নির্বাচিত সূরা আল-মাঊন
১. তুমি কি তাকে দেখেছ, যে শেষ বিচারের কর্মফলকে অস্বীকার করে?
২. সে তো অই ব্যক্তি, যে ইয়াতীমকে রূঢ়ভাবে তাড়িয়ে দেয়।
৩. সে ব্যক্তি অভাবগ্রস্তকে খাদ্য দিতে উৎসাহ যোগায় না।
৪. অনন্তর দুর্ভোগ বা ধ্বংস সেই নামাযীদের জন্য,
৫. যারা তাদের সালাতের ব্যাপারে উদাসীন,
৬. যারা তা আদায় করে লোকদেরকে দেখানোর জন্য,
৭. আর তারা গৃহস্থালীর ছোটখাট জিনিস দিয়ে সাহায্য করা থেকে বিরত থাকে।
Ñআল-কুরআন, সূরা মাঊন, সূরা নং ১০৭, আয়াত সংখ্যা ৭।
আয়াতের ব্যাখ্যা ও শিক্ষা
১. আখিরাত বা চূড়ান্ত বিচার ও কর্মফল দিবস-এর অস্তিত্ব অবশ্যম্ভবী।
২. আখিরাতে বিশ্বাস না করে মু’মিন হওয়ার উপায় নেই; এর অবিশ্বাস ব্যক্তিকে কাফির-এর স্তরে নামিয়ে দেয়। -আয়াত ১
৩. আখিরাতে অবিশ্বাস থেকে নানা অপরাধ জন্ম নিতে পারে, নিয়ে থাকে। -আয়াত ১-৩
৪. সূরার শানে নুযূল থেকে জানা যায়, মহানবী (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দুশমন চাচা আবু জাহেল ছিলেন এমন
একজন অবিশ্বাসী বা আখিরাতের অস্তিত্ব অস্বীকারকারী।
৫. ইয়াতীম-এর প্রতি সদয় না হওয়াটা ঈমানবিরোধী আচরণ। -আয়াত ২
৬. অভাবী, নিরন্নকে অন্ন দিয়ে ঈমানী দায়িত্ব পালন করতে হবে।
৭. অভাবীকে যাতে অন্যরাও সাহায্য করে সে ব্যাপারে উৎসাহ দেয়া, অভাবীর পক্ষে সুপারিশ করা অন্যতম মহৎ কাজ। -আয়াত ৩
৮. আল্লাহর কাছে কার্পণ্য কোন গ্রহণযোগ্য চরিত্র নয়। নবীজীর (স.)-এর ভাষায়, বখীল জান্নাতে প্রবেশ করবে না।
৯. সালাতের ওয়াক্ত, গুণগত মান, সালাতের অভ্যন্তরীণ নিষ্ঠা ও একাগ্রতা ইত্যাদির ব্যাপারে উদাসীনতা দুর্ভোগ ও ধ্বংসেরই লক্ষণ। -আয়াত ৫
১০. লোকদেখানো সালাত কিংবা প্রদর্শনীমূলক যে কোন ইবাদাত আল্লাহর সন্তুষ্টির কারণ না হয়ে তাঁর অসন্তুষ্টি এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির দুর্ভাগ্য ও ধ্বংসের কারণ হবে। -আয়াত ৬
১১. বিষয়টি নবীজীর (স.) সেই হাদীছকেই স্মরণ করিয়ে দেয়, যেখানে বলা হয়েছে- আমলকারীরা সবাই ধ্বংস হয়ে যাবে মুখলিস (ইবাদাতে একনিষ্ঠ) ব্যক্তিরা ছাড়া।
১২. জরুরি মুহূর্তে গৃহস্থালীর ছোটখাট জিনিস, যেমন- বালতি, পাতিল, গামলা, লবণ, পানি ইত্যাদি জিনিস দিয়ে প্রতিবেশীকে সহায়তা করতে কার্পণ্য করাটা আল্লাহর কাছে অবশ্যই নিন্দনীয়। -আয়াত-৭