হলদে রঙের বুলবুলি

নিজের বাচ্চা দুটির জন্য খাবার সংগ্রহ করতে হবে। তাই নিজের বাসায় অর্থাৎ শিমুল গাছের ডালে বাচ্চা দুটিকে রেখে বেরিয়ে পড়ল হলদে রঙের বুলবুলি পাখিটি। এ গাছের ডাল থেকে ও গাছের ডালে এবন থেকে ওবনে খাদ্য সংগ্রহ করতে ব্যস্ত বুলবুলি। খাদ্যের খুঁজ করতে করতে পেরিয়ে গেছে দুই তিন গ্রাম। ক্রমে ক্রমে সকাল, দুপুর পেরিয়ে চলে এসেছে বিকেল। আকাশে ঘন কালো মেঘ। ধীরে ধীরে সমীরের বেগ বাড়ছেই। এখন শুরু হলো বিজলী এবং এর সাথে জোড়ালো ধ্বনির বজ্রপাত। কালবৈশাখী ঝড়ের সম্ভাবনা প্রায়ই।
হলদে রঙের বুলবুলি পাখিটি চিন্তায় পড়ে গেল। আর মনে মনে প্রস্তুতি নিচ্ছে বাসায় ফিরে যাওয়ার। প্রস্তুতি নিতে না নিতেই শুরু হলো তুমুল ঝড়। ঝড়টা ক্রমে ক্রমে কালবৈশাখীতে পরিণত হলো। এদিকে বাচ্চা দুটির টানে বুলবুলি তুফানের মধ্যে ছুটল বাসার উদ্দেশ্যে। কিছুটা পথ যাওয়ার পরে ক্লান্ত হয়ে গেল বুলবুলি। বিশ্রাম নিতে গিয়ে বসল একটি গাছের ডালে। কিছু সময় যেতে না যেতেই ঝড়ের বেগে গাছের ডাল ভেঙে পড়ল বুলবুলির ঠিক সামনে। সে খুব ভয় পেল। আকাশের দিকে তাকাতেই সে দেখতে পেল এক ঝাঁক পাখির দল উড়ে যাচ্ছে। বুলবুলি উড়াল দিল এবং পাখির দলটির সাথে যোগ দিল। সে তার মনে সাহস ফিরে পেল। এক পর্যায়ে সে তার বাসার কাছে গিয়ে পৌঁছল। হলদে রঙের বুলবুলি পাখিটির চোখ দিয়ে অঝোরে অশ্র“ ঝরতে লাগল। কোথায় সেই শিমুল গাছ? আর কোথায় সেই ছোট্ট বাসা? বুলবুলি একটু দূরেই তাকিয়ে দেখে সবুজ ঘাসের উপর তার দুটি বাচ্চা ঘুমিয়ে আছে। সে কাছে গিয়ে অবুঝ মনে বাচ্চা দুটিকে ডাকতে লাগল। বাচ্চারা তো আর শুনছে না, পায়ের উপর ভর করে, উঠছে না। আর উঠবেই বা কি করে? তারা তো চিরদিনের জন্য ঘুমিয়ে গেছে।

Comments

comments

About

Check Also

বিদায়বেলা

জামুরাইল হাই স্কুলের বাংলা শিক্ষক ইমরান হোসেন। প্রতিদিন সকাল ৯ টায় স্কুলে আসেন। যথারীতি তিনি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *