইহির দরগায় পদব্রজে সফর করতেন।
সিলেট বিজয় :
সুলতান শামস উদ্দীন ফিরোজ শাহর আমলে ৭০৩ হিজরীতে শাহজালাল ইয়ামনী রহমতুল্লাহি আলাইহি’র আধ্যাত্মিক শক্তির সাহায্যে সিলেট বিজয় করেন। বর্ণিত আছে যে, গৌড় গোবিন্দ রাজা কর্তৃক সৈয়দ বুরহান উদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহির শিশুপুত্র হত্যার প্রতিবিধানার্থে প্রেরিত সিকান্দার গাজীর বাহিনী রাজা গৌড় গোবিন্দের ঐন্দ্রজালিক ক্ষমতার কারণে বারবার পরাভূত হন। অবশেষে শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি ও তাঁর অনুসারী ৩৬০ আউলিয়া সহযোগে গৌড় গোবিন্দের ঐন্দ্রজালিক ক্ষমতাকে পরাভূত করে সিলেট বিজয় করেন।
ইবনে বতুতার দৃষ্টিতে শাহজালাল ও সিলেট :
শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর শেষ জীবন পর্যন্ত ধর্ম প্রচার করে গেছেন। তার ব্যবহার ও অন্যান্য গুণাবলী লক্ষ্য করে বহু হিন্দু এবং বৌদ্ধ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। বিশ্বের নামকরা পর্যটক মরক্কো তানজানিয়ার অধিবাসী শায়খ সরফ উদ্দিন আবু আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ ইবনে বতুতা ১৩৪৬ খ্রিস্টাব্দে সিলেট সফরে এসে শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি’র সাক্ষাৎ লাভ করেন। ইবনে বতুতা সিলেটকে কামরূপ রাজ্যের অন্তর্গত অঞ্চল বলে উল্লেখ করেন এবং সমুদ্র তীরবর্তী একটি গহীন বনভূমি বলেও বর্ণনা করেন। তার ভাষ্য অনুযায়ী শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি পাতলা গড়ন ও খুবই সুন্দর চেহারার অধিকারী এবং বেশ লম্বা ছিলেন। তিনি ছাগলের দুধ পান করতেন। সারা বছরই বলতে গেলে তিনি রোজা রাখতেন ও সারা রাত ইবাদতে মশগুল থাকতেন। ইবনে বতুতা ‘রিহালা ইবনে বতুতায়’ শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি’র সঙ্গে সাক্ষাতের বিভিন্ন বর্ণনা প্রদান করেন। মোগল কবি আমির খসরুর কবিতার বইয়েও শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি’র সিলেট বিজয়ের উল্লেখ আছে।
ইন্তেকাল :
শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি’র মৃত্যুবরণের সঠিক তারিখ নিয়ে মতভেদ আছে। তবে ইবনে বতুতার বর্ণনা অনুযায়ী তিনি ১৫০ বছর বয়সে ৭৪৭ হিজরি ১৩৪৭ সালে ওফাত গ্রহণ করেন বলে জানা যায়। তিনি সিলেটেই সমাহিত হন এবং তাঁর সমাধিস্থল সিলেট ‘দরগা মহল্লা’” নামে পরিচিত। তাঁর বাৎসরিক ওরস আরবী জিলকদ মাসের ১৮, ১৯, ২০ তারিখ পালিত হয়ে থাকে।

তথ্যসূত্র :
শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহির জীবনী, জালালাবাদের কথা, আল ইসলাহ।

Comments

comments

About

Check Also

রাসুলুল্লার হিজরাত : প্রাসঙ্গিক ভাবনা

পৃথিবীতে তখন ঘোর অমানিশার রাজ। চারিদিকে বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্যের দৃঢ় ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে। যে ভিন্নতার জন্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *