কারবালার মর্মযন্ত্রণা : ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

জান্নাতি যুবকদের ইমাম, নবী দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) শাহাদতের অদম্য আকাক্সক্ষা নিয়ে বলেন,
‘এসো হে তরবারী! নাও আমাকে
হাজারো শাহাদাত কবুল আমার
যদি মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.) এর ধর্ম টিকে থাকে।’
সৃষ্টির শুরু থেকে মুহররাম মাসে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংঘটিত হয়েছে এবং এ মাসের দশ তারিখ ‘আশুরা’ নামে খ্যাত। এ দিনটি ঐতিহাসিকভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রাচীনকালে আরবরা এ দিবসে কাবার দরজা দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত রাখত। বছর শেষে মহান ঐতিহাসিক দিবস ‘আশুরা’ আমাদের সামনে সমাগত। এ দিন মানবতাকে স্মরণ করিয়ে দেয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার কথা। এসব ঘটনার মধ্যে রয়েছে ইতিহাসের জোয়ার-ভাটা ও উত্থান-পতন। তবে স্মরণকালের মানব ইতিহাসের নির্মমতম হৃদয়বিদারক ঘটনাবলির অন্যতম ঘটনাটি হল কারবালার ঘটনা। এই দিনে ইরাকের ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে রাহমাতুললিল আলামিনের (সা.) প্রাণপ্রিয় দৌহিত্র, জান্নাতী রমণীদের সরদার ফাতেমা (রা.) ও চতুর্থ খলিফা হজরত আলীর (রা.)-এর দুলাল, ইমাম হোসাইন (রা.) সপরিবারে পাপাতœা ইয়াজিদের সেনাবাহিনীর হাতে শাহাদাতবরণ করেন। নিঃসন্দেহে কারবালার মর্ম বিদারী ঘটনা মানব ইতিহাসে অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ ও শিক্ষণীয়। এটা এমন এক বিস্ময়কর ঘটনা,যার সামনে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ চিন্তাবিদরা থমকে দাড়াতে বাধ্য হয়েছেন, এই নজিরবিহীন আত্মত্যাগে পরম বিস্ময় প্রকাশ করেছেন, অভিভূত হয়ে স্তুতি-বন্দনায় মুখরিত হয়েছেন।
কারণ,কারবালায় শাহাদত বরণকারী মহানায়করা ‘অপমান আমাদের সয়না’-এই মহান আদর্শ প্রতিষ্টিত করে ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য হাতে গোনা কয়েকজন খোদায়ী প্রেম ও প্রশান্ত টগবগে অন্তর নিয়ে জিহাদের ময়দানে শাহাদাতের জন্য আবির্ভূত হন এবং প্রতারণা ও প্রবঞ্চনার জগত পেছনে ফেলে উর্দ্ধজগতে মহান আল্লাহর সান্নিধ্যে পাড়ি জমান। তারা স্বীয় কথা ও কাজের দ্বারা জগতবাসীকে জানিয়ে দিয়ে যান যে,
‘মৃত্যু যদি সত্যের পথে হয়,
তা মধুর চেয়েও সুধাময়।’

কারবালার প্রেক্ষাপট
খোলাফায়ে রাশেদার পর কাতিবে ওহী হযরত মোয়াবিয়ার (রা.) হাতে যখন শাসন ভার গেল তখনই প্রাচীন আরবের গোত্রীয় চিন্তার পুনরাবৃত্তি ঘটল। তাকওয়ার স্থলে বংশীয় প্রভাব, পরিচিতি আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠল। ইসলামের সেবায় কোন গোএ কিভাবে কতটুকু অবদান রেখেছে এবং তার বিনিময় কে কতটুকু প্রতিদান পেয়েছে সেই নথিপত্র তাদের মনের মধ্যে তোলপাড় শুরু করে দিল। শেরে খোদা হযরত আলী (রা.)-এর পুত্র ইমাম হাসান (রা.) কে খেলাফতের দায়িত্ব দেওয়া হল। কিন্তু সিরিয়ার গভর্নর হযরত আমিরে মোয়াবিয়ার (রা.) সমর্থকদের অর্থাৎ উমাইয়্যাদের সাথে বাধ সাধলো। নবী দৌহিত্র হযরত ইমাম হাসান (রা.) ছিলেন শান্তিপ্রিয় প্রজ্ঞা সম্পন্ন ব্যক্তি তাই প্রবীণ সাহাবি হযরত আমিরে মোয়াবিয়া (রা.)-এর সাথে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে লিপ্ত হতে চাইলেন না। ইমাম হাসান (রা.) শান্তির লক্ষ্যে মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের স্বার্থে হযরত আমির মোয়াবিয়ার (রা.) সাথে একটি শান্তিচুক্তি করে খিলাফতের দায়িত্ব তাকে অর্পিত করলেন। শাসক হিসাবে হযরত আমির মোয়াবিয়া (রা.) এর কৃতিত্ব সকল ঐতিহাসিক সমানভাবে প্রশংসা করেছেন। তিনি আরবদের সেরা রাজা তাও বলা হয়েছে। তার সময়ে মুসলিম জাহানের সীমানা বর্ধিত হয়েছে। ইউরোপে মুসলিম বাহিনী অবতরণ করে কনষ্টান্টিনোপলে আঘাত হেনেছে। লোহিত সাগর ও ভুমধ্যসাগরে মুসলিম প্রাধান্য বিস্তার ঘটেছে। প্রশাসনে অনেক সংস্কার হয়েছে। হযরত আমির মোয়াবিয়ার (রা.) মৃত্যুর পূর্বেই ঘোষিত হল পরবর্তী খলিফা মনোনয়ন। তার পুত্র ইয়াজিদ কে ক্ষমতায় বসানো হলো। ইয়াজিদ সাহসী যোদ্ধা ও কবি হলেও তার চারিত্রিক কিছু ত্রুটি ছিল। ক্ষমতা গ্রহণের পর পরই ইয়াজিদ ইসলামের সনাতন সংস্কৃতিকে বদলে দিয়ে বাদশাহী কায়দায় সব ধরণের অন্যায় ও অপকর্ম চালিয়ে যেতে থাকে। এ অবস্থায়ই সে নিজেকে মুসলমানদের খলিফা ঘোষণা করে ও ঈমানদারদের বাইআত দাবি করে। ইয়াজিদ তার পথকে নিষ্কণ্টক করার জন্য লোভ ও হুমকি প্রদান করে একে একে মক্কা ও মদীনার রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের পদানত করে সর্বশেষে ইমাম হোসাইনের দিকে হাত বাড়ায়। কিন্তু ইমাম হোসাইন (রা.)-এর মতো হক্বপন্থী একজন মহান ব্যক্তি কোন অবস্থাতেই ইয়াজিদের মতো একজন মানুষের কর্তৃত্ব স্বীকার করে নেননি। মহানবী (সা.)