শাফীর বয়স বারো পেরুলো। ৮ম শ্রেণিতে পড়ে। বাবা ওকে সব সময় আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আক্বিদা অনুসারে সঠিক পথ এবং মত বুঝিয়ে দেন। আজ ১০-ই মহররম, ‘কারবালা’ দিবস। শাফী তার বাবার সাথে এমনিতেই ঘুরতে বেরুলো। পথিমধ্যে শাফী দেখতে পেল কিছু লোক কেমন জঘন্যরকম ভাবে নিজের পিঠে নিজেই ছুরিকাঘাত করছে আর ‘হায় হুসাইন’ বলে উচ্চস্বরে ক্রন্দন করছে। দৃশ্যটা অনেকটাই ঘোলাটে এবং পাগলামির মতো দেখাচ্ছে! শাফী খুব আশ্চর্য হয়ে গলা শুকানো কণ্ঠে বাবার কাছে জানতে চাইল ঐ লোকগুলো কেন এমন কাজ করছে!! বাবা ঐ লোকগুলোর চরম নিন্দা করে শাফীকে বুঝিয়ে বললেন, ওরা শিয়া মতবাদী লোক। ওদের আক্বিদা চরমভাবে ঘৃণ্য এবং আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের সাথে অত্যন্ত বৈপরিত্ব রাখে। কারবালার দিবসে শিয়া মতবাদী কিছু লোক এই রকম উদ্ভট, বেমানান, ঘৃণ্য কার্যকলাপ করে থাকে। শাফীর বাবা আরো বললেন, কোনো কোনো বাড়িতে এই দিবসকে কেন্দ্র করে ‘জারিপিটা’ নামক এক ধরনের কার্যকলাপ করা হয়। যার স্থায়িত্ব সপ্তাহ পর্যন্ত হয়ে থাকে। মহিলারা এবং পুরুষেরা একরকম জারিগানের মাধ্যমে এমন অশালীন ‘জারিপিটা’ পালন করে থাকে। যার কারবালার মূল শিক্ষার সাথে সাংঘর্ষিক! শাফী জিজ্ঞেস করলো, বাবা, কারবালায় কাদের মধ্যে যুদ্ধ হয়েছিল?
বাবা তখন ইমাম হোসেন, মহাবীর কাশেম সহ অন্যান্যদের কাহিনী বললেন। বললেন, এই যুদ্ধ ছিল কাফির এবং মুসলমানদের মধ্যে। মুসলমানরা নিজের জীবন দিয়েছেন কিন্তু কাফির এজিদ বাহিনীর কাছে মাথা নত করেন নি। আর কারবালার মূল শিক্ষা হলো এটাই যে, মুসলমানদের শির চির উন্নত রেখে ত্যাগ স্বীকার করতে পারা। তাই তো কবি নজরুল লিখেছেন,
‘ফিরে এলো আজ সেই মোহররম মাহিনা
ত্যাগ চাই, মর্সিয়া- ক্রন্দন চাহি না!’
Check Also
বিদায়বেলা
জামুরাইল হাই স্কুলের বাংলা শিক্ষক ইমরান হোসেন। প্রতিদিন সকাল ৯ টায় স্কুলে আসেন। যথারীতি তিনি …