-এর সুযোগ্য উত্তরাধিকারী হোসাইন (রা.) তাঁর ইমামতের প্রজ্ঞায় সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট এক কালজয়ী পথ রচনা করেন। ন্যায়ের ধারক ইমাম হোসাইন (রা.) ও অন্যায়ের ধারক ইয়াজিদ, এ দু’য়ের কারও পথ ও কর্মকৌশলে লক্ষ্যহীন ও অপরিকল্পিত ছিল না। জান্নাতের যুবকদের সর্দার ইমাম হোসাইনের প্রতিপক্ষ ইয়াজিদ শুধু শক্তিশালিই ছিল না; বরং উত্তরাধীকার সূত্রে তার পক্ষে ছিল বণি উমাইয়াদের কূটকৌশল, বুদ্ধিমত্তা ও সমগ্র অপকৌশলের এক সমন্বিত অস্ত্রমালা। তার সেসকল অস্ত্রের কোনটিই সে প্রয়োগ করতে বাদ রাখনি। অপরপক্ষে ইমাম হোসাইন মুসলিম উম্মাহর পথপ্রদর্শক হিসেবে তাঁর হেদায়েত প্রদানের কর্মসূচি ‘সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ’ অব্যাহত রাখেন। ইয়াজিদ চক্র তাঁর নানা নবী মুহাম্মদুর রাসুলাল্লাহ (সা.)-এর দ্বীনের মাঝে যে বিকৃতি সাধনের চেষ্টা চালাচ্ছে তা জনসমক্ষে একে একে তুলে ধরতে বিন্দুমাত্র কুণ্ঠাবোধ করেননি। এক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও লক্ষণীয় বিষয় হল ইমামের কর্মকৌশল। তিনি তাঁর কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে ও শত্রুকে ফাঁদ পাতার সুযোগ না দিতে সবরকম চেষ্টা চালান। তাঁর লক্ষ্যমাত্রা ছিল প্রতিশ্রুত শাহাদাতের পূর্বেই গোটা মুসলিম জাতির সর্বাধিক সংখ্যক জনপদের মানুষকে ন্যায়-অন্যায়ের বিষয়টি পরিষ্কার করে যাবেন। ইয়াজিদ মদীনার গভর্নর ওয়ালিদকে হুকুম দিল ইমাম হোসাইন (রা.) কে আটক করে দামেস্কে ইয়াজিদের দরবারে পাঠিয়ে দিতে এবং বাইআত হতে বাধ্য করতে। আর তারপরই গোটা মুসলমান জাতির মাঝে প্রচার করা হবে যে, মহানবীর দৌহিত্র হোসাইনও ইয়াজিদকে খলিফা হিসেবে মেনে নিয়েছেন। যথারীতি ওয়ালিদ যখন ইমাম হোসাইন (রা.) কে তার দরবারে আহ্বান করল ইমাম তখন ৩০ জন সশস্ত্র যুবককে সাথে নিয়ে ওয়ালিদের দরবারে গিয়ে ইয়াজিদের কাছে বাইআত না হওয়া সংক্রান্ত কথাগুলো বলেন এবং ওয়ালিদ কর্তৃক তাঁকে গ্রেপ্তারের কোন সুযোগ না দিয়ে মসজিদে নববীতে ফিরে আসেন। আবার একইভাবে সেই রাতে মদীনায় অবস্থান না করে ৬০ হিজরির ২৭ রজব মক্কা মুকাররামার দিকে রওয়ানা করেন। আর ইমাম হোসাইন (রা.) যে মক্কা মুকাররমায় চলে যাবেন তাও আগাম ঘোষণা দেননি। মক্কা মুকাররামায় তখন হজ্বের প্রস্তুতি চলছে। মুসলিম উম্মাহর সকল জনপদ থেকে লোকেরা যখন মক্কা মুকাররমায় আসল তখন এই বৃহত্তর পরিসরে ইমাম হোসাইন (রা.) তাঁর কথাগুলো তুলে ধরলেন। পাপিষ্ঠ স্বৈরাচারী ইয়াজিদের ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড ও জাতিকে ধীরে ধীরে জাহেলী যুগে ফিরিয়ে নেয়ার আলামত তুলে ধরলেন। তিনি বললেন, ‘তোমরা কি দেখতে পাচ্ছ না যে, সত্যকে অনুসরণ করা হচ্ছে না। তোমরা কি দেখতে পাও না যে, চারদিক ফেতনা-ফ্যাসাদে ছেয়ে গেছে, অথচ কেউ এর প্রতিবাদ করছো না? হে লোকসকল! এই পরিস্থিতিতে আমি মৃত্যুবরণকে কল্যাণ ও মর্যাদাকর ছাড়া আর কিছুই মনে করি না।’ ইয়াযিদের বিরুদ্ধে এই সব কার্যক্রমকে কারবালার মর্মান্তিক ঘটনার পটভূমি হিসাবে ইতিহাসবিদগণ চিহ্নিত করে থাকেন।

ইমাম হোসাইন (রা.)-এর শাহাদত এবং শেষ বক্তব্য
৬১ হিজরির ১০ মহররম কারবালার মাঠে নবী পরিবারের সবাই যখন শাহাদাত বরণ করছেন এবং ইমাম হোসাইন (রা.) কেবল একা দাঁড়িয়ে ছিলেন, তখন তাঁর পরিবার পরিজন এবং প্রতিপক্ষের সামনে গুরুত্বপূর্ণ এক বক্তব্য পেশ করেন, যা সত্যের পথে অনাগত ভবিষ্যতের হক্ব পন্থিদের জন্য একটি আদর্শ হয়ে থাকবে। তিনি জালিমদের উদ্দেশ্যে বলেন :
(ক) ‘তোমরা কেন আমাকে হত্যা করতে চাও? আমি কি কোন পাপ অথবা অপরাধ করেছি?’ এজিদের সৈন্য বাহিনী নির্বাক দাঁড়িয়ে রইল।
(খ) পুনরায় ইমাম হোসাইন (রা.) বললেন, ‘আমাকে হত্যা করলে আল্লাহর কাছে কি জবাব দেবে? কি জবাব দেবে বিচার দিবসে মহানবী (সা.) এর কাছে?’ এজিদের সৈন্য বাহিনী দাঁড়িয়ে আছে।
(গ) আবার ইমাম হোসাইন (রা.) বললেন, ‘আমাদের সাহায্য করার মত কি তোমাদের মাঝে একজনও নাই?’’
(ঘ) তারপরের আহ্বানটি সাংঘাতিক মারাত্বক! ঐতিহাসিকদের মতে এটাই ইমাম হোসাইন (রা.)-র শেষ আহ্বান। তিনি বলেন ‘আমার কথা কি শুনতে পাও না? তোমাদের মাঝে কি একটি মুসলমানও নাই?’
এই অপদার্থের দল ইমাম হোসাইন (রা.)-এর কোন বক্তব্যের জবাব দিতে পারলো না। কারবালা নিরব-নিস্তব্ধ হয়ে গেল।
(ঙ) এবার যারা ইমাম হোসাইন (রা.) কে চিঠি লিখে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল তাদের কয়েকজনের নাম ধরে জিজ্ঞেস করতে লাগলেন: হে হাবস ইবনে রাবয়ী! হে হাযর ইবনে আবযার! হে কায়েস বিন আশআস! হে ইয়াযিদ ইবনে হারেস! হে যায়েদ ইবনে হারেস! হে আমর ইবনে হাজ্জাজ! তোমরা কি চিঠি লিখে আমাকে আমন্ত্রণ জানাও নি? তোমরা কি আমাকে কুফায় আসার জন্য বার বার চিঠি লিখে অনুরোধ করো নি? তোমরা কি চিঠিপত্র ও দূত পাঠিয়ে বলো নি যে, আমাদের কোন ইমাম নেই, আপনি আমাদের মাঝে তাশরীফ আনুন এবং আপনার মাধ্যমেই আল্লাহ তায়ালা হয়তো আমাদের সঠিক নির্দেশনা দিবেন। তোমরা এও লিখেছিলে যে, যাদের অধিকার না থাকা সত্ত্বেও ক্ষমতা দাবী করে ও অন্যায় আচরণ করে, তাদের চাইতে ইসলামী শাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে আহলে বাইতই অধিকযোগ্য (বেশি হকদ্বার)।
ইবনে সা’দের সৈন্যবাহিনী এবারও নিরব নিথর। হঠাৎ নির্দিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বলে উঠল- না! না! আমরা কোন চিঠিপত্র লিখিনি। মিথ্যা সবই মিথ্যা কথা। আমরা এ সম্পর্কে কিছুই জানি না।
পুনরায় ইমাম হোসাইন বললেন- ছি! ছি (ধিক)! তোমাদের। বড়ই অনুতাপ ও পরিতাপের বিষয়। এই চেয়ে দেখো তোমাদের চিঠি। এই তোমাদের স্বাক্ষরযুক্ত আবেদনপত্র। খোদার কসম! এগুলো তোমরাই লিখেছো এবং লোক মারফত আমার নিকট প্রেরণ করেছো।
ঐ বেহায়া লম্পট মিথ্যুকের দল বলল- যদি লিখে থাকি তাহলে মন্দ কাজ করেছি। আমরা আমাদের কাজের প্রতি অসন্তুষ্ট।
ইমাম হোসাইন (রা.) বললেন- এখন আমার আগমন যদি তোমাদের মনঃপূত না হয়, তোমরা যদি আমাকে না চাও, তাহলে আমাকে ফিরে যেতে দাও। আমি যেখান থেকে এসেছি সেখানেই ফিরে যাব। তোমাদের সাথে আমার কোন বিরোধ ও বিদ্বেষ নাই।
ইমাম হোসাইন (রা.)-এর শেষ ভাষনটি কয়েকটি মাত্র বাক্য। তবে এর ব্যাখ্যা যদি দেখাতে চাই তাহলে তা হবে খুবই বেদনা দায়ক। ইমাম হোসাইন (রা.) আসল এবং নকলের ভাগটা পরিস্কার করে দেখিয়ে গেলেন। এজিদের সৈন্য বাহিনীতে একজন হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান অথবা অন্য কোন ধর্মের কেউ ছিল না! সবাই ছিল মুসলমান। ইমাম হোসাইন (রা.) কি সাংঘাতিক এবং ভয়ংকর প্রশ্নটাইনা তাদের জিজ্ঞেস করলেন -‘তোমাদের মাঝে কি একটি মুসলমানও নাই?’ অথচ, এজিদের সৈন্যবাহিনীর সবাই মুসলমান, তবে সত্যিকার মুসলমান ছিল না বলেই ইমাম হোসাইন (রা.) এই আহ্বান জানিয়ে পৃথিবীকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দিয়ে গেলেন যে, যারা দাঁড়িয়ে আছে তারা সবাই নামদারি নকল মুসলমান। এই রকম মুনাফিক মুসলমান যুগে যুগে আসবে, থাকবে এবং হক্বপন্থী মুসলমানদের ক্ষতি সাধন করবে।

উপসংহার
ইমাম হুসাইন (রা.) জালিমদের হাতে শাহাদত বরণ করেছেন ঠিকই, তবে অন্যায়-অবিচার ও স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রেরণা ছড়িয়ে গেছেন বিশ্বময়। যা অত্যাচারিত, নিষ্পেষিত, মানবতাকে সব ধরণের জুলুম, নির্যাতন ও স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর প্রেরণা জোগাবে কিয়ামত পর্যন্ত। অশান্তময় বিশ্বে এই শিক্ষা আমরা যদি নিজ নিজ অবস্থানে ধারণ করি এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারি তাহলে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবে শান্তি, বন্ধ হবে মানুষ হত্যার রাজনীতি। তাই আসুন, আমরা সবাই হেসাইনি চেতনাকে অবলম্বন করে সত্য-সুন্দর জীবনাচারে ব্রতী হই এবং তার মহান শিক্ষাকে গ্রহণ করি কায়মনোবাক্যে।

তথ্যসুত্র
(১) ইবনে কাসির; (২) ত্বাবারী; (৩) হাসান ও হুসাইনের কারবালার কাহিনী ও এজিদ বধ; (৪) দুই ইমাম দুই ফুল; (৫) শামে কারবালা; (৬) আহলে বাইত ও কারবালা; (৭) খারযামী

Comments

comments

About

Check Also

স্পেনে ইসলাম ও মুসলমান

স্পেন তিনদিকে সমুদ্র দ্বারা বেষ্টিতে। পূর্ব দিকে ভূমধ্যসাগর, দক্ষিণে জিব্রাল্টার প্রণালী ও পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগর। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *